ETV Bharat / bharat

বিডেন-হ্যারিস জিতলে প্যারিস জলবায়ু চুক্তিতে ফিরতে পারে অ্যামেরিকা, বলছেন বিশেষজ্ঞরা - Joe Biden

বিডেন ও হ্যারিস দুজনেই জলবায়ু এবং পরিবেশ ন্যায়ের পক্ষে জোরালো সওয়াল করে থাকেন ৷ অ্যামেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জিতলে তাঁরা সেই জলবায়ু চুক্তিতে পুনঃপ্রবেশ করতে পারেন ৷ প্রতিবেদনটি লিখেছেন অরুণিম ভুঁইঞা ৷

Biden-Harris victory
প্যারিস জলবায়ু চুক্তি
author img

By

Published : Aug 15, 2020, 7:24 PM IST

দিল্লি : বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যদি এবছরের অ্যামেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জো বিডেন-কমলা হ্যারিস জুটি জয়লাভ করে, তাহলে 2015 সালের প্যারিস জলবায়ু চুক্তিতে পুনঃপ্রবেশ করতে পারে অ্যামেরিকা ৷ যা থেকে সরে এসেছিলেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ।

বিডেন ও হ্যারিস দুজনেই জলবায়ু এবং পরিবেশ ন্যায়ের পক্ষে জোরালো সওয়াল করে থাকেন ৷ এবং তাঁরা সেই জলবায়ু চুক্তিতে পুনঃপ্রবেশ করতে পারেন, যাতে ভারত একটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিল ।

হ্যারিস ক্যালিফোর্নিয়ার একজন সেনেটর ৷ তাঁকে ডেমোক্র্যাট প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী জো বিডেন তাঁর সহযোগী হিসেবে বেছে নিয়েছেন । হ্যারিস চলতি মাসেরই শুরুর দিকে নিউইয়র্কের প্রতিনিধি আলেকজান্দ্রিয়া ওকাসিও-কোর্টেজের সঙ্গে ক্লাইম্যাট ইকুইটি অ্যাক্ট (CEA) নিয়ে এসেছেন ।

CEA-র খসড়া বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “আমাদের মার্কিন সরকারকে দায়বদ্ধ করতে হবে, যাতে এটা নিশ্চিত হয় যে সামনের জনগোষ্ঠীই সিদ্ধান্তগ্রহণ প্রক্রিয়ার কেন্দ্রে থাকুক তখনই, যখনই জলবায়ু ও পরিবেশ সংক্রান্ত বোঝাপড়ার লক্ষ্যে নীতি, নিয়ন্ত্রণ ও নিয়মের ব্যাপারে বিবেচনা করা হয় । এতে শুধুমাত্র পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তনের মোকাবিলায় সরাসরি নীতিগত অবস্থান অন্তর্ভুক্ত করা যাবে । পাশাপাশি পরিবহন, আবাসন, পরিকাঠামো, কর্মংস্থান, শ্রমশক্তির উন্নয়ন সহ নানা বিষয়ও বিবেচনা করা যাবে ।”

এই অবস্থান অ্যামেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের 2017 সালের সিদ্ধান্তের বিপরীত ৷ ওই বছর ট্রাম্প 2015 সালের প্যারিস জলবায়ু চুক্তি থেকে বেরিয়ে আসেন ৷ এবং চুক্তিতে ফের ঢোকার জন্য “অ্যামেরিকার জনগণ, তার শ্রমিক, জনগণ ও করদাতাদের” পক্ষে সুবিধাজনক শর্ত, অথবা নতুন করে চুক্তির জন্য দর কষাকষি শুরু করেন । চুক্তি থেকে সরে আসার সময় ট্রাম্প বলেছিলেন, প্যারিস চুক্তি মার্কিন অর্থনীতিকে উপেক্ষা করেছে এবং তাঁর দেশকে "স্থায়ী অসুবিধা"র মুখে দাঁড় করিয়েছে । তিনি এও বলেন যে তাঁর অ্যামেরিকা ফার্স্ট নীতি অনুযায়ীই এই চুক্তি থেকে সরে আসা হবে ।

সমস্ত পক্ষের আলোচনার পর ঐতিহাসিক প্যারিস জলবায়ু চুক্তিতে বলা হয়েছে, 2020 সাল থেকে বছরে ন্যূনতম 100 বিলিয়ন ডলার যাতে উন্নত বিশ্ব থেকে উন্নয়নশীল দেশগুলোতে যায়, সেটা নিশ্চিত করতে হবে, যাতে তারা তাদের পরিবেশ সংক্রান্ত প্রতিশ্রুতি পূরণ করতে পারে ৷ বা ইউনাইটেড নেশনস ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন অন ক্লাইম্যাট চেঞ্জে (UNFCCC) তাদের জমা দেওয়া ন্যাশনালি ডিটারমাইন্ড কনট্রিবিউশন (NDCs) অনুযায়ী কাজ করতে পারে ।

চুক্তি অনুযায়ী, বিশ্বের তাপমাত্রা বৃদ্ধিকে 2 ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে রাখা হবে এবং সমস্ত দেশ চেষ্টা চালিয়ে যাবে ৷ যাতে এই বৃ্দ্ধিকে 1.5 ডিগ্রি সেলসিয়াসে বেঁধে রাখা যায় ।

এই চুক্তি অনুযায়ী, ভারত তিনটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিশ্রুতি দিয়েছে - 2030 সালের মধ্যে বিদ্যুৎ উৎপাদনের 40 শতাংশ জীবাশ্ম-জ্বালানি নয়, এমন উৎস থেকে করা হবে; GDP-তে গ্রিন হাউজ় গ্যাস নির্গমণের তীব্রতা 2005 সালের তুলনায় 2030 সালের মধ্যে 33.35 শতাংশ কমানো হবে; 2030 সালের মধ্যে অতিরিক্ত বনসৃজনের মাধ্যমে 2.5 থেকে 3 বিলিয়ন টনের সমান পরিমাণে ‘কার্বন সিঙ্ক’ করা হবে ।

2015 সালে বিভিন্ন পক্ষের বৈঠকের সময় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, তৎকালীন ফরাসি প্রেসিডেন্ট ফ্রাসোয়াঁ ওলাদেঁর সঙ্গে যৌথভাবে ইন্টারন্যাশনাল সোলার অ্যালায়েন্স (ISA) শুরু করেন, যা হল সৌরশক্তি সম্পন্ন দেশগুলোর এক জোট, যারা যৌথভাবে তাদের শক্তির চাহিদা মেটাতে এবং খামতিগুলো চিহ্নিত করে তা মেটানোর একটা মঞ্চ তৈরি করবে ।

ISA সেই 121টি সদস্য দেশের জন্যই খোলা, যারা কর্কটক্রান্তি ও মকরক্রান্তি রেখার মাঝে পড়ে ।

ISA-র সদর দপ্তর হল গুরুগ্রামে । দিল্লি এই জোটের গঠন, পরিকাঠামো ও খরচ বাবদ 2016-17 থেকে 2020-21, এই পাঁচ বছরে 125 কোটি টাকা দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ।

যদিও ভারতের সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়ানোর প্রয়াস COVID-19 মহামারির জেরে ব্যাহত হয়েছে ৷ কিন্তু তাও চলতি বছরের 30 জুনের মধ্যে তা 35 গিগাওয়াটের উপরে পৌঁছেছে ।

এখন হ্যারিস যখন CEA নিয়ে আসছেন, তখন পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন যে তিনি অ্যামেরিকাকে প্যারিস চুক্তিতে ফের যোগ দেওয়াতে পারেন যদি বিডেন নির্বাচনে জেতেন ৷ যেটা দিল্লির পক্ষে ভালো খবর ।

নিউ ক্লাইম্যাট ইনস্টিটিউটের প্রধান নিকলাস হন-কে উদ্ধৃত করে ক্লাইম্যাট হোম নিউজ় বলছে, “এটা নিশ্চিতভাবেই পরিবেশ কূটনীতির জন্য একটা ভালো পদক্ষেপ ।” বিডেনের হ্যারিসকে তাঁর রানিং মেট হিসেবে বেছে নেওয়া প্রসঙ্গে তিনি এই মন্তব্য করেন ।

হন বলেন, “জলবায়ু নীতি এবং প্যারিস চুক্তির ক্ষেত্রে বিডেন-হ্যারিস প্রশাসন হবে দিন ও রাতের মতো ।” নয়াদিল্লির অবজ়ার্ভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনে সেন্টার ফর রিসোর্স ম্যানেজমেন্টের প্রধান, লিডিয়া পাওয়েলও এই ব্যাপারে সহমত ।

ETV ভারতের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে পাওয়েল মনে করান যে বিডেন নিজেই সেই বিবৃতিগুলো দিয়েছিলেন, যেখানে বলা হয়েছিল যে অ্যামেরিকার উচিত জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে লড়াই করা । এটা ট্রাম্পের নীতির সম্পূর্ণ বিপরীত ।

তাঁর নির্বাচনী প্রচারের বয়ানে বিডেন বলেছিলেন যে তিনি জানেন যে কীভাবে অ্যামেরিকার তার সহযোগীদের পাশে দাঁড়ানো উচিত । তিনি বলেন, “যা করতে হবে, তা নিয়ে শত্রুর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ান ৷ এবং বিশ্বের যে কোনও নেতার পাশে থাকুন ।”

বিডেনের প্রচার ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে – তিনি যে শুধু জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে প্যারিস চুক্তিতে অ্যামেরিকাকে ফের প্রতিশ্রুতিবদ্ধ করবেন তা নয়, তিনি তার থেকেও বেশিদূর যাবেন ।

কিন্তু পাওয়েল এও বলেন, ডেমোক্র্যাটরা জীবাশ্ম-জ্বালানির সম্পূর্ণ বিরোধিতা করবে না ৷ কারণ এর সঙ্গে অ্যামেরিকার স্থানীয় কর্মসংস্থানের যোগ আছে । তিনি বলেন, “বিশ্ব পরিচ্ছন্ন জ্বালানির দিকে যাবেই । তাঁরা (বিডেন-হ্যারিস যুগলবন্দি যদি জেতে) প্যারিস চুক্তিতে নিশ্চিতভাবেই ফিরে যাবেন । এটা একরকম নিশ্চিত।”

হ্যারিসের CEA চাইছে যুক্তরাষ্ট্রীয় জলবায়ু ও পরিবেশ পদক্ষেপে দায়বদ্ধতা ৷ যেখানে সবথেকে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর নেতারা একই টেবিলে বসে আলোচনার মাধ্যমে আইন প্রণয়নে অংশীদার হবেন ।

CEA খসড়া বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “আগামী শীতে আনুষ্ঠানিক আত্মপ্রকাশের আগে, সামনের সারিতে থাকা গোষ্ঠী এবং তাদের সহযোগীরা খসড়া আইনে মতামত দেওয়ার সুযোগ পাবে ৷ যাতে সবথেকে শক্তিশালী একটি নীতি আমরা তৈরি করতে পারি ।”

হ্যারিস হলেন আফ্রিকান ও ভারতীয় বংশোদ্ভূত প্রথম ব্যক্তি, যিনি ডেমোক্র্যাট দলের অ্যামেরিকার ভাইস প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী । তিনি তাঁর কেরিয়ার জুড়ে জলবায়ু ও পরিবেশ সংক্রান্ত ন্যায়বিচারের উপর জোর দিয়ে এসেছেন । সান ফ্রান্সিসকোর ডিস্ট্রিক্ট অ্যাটর্নি হিসেবে তিনি একটি ইউনিটও তৈরি করেছিলেন, যাতে শহরের সবথেকে বিপন্ন গোষ্ঠীগুলিকে সহায়তা করা যায় ।

যদি বিডেন হোয়াইট হাউজ়ে আসেন, সেক্ষেত্রে প্যারিস চুক্তি নিয়ে অ্যামেরিকার পদক্ষেপের উপর তীক্ষ্ম নজর রাখবে ভারত । রিয়েল ক্লিয়ার পলিটিক্সের তথ্যের ভিত্তিতে ফিনান্সিয়াল টাইমসের সর্বশেষ পোল ট্র্যাকার বলছে, ২৯৮টি ইলেক্টোরাল কলেজ ভোট পাবেন বিডেন ৷ যেখানে ট্রাম্প পাচ্ছেন মাত্র 119টা । প্রেসিডেন্ট হওয়ার জন্য প্রার্থীকে 270টি ইলেক্টোরাল কলেজ ভোট পেতে হবে ।

দিল্লি : বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যদি এবছরের অ্যামেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জো বিডেন-কমলা হ্যারিস জুটি জয়লাভ করে, তাহলে 2015 সালের প্যারিস জলবায়ু চুক্তিতে পুনঃপ্রবেশ করতে পারে অ্যামেরিকা ৷ যা থেকে সরে এসেছিলেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ।

বিডেন ও হ্যারিস দুজনেই জলবায়ু এবং পরিবেশ ন্যায়ের পক্ষে জোরালো সওয়াল করে থাকেন ৷ এবং তাঁরা সেই জলবায়ু চুক্তিতে পুনঃপ্রবেশ করতে পারেন, যাতে ভারত একটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিল ।

হ্যারিস ক্যালিফোর্নিয়ার একজন সেনেটর ৷ তাঁকে ডেমোক্র্যাট প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী জো বিডেন তাঁর সহযোগী হিসেবে বেছে নিয়েছেন । হ্যারিস চলতি মাসেরই শুরুর দিকে নিউইয়র্কের প্রতিনিধি আলেকজান্দ্রিয়া ওকাসিও-কোর্টেজের সঙ্গে ক্লাইম্যাট ইকুইটি অ্যাক্ট (CEA) নিয়ে এসেছেন ।

CEA-র খসড়া বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “আমাদের মার্কিন সরকারকে দায়বদ্ধ করতে হবে, যাতে এটা নিশ্চিত হয় যে সামনের জনগোষ্ঠীই সিদ্ধান্তগ্রহণ প্রক্রিয়ার কেন্দ্রে থাকুক তখনই, যখনই জলবায়ু ও পরিবেশ সংক্রান্ত বোঝাপড়ার লক্ষ্যে নীতি, নিয়ন্ত্রণ ও নিয়মের ব্যাপারে বিবেচনা করা হয় । এতে শুধুমাত্র পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তনের মোকাবিলায় সরাসরি নীতিগত অবস্থান অন্তর্ভুক্ত করা যাবে । পাশাপাশি পরিবহন, আবাসন, পরিকাঠামো, কর্মংস্থান, শ্রমশক্তির উন্নয়ন সহ নানা বিষয়ও বিবেচনা করা যাবে ।”

এই অবস্থান অ্যামেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের 2017 সালের সিদ্ধান্তের বিপরীত ৷ ওই বছর ট্রাম্প 2015 সালের প্যারিস জলবায়ু চুক্তি থেকে বেরিয়ে আসেন ৷ এবং চুক্তিতে ফের ঢোকার জন্য “অ্যামেরিকার জনগণ, তার শ্রমিক, জনগণ ও করদাতাদের” পক্ষে সুবিধাজনক শর্ত, অথবা নতুন করে চুক্তির জন্য দর কষাকষি শুরু করেন । চুক্তি থেকে সরে আসার সময় ট্রাম্প বলেছিলেন, প্যারিস চুক্তি মার্কিন অর্থনীতিকে উপেক্ষা করেছে এবং তাঁর দেশকে "স্থায়ী অসুবিধা"র মুখে দাঁড় করিয়েছে । তিনি এও বলেন যে তাঁর অ্যামেরিকা ফার্স্ট নীতি অনুযায়ীই এই চুক্তি থেকে সরে আসা হবে ।

সমস্ত পক্ষের আলোচনার পর ঐতিহাসিক প্যারিস জলবায়ু চুক্তিতে বলা হয়েছে, 2020 সাল থেকে বছরে ন্যূনতম 100 বিলিয়ন ডলার যাতে উন্নত বিশ্ব থেকে উন্নয়নশীল দেশগুলোতে যায়, সেটা নিশ্চিত করতে হবে, যাতে তারা তাদের পরিবেশ সংক্রান্ত প্রতিশ্রুতি পূরণ করতে পারে ৷ বা ইউনাইটেড নেশনস ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন অন ক্লাইম্যাট চেঞ্জে (UNFCCC) তাদের জমা দেওয়া ন্যাশনালি ডিটারমাইন্ড কনট্রিবিউশন (NDCs) অনুযায়ী কাজ করতে পারে ।

চুক্তি অনুযায়ী, বিশ্বের তাপমাত্রা বৃদ্ধিকে 2 ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে রাখা হবে এবং সমস্ত দেশ চেষ্টা চালিয়ে যাবে ৷ যাতে এই বৃ্দ্ধিকে 1.5 ডিগ্রি সেলসিয়াসে বেঁধে রাখা যায় ।

এই চুক্তি অনুযায়ী, ভারত তিনটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিশ্রুতি দিয়েছে - 2030 সালের মধ্যে বিদ্যুৎ উৎপাদনের 40 শতাংশ জীবাশ্ম-জ্বালানি নয়, এমন উৎস থেকে করা হবে; GDP-তে গ্রিন হাউজ় গ্যাস নির্গমণের তীব্রতা 2005 সালের তুলনায় 2030 সালের মধ্যে 33.35 শতাংশ কমানো হবে; 2030 সালের মধ্যে অতিরিক্ত বনসৃজনের মাধ্যমে 2.5 থেকে 3 বিলিয়ন টনের সমান পরিমাণে ‘কার্বন সিঙ্ক’ করা হবে ।

2015 সালে বিভিন্ন পক্ষের বৈঠকের সময় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, তৎকালীন ফরাসি প্রেসিডেন্ট ফ্রাসোয়াঁ ওলাদেঁর সঙ্গে যৌথভাবে ইন্টারন্যাশনাল সোলার অ্যালায়েন্স (ISA) শুরু করেন, যা হল সৌরশক্তি সম্পন্ন দেশগুলোর এক জোট, যারা যৌথভাবে তাদের শক্তির চাহিদা মেটাতে এবং খামতিগুলো চিহ্নিত করে তা মেটানোর একটা মঞ্চ তৈরি করবে ।

ISA সেই 121টি সদস্য দেশের জন্যই খোলা, যারা কর্কটক্রান্তি ও মকরক্রান্তি রেখার মাঝে পড়ে ।

ISA-র সদর দপ্তর হল গুরুগ্রামে । দিল্লি এই জোটের গঠন, পরিকাঠামো ও খরচ বাবদ 2016-17 থেকে 2020-21, এই পাঁচ বছরে 125 কোটি টাকা দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ।

যদিও ভারতের সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়ানোর প্রয়াস COVID-19 মহামারির জেরে ব্যাহত হয়েছে ৷ কিন্তু তাও চলতি বছরের 30 জুনের মধ্যে তা 35 গিগাওয়াটের উপরে পৌঁছেছে ।

এখন হ্যারিস যখন CEA নিয়ে আসছেন, তখন পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন যে তিনি অ্যামেরিকাকে প্যারিস চুক্তিতে ফের যোগ দেওয়াতে পারেন যদি বিডেন নির্বাচনে জেতেন ৷ যেটা দিল্লির পক্ষে ভালো খবর ।

নিউ ক্লাইম্যাট ইনস্টিটিউটের প্রধান নিকলাস হন-কে উদ্ধৃত করে ক্লাইম্যাট হোম নিউজ় বলছে, “এটা নিশ্চিতভাবেই পরিবেশ কূটনীতির জন্য একটা ভালো পদক্ষেপ ।” বিডেনের হ্যারিসকে তাঁর রানিং মেট হিসেবে বেছে নেওয়া প্রসঙ্গে তিনি এই মন্তব্য করেন ।

হন বলেন, “জলবায়ু নীতি এবং প্যারিস চুক্তির ক্ষেত্রে বিডেন-হ্যারিস প্রশাসন হবে দিন ও রাতের মতো ।” নয়াদিল্লির অবজ়ার্ভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনে সেন্টার ফর রিসোর্স ম্যানেজমেন্টের প্রধান, লিডিয়া পাওয়েলও এই ব্যাপারে সহমত ।

ETV ভারতের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে পাওয়েল মনে করান যে বিডেন নিজেই সেই বিবৃতিগুলো দিয়েছিলেন, যেখানে বলা হয়েছিল যে অ্যামেরিকার উচিত জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে লড়াই করা । এটা ট্রাম্পের নীতির সম্পূর্ণ বিপরীত ।

তাঁর নির্বাচনী প্রচারের বয়ানে বিডেন বলেছিলেন যে তিনি জানেন যে কীভাবে অ্যামেরিকার তার সহযোগীদের পাশে দাঁড়ানো উচিত । তিনি বলেন, “যা করতে হবে, তা নিয়ে শত্রুর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ান ৷ এবং বিশ্বের যে কোনও নেতার পাশে থাকুন ।”

বিডেনের প্রচার ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে – তিনি যে শুধু জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে প্যারিস চুক্তিতে অ্যামেরিকাকে ফের প্রতিশ্রুতিবদ্ধ করবেন তা নয়, তিনি তার থেকেও বেশিদূর যাবেন ।

কিন্তু পাওয়েল এও বলেন, ডেমোক্র্যাটরা জীবাশ্ম-জ্বালানির সম্পূর্ণ বিরোধিতা করবে না ৷ কারণ এর সঙ্গে অ্যামেরিকার স্থানীয় কর্মসংস্থানের যোগ আছে । তিনি বলেন, “বিশ্ব পরিচ্ছন্ন জ্বালানির দিকে যাবেই । তাঁরা (বিডেন-হ্যারিস যুগলবন্দি যদি জেতে) প্যারিস চুক্তিতে নিশ্চিতভাবেই ফিরে যাবেন । এটা একরকম নিশ্চিত।”

হ্যারিসের CEA চাইছে যুক্তরাষ্ট্রীয় জলবায়ু ও পরিবেশ পদক্ষেপে দায়বদ্ধতা ৷ যেখানে সবথেকে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর নেতারা একই টেবিলে বসে আলোচনার মাধ্যমে আইন প্রণয়নে অংশীদার হবেন ।

CEA খসড়া বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “আগামী শীতে আনুষ্ঠানিক আত্মপ্রকাশের আগে, সামনের সারিতে থাকা গোষ্ঠী এবং তাদের সহযোগীরা খসড়া আইনে মতামত দেওয়ার সুযোগ পাবে ৷ যাতে সবথেকে শক্তিশালী একটি নীতি আমরা তৈরি করতে পারি ।”

হ্যারিস হলেন আফ্রিকান ও ভারতীয় বংশোদ্ভূত প্রথম ব্যক্তি, যিনি ডেমোক্র্যাট দলের অ্যামেরিকার ভাইস প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী । তিনি তাঁর কেরিয়ার জুড়ে জলবায়ু ও পরিবেশ সংক্রান্ত ন্যায়বিচারের উপর জোর দিয়ে এসেছেন । সান ফ্রান্সিসকোর ডিস্ট্রিক্ট অ্যাটর্নি হিসেবে তিনি একটি ইউনিটও তৈরি করেছিলেন, যাতে শহরের সবথেকে বিপন্ন গোষ্ঠীগুলিকে সহায়তা করা যায় ।

যদি বিডেন হোয়াইট হাউজ়ে আসেন, সেক্ষেত্রে প্যারিস চুক্তি নিয়ে অ্যামেরিকার পদক্ষেপের উপর তীক্ষ্ম নজর রাখবে ভারত । রিয়েল ক্লিয়ার পলিটিক্সের তথ্যের ভিত্তিতে ফিনান্সিয়াল টাইমসের সর্বশেষ পোল ট্র্যাকার বলছে, ২৯৮টি ইলেক্টোরাল কলেজ ভোট পাবেন বিডেন ৷ যেখানে ট্রাম্প পাচ্ছেন মাত্র 119টা । প্রেসিডেন্ট হওয়ার জন্য প্রার্থীকে 270টি ইলেক্টোরাল কলেজ ভোট পেতে হবে ।

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.