জন্মের সময়ে বহু চ্যালেঞ্জ থাকে । কারণ, বহু বিষয় আছে যা সদ্যোজাতদের বৃদ্ধি ও শরীরের বিকাশে বাধা হতে পারে । বডি ম্যাসাজ শিশুর হাড় ও পেশি শক্তিশালী করতে পারে, বলছেন হায়দরাবাদের AMD আয়ুর্বেদিক কলেজের অধ্যাপক-চিকিৎসক রাজ্যলক্ষ্মী মাধবম । তিনি বলেন, “আমরা শিশুর জন্মের এক সপ্তাহ পর থেকে ম্যাসাজ করে থাকি । এই ম্যাসাজ খুব সাবধানে এবং খুব হালকা চাপ দিয়ে করতে হয় ।” যদিও সবসময়ই পরামর্শ দেওয়া হয় যে শিশুদের ক্ষেত্রে কোনও কিছু শুরু করার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত । কারণ, এই বয়সে তারা খুব স্পর্শকাতর অবস্থায় থাকে ।
ম্যাসাজের উপকারিতা
ক্লান্তি দূর করে
রক্ত সঞ্চালন ভালো করে
এতে হজমশক্তি বাড়ে, যা সাধারণভাবে বর্ষাকালে দুর্বল থাকে । শিশুর খিদে বাড়ায় ।
শিশুদের ত্বক ভালো করে ।
চুলের যত্ন নেয় ।
হাড়, অস্থিসন্ধি আর পেশি শক্তিশালী করে ।
রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, আর ত্বকে কয়েক ধরনের সংক্রমণ আটকায় ।
ধাপে ধাপে
ড. রাজ্যলক্ষ্মী জানিয়েছেন, শিশুদের মালিশ করতে কীভাবে ধাপে ধাপে এগোতে হয়, অর্থাৎ শরীরের কোন অংশ থেকে শুরু করতে হয়...
মাথা
হাত ও পা
পেট ও বুক
পিঠ
তিনি বলেন, “শুধু শারীরিক উপকারই নয়, মালিশের মধ্যে দিয়ে মা ও শিশুর সম্পর্ক আরও মজবুত হয় । তাই বিশেষ করে অক্টোবর থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত, সপ্তাহে সাতদিন অভয়াঙ্গ করা উচিত।”
কী মনে রাখতে হবে?
পেট ও বুকে ম্যাসাজের সময় বিশেষভাবে যত্নশীল থাকা উচিত, কারণ সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ ওই এলাকাতেই থাকে ।
প্রতিদিন 10-15 মিনিট ধরে ম্যাসাজ করা যেতে পারে ।
ম্যাসাজের ঠিক আগেই শিশুকে খাওয়াবেন না । খালি পেটে করুন অথবা খাওয়ানোর পর অন্তত এক ঘণ্টা অপেক্ষা করুন ।
যদি শিশুর কাশি, সর্দি বা ডায়েরিয়ার মতো সমস্যা হয়, তাহলে অভয়াঙ্গ কিছুদিনের জন্য বন্ধ রাখুন ।
ম্যাসাজের জন্য ঈষদুষ্ণ তেল ব্যবহার করুন ।
তেলটা শিশুর শরীরে এক ঘণ্টা থাকতে দিন এবং তারপরে ঈষদুষ্ণ জলে স্নান করান ।
কোন তেল ব্যবহার করবেন ?
ড. রাজ্যলক্ষ্মী শিশুদের অভয়াঙ্গের জন্য কয়েক ধরনের তেল ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছেন...
তিলের তেল
নারকেল তেল
কয়েকটি আয়ুর্বেদিক তেল ব্যবহার করা যেতে পারে
বাল তৈল
বাল অশ্বগন্ধা তৈল
চন্দন বাল তৈল
লক্ষাদি তৈল
মঞ্জিষ্টড়ি তৈল
আপনি আয়ুর্বেদিক চিকিৎসককে জিজ্ঞাসা করে নিতে পারেন যে কোন তেলটি আপনার সন্তানের জন্য সবথেকে ভালো হবে ।
সুতরাং, তেল মালিশ অত্যন্ত উপকারী এবং শুধু শিশুদের জন্যই নয়, বড়রাও প্রতিদিন স্নানের সময় এই অভ্যাস করতে পারেন । আয়ুর্বেদশাস্ত্র অনুযায়ী, এটি ‘দিনচর্যা’ বা প্রাত্যহিক কাজকর্মের অন্তর্ভুক্ত । অন্তত 5-10 মিনিটের ম্যাসাজ মাইক্রোসার্কুলেশনকে উন্নত করে ।