উজ্জয়িনীর চিন্তামণ গণেশ মন্দির ৷ কথিত আছে এখানে উলটো স্বস্তিক এঁকে না কি পুজো করলে মনের ইচ্ছাপূরণ হয় ৷ কিন্তু এতেই শেষ নয় ৷ ইচ্ছাপূরণ হলে পুনরায় সোজা স্বস্তিক এঁকে পুজো করতে হয় গণপতির ৷ কিন্তু এর পিছনেও রয়েছে ইতিহাস ৷ একবার পড়ে নেওয়া যাক সেটি ৷
মধ্যপ্রদেশের উজ্জয়িনী থেকে 6 কিলোমিটার দূরে জাভাসা গ্রাম ৷ সেখানে গণপতির একটি প্রাচীন মন্দির রয়েছে ৷ এই মন্দিরে বাপ্পা চিন্তামণ গণেশ নামে পরিচিত ৷ পাশাপাশি এখানে তাঁর তিনটি রূপ দেখতে পাওয়া যায় ৷ প্রথম রূপটি চিন্তামণ গণেশ, দ্বিতীয় রূপটি ইছামণ গণেশ, তৃতীয়টি সিদ্ধিবিনায়ক ৷ এই মন্দিরে এলে দেখা যায় গণপতি কীভাবে ভোগে লাড্ডু আর মোদক উপভোগ করছে ৷
কথিত আছে
চিন্তামণ গণেশ সমস্ত উদ্বেগ দূর করে ৷ ইছামণ আকাঙ্ক্ষা পূর্ণ করেন এবং সিদ্ধিবিনায়ক গণেশ ভক্তদের রিদ্ধি এবং সিদ্ধি দিয়ে আশীর্বাদ করেন ৷
ইতিহাস বলছে
রাজা দশরথের মৃত্যুর পর রাম, লক্ষ্মণ, সীতা বনবাস কালে এই জায়গায় আসেন ৷ এবং এখানের জঙ্গলে বিশ্রাম নেন ৷ এরপর সেখান থেকে চলে যাওয়ার আগে রামচন্দ্র মনে করেন, ওই স্থান কোনও কারণের জন্য অশুভ ৷ সেই কারণে তিনি এখানে গণেশ পুজো করবেন বলে মনস্থির করেন ৷ এবং তখনই এখানে চিন্তামণ গণেশের প্রতিষ্ঠা হয় ৷ এরপর লক্ষ্মণ পুজো করেন ইচ্ছামণ গণেশ এবং সীতা সিদ্ধি বিনায়কের পুজো করেন ৷ সেই থেকে এখনও অবধি গণেশের তিনটি রূপের পুজো এখানে হয়ে আসছে ৷ পাশাপাশি বিশ্বাস করা হয় সীতা পুজো শেষ না হওয়া পর্যন্ত উপবাস ছিলেন ৷ সেই উপবাস ভঙ্গ করার জন্য লক্ষ্মণ মাটিতে তীর ছোড়ে ৷ তৎক্ষণাত মাটি থেকে জল বের হয় ৷ এই সমস্তটিই তৈরি হয়েছিল বাপানীতে ৷ এখনও সেটি এখানে রয়েছে ৷
ভক্তদের বিশ্বাস
গণপতি তাঁদের সব অপূর্ণ মনের ইচ্ছাপূরণ করেন ৷ সেই উদ্দেশ্যে তাঁরা প্রথমে মন্দিরে উলটো স্বস্তিক এঁকে পুজো করেন, পরে ইচ্ছাপূরণ হলে সোজা স্বস্তিক এঁকে পুনরায় পুজো দিয়ে যান ৷ কিন্তু এর পিছনেও ইতিহাস রয়েছে ৷
ইতিহাস বলছে
এক সময় উজ্জয়িনীতে মহামরী দেখা দেয় ৷ সেই সময় এখানকার বাসিন্দারা উলটো সস্তিক এঁকে গণেশ পুজো করেন ৷ যখন মহামারী শেষ হয়ে যায় তখন ইচ্ছাপূর্তি হওয়ার জন্য তাঁরা সোজা স্বস্তিক এঁকে পুনরায় পুজো করেন ৷ সেই প্রথা এখনও প্রচলিত রয়েছে ৷
ভক্তরা মনে করেন গণপতির কাছে তাঁদের সব দু:খের সমাধান রয়েছেন ৷ সেই কারণেই গণেশ চতুর্থী থেকে অন্তিম চতুর্থী পর্যন্ত টানা 10 দিন এই মন্দিরে ভিড় উপচে পড়ে ৷