দিল্লি, 22 অগাস্ট : পি চিদম্বরমকে 26 অগাস্ট পর্যন্ত CBI হেপাজতের নির্দেশ দিল আদালত । তবে প্রতিদিন 30 মিনিটের জন্য চিদম্বরমের সঙ্গে দেখা করতে পারবেন তাঁর আইনজীবী ও পরিবারের সদস্যরা ৷ 26 অগাস্ট ফের তাঁকে আদালতে পেশ করবে CBI ৷
গতরাতে গ্রেপ্তারের পর আজ প্রাক্তন অর্থ ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে আজই বিশেষ CBI আদালতে তোলা হয় । CBI-র হয়ে লড়ছেন সলিসিটর জেনেরাল তুষার মেহতা । চিদম্বরমের হয়ে লড়েন কপিল সিব্বল ও অভিষেক মনু সিংভি ।
তিনি বলেন, "নীরবতার অধিকার সাংবিধানিক অধিকার । তাতে আমাদের কোনও সমস্যা নেই । তবে তিনি (চিদম্বরম) তদন্তে অসহযোগিতা করেছেন । তিনি প্রশ্নোর জবাব দেননি ।" সলিসিটর জেনেরাল আরও জানান যে CBI-র আবেদনের পর পি চিদম্বরমের নামে জামিন অযোগ্য গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছিল এবং সেই ভিত্তিতেই তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে । তিনি আরও বলেন, "এটি অর্থ পাচারের একটি দৃষ্টান্তমূলক মামলা । আমরা প্রি চার্জশিট পর্যায়ে রয়েছি । ওনা কাছে তথ্য আছে অথচ উনি অসহযোগিতা করেছেন ।"
পালটা চিদম্বরমের পক্ষে দাঁড়ানো কপিল সিব্বল বলেন, "এই মামলার আসামি হলেন কার্তি চিদাম্বরম । যাকে 2018 সালের মার্চে দিল্লি হাইকোর্ট জামিন মঞ্জুর করে । সুপ্রিম কোর্টও এই নির্দেশে হস্তক্ষেপ করেনি । অন্য আসামিরাও জামিন পেয়েছে । জামিন পায়নি পিটার মুখোপাধ্যায় ও ইন্দ্রাণী মুখোপাধ্যায় ।" কপিল সিব্বল আরও বলেন, "খসড়া চার্জশিট প্রস্তুত হওয়ায় তদন্ত শেষ হয়েছে । অনুমোদন চাওয়া হয়েছিল । ফরেন ইনভেস্টমেন্ট প্রোমোশন বোর্ডের অনুমোদন দিয়েছিলেন 6জন কেন্দ্রীয় সচিব । এবিষয়ে প্রামাণ্য নথি রয়েছে । অথচ কেউ গ্রেপ্তার হয়নি । চিদাম্বরম কখনও জেরা এড়িয়ে যাননি ।" তিনি বলেন, "গতরাতে CBI জানিয়েছিল যে তারা চিদাম্বরমকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চেয়েছিল । আজ বেলা বারোটা পর্যন্ত তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করেনি এবং পরে তাঁকে কেবল 12টি প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করেছে । সেই প্রশ্নগুলির সঙ্গে চিদম্বরমের কোনও সম্পর্ক নেই । এখনই CBI-কে জানাতে হবে তারা কোন প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করতে চাইছে ।"
আদালতে করা সওয়ালে খানিকটা ঘুরিয়ে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কথা তুলে ধরেন । বলেন, এটি এমন একটি মামলা যার সঙ্গে প্রমাণের যোগ নেই । তবে অন্য কোনও কিছুর যোগ আছে । যদি কোনও বিচারক রায় দেওয়ার জন্য সাত মাস সময় নিয়ে থাকেন (চিদম্বরমের আগাম জামিন প্রত্যাখ্যান করে দিল্লি হাইকোর্টের রায়) । তাহলে কি রক্ষাকবচ চিদাম্বরম পেয়েছিলেন?" চিদম্বরমের হয়ে দাঁড়ানো আরেক আইনজীবী অভিষেক মনু সিংভি বলেন, "CBI-র করা গোটা মামলাটি ইন্দ্রাণী মুখোপাধ্যায়ের কাছে থাকা তথ্য-প্রমাণ এবং একটি কেস ডায়েরির ভিত্তিতে ।" সওয়ালে তিনি বলেন, "যদি তদন্তকারী সংস্থা আমাকে পাঁচবার ফোন করে এবং আমি না যাই, তবে অসহযোগিতা করছি বলা যাবে । তারা যে উত্তর চাইছে তা না দেওয়া হলে তা অসহযোগিতা? CBI পি চিদম্বরমকে একবার ডেকেছিল এবং তিনি যান । তাহলে অসহযোগিতা কোথায়?
এরপর পি চিদম্বরম আদালতে কিছু বলতে চান বলে জানান । যদিও তার বিরোধিতা করেন তুষার মেহতা । পালটা অভিষেক মনু সিংভি বলেন, দিল্লির হাইকোর্টের রায় রয়েছে এনিয়ে । তাতে বলা হয়েছে যে অভিযুক্ত তার পক্ষে কিছু বলতে পারে । পালটা সলিসিটর জেনেরাল তুষার মেহতা বলেন, পি চিদাম্বরম অত্যন্ত বুদ্ধিমান হওয়ার কারণে তদন্তে সহযোগিতা না করার প্রচুর সম্ভাবনা রয়েছে । তিনি আরও বলেন, চিদম্বরমের ছেলে কার্তিকেও হেপাজতে রেখে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল । তুষার মেহতা বলেন, "জিজ্ঞাসাবাদ করার অধিকার আমাদের রয়েছে । আর CRPC-র অধীনে দেশের প্রতি এটা আমার কর্তব্য । আমরা অভিযুক্তদের আরও জিজ্ঞাসাবাদ করতে কেবল আদালতের অনুমতি চাইছি ।"
এরপর চিদম্বরম আদালতকে বলেন, "দয়া করে প্রশ্নোত্তরগুলি দেখুন । এখানে কোনও প্রশ্ন নেই যার উত্তর আমি দিইনি । দয়া করে প্রতিলিপিটি পড়ুন । তারা জিজ্ঞাসা করেছিল, বিদেশে আমার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট আছে কি না । উত্তরে বলেছি না । তারা আমার ছেলের বিদেশে অ্যাকাউন্ট আছে কি না জিজ্ঞাসা করেছিল । উত্তরে আমি হ্যাঁ বলেছি ।"