ETV Bharat / bharat

স্তন্যপান শিশুদের অসুখ-বিসুখ থেকে বাঁচায় - শিশুদের স্তন্যপানের উপকারিতা

জেনে নিন কেন মাতৃদুগ্ধ শিশুদের জন্য অতি গুরুত্বপূর্ণ ৷

Breastfeeding protects babies from illnesses
স্তন্যপান শিশুদের অসুখ-বিসুখ থেকে বাঁচায়
author img

By

Published : Aug 1, 2020, 6:42 PM IST

প্রতি সপ্তাহে 1 থেকে 8 অগাস্ট বিশ্ব স্তন্যপান সপ্তাহ পালন করা হয় । 2020-র থিম হল, " সুস্থতর পৃথিবীর জন্য স্তন্যপানকে সমর্থন করুন ৷ " মাতৃদুগ্ধই সবথেকে স্বাস্থ্যকর খাবার, যা একটি শিশুকে আমরা দিতে পারি । শিশুদের জন্য একে অমৃত বলা হয়, যার বহু উপকার রয়েছে । ETV ভারত সুখীভব এনিয়ে কথা বলেছিল বিশিষ্ট স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ, গাইনিকোলোজির অধ্যাপক, মুম্বইয়ের কামা এবং অলব্লেস হাসপাতালের প্রাক্তণ সুপার, ড. রাজশ্রী কাটকের সঙ্গে ।

স্তন্যপানের উপকারিতা কী কী?

  • মায়ের দুধ হল শিশুর জন্য সম্পূর্ণ আহার । এটা অনেকটা অমৃতের মতই, কারণ এতে থাকে ইমিউনোগ্লোবিউলিন, যা রেসপিরেটরি সংক্রমণের মতো বিভিন্ন রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করে, ফলে নিউমোনিয়া এবং সংক্রমণের জেরে মৃত্যুর ঘটনা কম হয় ।
  • মায়ের দুধ সম্পূর্ণ আহার ৷ কারণ এতে রয়েছে জল, কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন ও সহজপাচ্য ফ্যাট । এতে মিনারেল, ক্যালসিয়াম আর আয়রনও রয়েছে, যা শিশুর ভালভাবে বেড়ে উঠতে সাহায্য করে ।

শিশুর জন্য কী কী উপকার?

  • মায়ের সঙ্গে আবেগের বন্ধন জোরালো হয়, শিশুদের বোধ গভীর হয় ।
  • যে শিশুরা স্তন্যপান করা, তাদের IQ জোরালো হয়।
  • বাইরের ফর্মুলা দুধের তুলনায় মায়ের দুধ খেলে শিশুর ওজন ঠিকমতো বাড়ে।
  • স্তন্যপান করা শিশুরা সাধারণত কোষ্ঠকাঠিন্যে ভোগে না।
  • শিশুদের ফুসফুসের সংক্রমণ, ডায়েরিয়া, কানের সংক্রমণ ও অ্যালার্জি থেকে রক্ষা করে।

কতবার স্তন্যপান করানো উচিত?

  • যখনই শিশুর খিদে পাবে, খাওয়ানো উচিত । একে বলে ‘ডিমান্ড ফিডিং’ ৷ যা প্রতি দেড় থেকে তিন ঘণ্টায় করা হয় । জোর করে শিশুকে স্তন্যপান করানো উচিত নয় ।
  • শিশুকে অতিরিক্ত জল, বা গ্রাইপ ওয়াটার বা গুট্টি দেবেন না ৷ কারণ 6 মাস শুধুমাত্র স্তন্যপান করাতে হয় । শিশুর পক্ষে বুকের দুধই স্বয়ংসম্পূর্ণ । মায়ের দুধের মধ্যেই পর্যাপ্ত জল থাকে, তাই অতিরিক্ত জল দেওয়ার দরকার নেই । সঠিকভাবে পরিচ্ছন্নতা বজায় না রাখতে পারলে শিশুর সংক্রমণ হতে পারে । যখন শিশু দুধ খেয়ে সন্তুষ্ট হবে, সে শান্ত হয়ে ঘুমিয়ে পড়বে । যদি শিশু কাঁদতেই থাকে, সেক্ষেত্রে দুগ্ধক্ষরণ কম হচ্ছে কি না দেখতে হবে ।

মা কোরোনা পজ়িটিভ হলেও কি শিশুকে স্তন্যপান করানো সম্ভব?

যদি মা কোরোনা পজ়িটিভ হন, তাহলেও সঠিক গাউন এবং মাস্ক ব্যবহার করে তিনি শিশুকে স্তন্যপান করাতে পারেন । কোরোনা থাকলেও মায়ের সঙ্গে শিশুর বন্ধন থাকা উচিত, পাশাপাশি মা তাঁর চিকিৎসাও চালিয়ে যেতে পারেন ।

গুরুত্বপূর্ণ তথ্য :

  • শিশুর জ্বর বা ডায়েরিয়া থাকলেও স্তন্যপান চালিয়ে যাওয়া যায় ।
  • স্তনবৃন্ত ও এরিওলার ওপরেই যাতে শিশুর মুখ থাকে, সেটা নিশ্চিত করুন । যদি শিশুকে ঠিকমতো ধরে নিপল এবং এরিওলার একটা অংশ তার মুখে দেওয়া যায়, তাহলে নিপল সাকিং হবে না ।
  • শিশুকে কোলে নিয়ে খাওয়ানোই সবথেকে ভাল ।
  • যদি মায়ের সিজারিয়ান অস্ত্রোপচার হয়, তাহলে যখনই তিনি সুস্থ হয়ে উঠবেন, তখন একজন আত্মীয় দ্রুত স্তন্যপান শুরু করাতে তাঁকে সাহায্য করতে পারেন ।
  • যদি বাচ্চার শ্বাসকষ্ট থাকে, তাহলে স্তন্যপান করাতে গিয়ে তার দমবন্ধ হওয়ার ঘটনা ঘটে, কিন্তু সঠিকভাবে করালে এটা হয় না ।

স্তন্যদানের সময় যে ধরণের খাওয়া-দাওয়া করা উচিত :

  • অ্যানিমিক মায়েরাও শিশুকে স্তন্যপান করাতে পারেন, কিন্তু তাঁকে সঠিকভাবে আয়রন ও ক্যালসিয়াম সাপ্লিমেন্ট এবং ভালভাবে খাওয়া দাওয়া করতে হবে, যাতে তিনি ও শিশু দুজনেই পর্যাপ্ত পুষ্টি পান ।
  • ক্যালসিয়াম সাপ্লিমেন্ট মায়েদের জয়েন্ট পেন কমায় । বিউলির ডাল ও ছোলা জয়েন্ট পেন কমাতে সাহায্য করে ।
  • মেথি, রাগি দিয়ে তৈরি পরিজ স্তন্যদুগ্ধের পরিমাণ বাড়ায় ।
  • বাড়িতে তৈরি সুষম খাবারই মায়ের পক্ষে ভালো ।

প্রতি সপ্তাহে 1 থেকে 8 অগাস্ট বিশ্ব স্তন্যপান সপ্তাহ পালন করা হয় । 2020-র থিম হল, " সুস্থতর পৃথিবীর জন্য স্তন্যপানকে সমর্থন করুন ৷ " মাতৃদুগ্ধই সবথেকে স্বাস্থ্যকর খাবার, যা একটি শিশুকে আমরা দিতে পারি । শিশুদের জন্য একে অমৃত বলা হয়, যার বহু উপকার রয়েছে । ETV ভারত সুখীভব এনিয়ে কথা বলেছিল বিশিষ্ট স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ, গাইনিকোলোজির অধ্যাপক, মুম্বইয়ের কামা এবং অলব্লেস হাসপাতালের প্রাক্তণ সুপার, ড. রাজশ্রী কাটকের সঙ্গে ।

স্তন্যপানের উপকারিতা কী কী?

  • মায়ের দুধ হল শিশুর জন্য সম্পূর্ণ আহার । এটা অনেকটা অমৃতের মতই, কারণ এতে থাকে ইমিউনোগ্লোবিউলিন, যা রেসপিরেটরি সংক্রমণের মতো বিভিন্ন রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করে, ফলে নিউমোনিয়া এবং সংক্রমণের জেরে মৃত্যুর ঘটনা কম হয় ।
  • মায়ের দুধ সম্পূর্ণ আহার ৷ কারণ এতে রয়েছে জল, কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন ও সহজপাচ্য ফ্যাট । এতে মিনারেল, ক্যালসিয়াম আর আয়রনও রয়েছে, যা শিশুর ভালভাবে বেড়ে উঠতে সাহায্য করে ।

শিশুর জন্য কী কী উপকার?

  • মায়ের সঙ্গে আবেগের বন্ধন জোরালো হয়, শিশুদের বোধ গভীর হয় ।
  • যে শিশুরা স্তন্যপান করা, তাদের IQ জোরালো হয়।
  • বাইরের ফর্মুলা দুধের তুলনায় মায়ের দুধ খেলে শিশুর ওজন ঠিকমতো বাড়ে।
  • স্তন্যপান করা শিশুরা সাধারণত কোষ্ঠকাঠিন্যে ভোগে না।
  • শিশুদের ফুসফুসের সংক্রমণ, ডায়েরিয়া, কানের সংক্রমণ ও অ্যালার্জি থেকে রক্ষা করে।

কতবার স্তন্যপান করানো উচিত?

  • যখনই শিশুর খিদে পাবে, খাওয়ানো উচিত । একে বলে ‘ডিমান্ড ফিডিং’ ৷ যা প্রতি দেড় থেকে তিন ঘণ্টায় করা হয় । জোর করে শিশুকে স্তন্যপান করানো উচিত নয় ।
  • শিশুকে অতিরিক্ত জল, বা গ্রাইপ ওয়াটার বা গুট্টি দেবেন না ৷ কারণ 6 মাস শুধুমাত্র স্তন্যপান করাতে হয় । শিশুর পক্ষে বুকের দুধই স্বয়ংসম্পূর্ণ । মায়ের দুধের মধ্যেই পর্যাপ্ত জল থাকে, তাই অতিরিক্ত জল দেওয়ার দরকার নেই । সঠিকভাবে পরিচ্ছন্নতা বজায় না রাখতে পারলে শিশুর সংক্রমণ হতে পারে । যখন শিশু দুধ খেয়ে সন্তুষ্ট হবে, সে শান্ত হয়ে ঘুমিয়ে পড়বে । যদি শিশু কাঁদতেই থাকে, সেক্ষেত্রে দুগ্ধক্ষরণ কম হচ্ছে কি না দেখতে হবে ।

মা কোরোনা পজ়িটিভ হলেও কি শিশুকে স্তন্যপান করানো সম্ভব?

যদি মা কোরোনা পজ়িটিভ হন, তাহলেও সঠিক গাউন এবং মাস্ক ব্যবহার করে তিনি শিশুকে স্তন্যপান করাতে পারেন । কোরোনা থাকলেও মায়ের সঙ্গে শিশুর বন্ধন থাকা উচিত, পাশাপাশি মা তাঁর চিকিৎসাও চালিয়ে যেতে পারেন ।

গুরুত্বপূর্ণ তথ্য :

  • শিশুর জ্বর বা ডায়েরিয়া থাকলেও স্তন্যপান চালিয়ে যাওয়া যায় ।
  • স্তনবৃন্ত ও এরিওলার ওপরেই যাতে শিশুর মুখ থাকে, সেটা নিশ্চিত করুন । যদি শিশুকে ঠিকমতো ধরে নিপল এবং এরিওলার একটা অংশ তার মুখে দেওয়া যায়, তাহলে নিপল সাকিং হবে না ।
  • শিশুকে কোলে নিয়ে খাওয়ানোই সবথেকে ভাল ।
  • যদি মায়ের সিজারিয়ান অস্ত্রোপচার হয়, তাহলে যখনই তিনি সুস্থ হয়ে উঠবেন, তখন একজন আত্মীয় দ্রুত স্তন্যপান শুরু করাতে তাঁকে সাহায্য করতে পারেন ।
  • যদি বাচ্চার শ্বাসকষ্ট থাকে, তাহলে স্তন্যপান করাতে গিয়ে তার দমবন্ধ হওয়ার ঘটনা ঘটে, কিন্তু সঠিকভাবে করালে এটা হয় না ।

স্তন্যদানের সময় যে ধরণের খাওয়া-দাওয়া করা উচিত :

  • অ্যানিমিক মায়েরাও শিশুকে স্তন্যপান করাতে পারেন, কিন্তু তাঁকে সঠিকভাবে আয়রন ও ক্যালসিয়াম সাপ্লিমেন্ট এবং ভালভাবে খাওয়া দাওয়া করতে হবে, যাতে তিনি ও শিশু দুজনেই পর্যাপ্ত পুষ্টি পান ।
  • ক্যালসিয়াম সাপ্লিমেন্ট মায়েদের জয়েন্ট পেন কমায় । বিউলির ডাল ও ছোলা জয়েন্ট পেন কমাতে সাহায্য করে ।
  • মেথি, রাগি দিয়ে তৈরি পরিজ স্তন্যদুগ্ধের পরিমাণ বাড়ায় ।
  • বাড়িতে তৈরি সুষম খাবারই মায়ের পক্ষে ভালো ।
ETV Bharat Logo

Copyright © 2025 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.