দিল্লি, 20 সেপ্টেম্বর: কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর সংসদে পি এম কেয়ারস ফান্ডের আলোচনায় অংশ নিয়েছিলেন শুক্রবার । সেখানে তাঁর জওহরলাল নেহরু ও গান্ধি পরিবারকে নিয়ে করা মন্তব্যকে কেন্দ্র করে উত্তাল হয়েছিল সংসদ । তার বক্তব্যের তীব্র বিরোধিতা করেন কংগ্রেস নেতৃত্ব । চারবার মুলতুবি হয়ে যায় লোকসভা অধিবেশন । পরে অবশ্য নিজের মন্তব্যের জন্য ক্ষমা চান অনুরাগ ঠাকুর । এরপর কিছুটা হলেও শান্ত হন বিরোধীরা । ঠিক একদিন পরেই অর্থাৎ গতকাল ফের কংগ্রেসের বিরুদ্ধে তোপ দাগলেন অনুরাগ । আগের দিনের মন্তব্যে কোনও ভুল কথা বলেননি বলে যুক্তি তাঁর ।
পি এম কেয়ারস ফান্ড নিয়ে আলোচনার সময় অনুরাগ বলেন , "এই তহবিলটিকে বৈধতা দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট । কোরোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য এই তহবিল গঠনে একদিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে শিশুরা । অন্যদিকে সাহায্য করেছেন শিল্পপতিরাও ।" এই প্রসঙ্গে বিরোধীদের ছোড়া প্রশ্নে তিনি জবাব দেন , " 1948 সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু প্রধানমন্ত্রী জাতীয় ত্রাণ তহবিল গঠনের নির্দেশ দিয়েছিলেন । সেই সময় তৈরি হওয়া তহবিলটি এখনও পর্যন্ত নিবন্ধিত করা হয়নি ।" প্রশ্ন তোলেন, "এই তহবিলে কী করে বিদেশি অনুদান জমা হয়?" বিশেষ করে কংগ্রেস সাংসদদের উদ্দেশে তিনি বলেন, "আগে গান্ধি পরিবারের জন্যই তহবিল তৈরি হয়েছিল । নেহরু থেকে সোনিয়া গান্ধি তহবিলের সদস্য ছিলেন । সেই বিষয়টিও তদন্ত করে দেখা প্রয়োজন ।"
অনুরাগ ঠাকুরের এই মন্তব্যের পরই সুর চড়ান কংগ্রেস সাংসদ অধীররঞ্জন চৌধুরি । বলেন, "প্রাক্তন নেতাদের সম্বন্ধে বলতে গিয়ে কিছু মন্তব্য করতে গেলে নিয়ম বিধি অনুসারে তা করতে হয় । এক্ষেত্রে অনুরাগ কোনওটাই মানেননি ।" BJP- কে আক্রমণ করে তিনি বলেন, "কংগ্রেস কখনও কোনও বিতর্কে এরকমভাবে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নাম করে না ।"
পি এম কেয়ারস ফান্ড নিয়ে BJP তথা RSS- কে আক্রমণ করেন কংগ্রেস সাংসদ গৌরব গগৈ । কোরোনা পরিস্থিতিতে এই তহবিল আলাদা করে গঠনের প্রয়োজনীতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন অন্য বিরোধী নেতৃত্বরাও ।
RSP নেতা এন কে প্রেমা চন্দ্রান বলেন, "আমি বুঝতে পারছি না আলাদা করে এই তহবিল গঠনের প্রয়োজনীয়তা কী? প্রধানমন্ত্রী জাতীয় ত্রাণ তহবিল এবং পি এম কেয়ারস ফান্ডের মধ্যে পার্থক্যটা কোথায়? মূলত এখানে কতটা স্বচ্ছতা ও দায়িত্ব রক্ষিত হচ্ছে সেই বিষয়টি আমায় ভাবাচ্ছে ।" পি এম কেয়ারস ফান্ড নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ মহুয়া মৈত্রও । বলেন, "জনগণের টাকা নিয়ে যেখানে এই তহবিল তৈরি হয়েছে সেখানে কেন তা নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকার সংসদে জবাবদিহি করবে না? এই তহবিলে 38টি পাবলিক সেক্টর কম্পানি 2100 কোটি টাকা দান করেছে । আর তা মোট পুরো দানের 70% ।"
সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, পি এম কেয়ারস ফান্ড একটি দাতব্য ট্রাস্ট হিসেবে নিবন্ধিত । এই বিষয়ে অনুরাগ ঠাকুর বলেন, "1908 আইন অনুযায়ী 27 মার্চ 2020-তে নিবন্ধিত হয় এই পি এম কেয়ারস ফান্ড । একজন নিরপেক্ষ নিরীক্ষককে নিয়োগ করা হয়েছিল । কাউকে এই তহবিলে দানের জন্য বল প্রয়োগ করা যাবে না । এই ফান্ডের সদস্য হিসেবে নাম রয়েছে প্রধানমন্ত্রী, প্রতিরক্ষামন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রীর ।