ETV Bharat / bharat

কোরোনা পরবর্তী সময়ে অন্তত 20 শতাংশ পড়ুয়া শিক্ষার সুযোগ হারাবে, বলছে সমীক্ষা - ২০ শতাংশ পড়ুয়া শিক্ষার সুযোগ হারাবে

COVID—19 বিশ্বজুড়ে 1.6 বিলিয়ন পড়ুয়ার (যা পড়ুয়াদের সর্বমোট সংখ্যার অন্তত ৯১ শতাংশ) শিক্ষায় বিঘ্ন ঘটিয়েছে । একান্ত সাক্ষাৎকারে বললেন "সেভ দা চিলড্রেন ইন্ডিয়া"-র ডেপুটি ডিরেক্টর অফ এডুকেশন, কমল গৌর ।

education system post-COVID
education system post-COVID
author img

By

Published : Jul 16, 2020, 10:37 AM IST

কোরোনা পরবর্তী সময়ে শিশুদের শিক্ষার অধিকার নিয়ে ভয়াবহ সংকট সম্পর্কে সতর্ক করেছে "সেভ দা চিলড্রেন" নামে ব্রিটেনের একটি মানবাধিকার সংগঠন । "সেভ আওয়ার এডুকেশন" শীর্ষক রিপোর্টে তারা জানিয়েছে, COVID—19 বিশ্বজুড়ে 1.6 বিলিয়ন পড়ুয়ার (যা পড়ুয়াদের মোট সংখ্যার অন্তত 91 শতাংশ) শিক্ষায় বিঘ্ন ঘটিয়েছে । সমীক্ষা অনুযায়ী, পড়ুয়াদের একটি বড় অংশ COVID—19- এর ফলে প্রথাগত শিক্ষাব্যবস্থার বাইরে চলে যাবে । তারা আর ক্লাসে ফিরবে না । এনিয়ে "সেভ দা চিলড্রেন"-এর ডেপুটি ডিরেক্টর অফ এডুকেশন কমল গৌরের সঙ্গে কথা বলেছিলেন ETV ভারতের কৃষ্ণানন্দ ত্রিপাঠী ।

এটি একটি বিশ্বব্যাপী সমীক্ষা । ভারত এবং বিশ্বে কোরোনার প্রভাব কী হবে?

UNESCO বলছে, COVID—19-এর ফলে প্রি—প্রাইমারি থেকে শুরু করে টার্শিয়ারি স্তর পর্যন্ত 322 মিলিন পড়ুয়ার উপর প্রভাব পড়তে পারে । তাদের শিক্ষাগ্রহণে বিঘ্ন ঘটতে পারে । অনলাইন মাধ্যমে হয়তো তারা পড়াশোনা করছে কিন্তু কেউই জানে না বাস্তবে তারা কতটা শিখতে পারছে ।

পড়ুয়ারা স্কুলে না গেলে পড়তেও পারছে না । ASER (অ্যানুয়াল স্ট্যাটাস অফ এডুকেশন রিপোর্ট) হোক বা ভারত সরকারের NAS (ন্যাশনাল অ্যাচিভমেন্ট সার্ভে)–সবেতেই বলা হচ্ছে শিশুরা ঠিকমতো পড়ছে না । শিশুরা কিছু পড়ছে না এবং বর্তমানে শিক্ষাগ্রহণে বিঘ্নও ঘটছে, সেটা বিশ্বজুড়েই ঘটছে । ভারতেও 322 মিলিয়ন শিশুর পড়াশোনায় বিঘ্ন ঘটছে । তাহলে এর কী প্রভাব পড়তে পারে তা সহজেই অনুমেয় । আবার যে শিশুরা এখনও স্কুলে পা'ই রাখেনি তাদের উপর এর কী প্রভাব পড়বে, একবার ভেবে দেখুন ।

শিশুদের স্কুলে না যাওয়ার এই 20 শতাংশ হার কি শুধু ভারতের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য ? না কি গোটা বিশ্বের ক্ষেত্রে ?

যে কোনও আপৎকালীন পরিস্থিতির পর পড়ুয়াদের স্কুলে না যাওয়ার এটাই গড় হার । অ্যাভারেজ ড্রপআউট রেট । এখনও পর্যন্ত এই নিয়ে কোনও পরিসংখ্যান বা গবেষণা হয়নি । ঠিক কতজন পড়ুয়ার উপর এর প্রভাব পড়বে তা এখনও জানা যায়নি । কারণ এখনও পর্যন্ত আমাদের স্কুল এবং অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র কিছুই খোলেনি । আমরা জানি না, পথশিশু পড়ুয়ারা এখন কোথায় রয়েছে ? হঠাৎ করে যেন সকলে উধাও হয়ে গেছে । আমরা জানি না আমাদের শিক্ষাব্যবস্থার সঙ্গে ঠিক কী হচ্ছে ।

মধ্যবিত্ত পরিবারগুলিতে শিশু পড়ুয়াদের একটা বড় অংশ অনলাইনে পড়াশোনা করছে । এতে কতটা কাজ হচ্ছে ?

শিশুদের সঙ্গে এরকম আগে কখনও হয়নি । ডিসটেন্স মোড তথা এরকম দূরশিক্ষার সঙ্গে শিশুরা আগে পরিচিত ছিল না । তবে ধীরে ধীরে তারা মানিয়ে নিচ্ছে । বিষয়টা সম্বন্ধে জেনে গেছে । তাই এটা একটা আলাদা বিষয় । কয়েকজন শিক্ষক-শিক্ষিকা এমনও আছেন, যাঁদের অনলাইনে ক্লাস নেওয়ার কোনও প্রস্তুতি নেই ।

এখন পরিবেশ এমন যে শিশুরা খুব চাপের মধ্যে আছে । বেশিরভাগ সময় আমরা শিশুদের খোলা জায়গায় সময় কাটাতে দেখতাম । খেলার পাশাপাশি শিখতেও দেখতাম তাদের । কিন্তু যখন তাদের বন্ধু-বান্ধব এমনকী সশরীরে শিক্ষক-শিক্ষিকা ছাড়া, ঘরে আবদ্ধ করে রেখে পড়ানো হচ্ছে–তা মোটেও কোনওভাবে তাদের পক্ষে সহায়ক হচ্ছে না । শিশুরা প্রশ্ন করতে পারছে না । এটা দ্বিমুখী শিক্ষাপদ্ধতি নয় ।

কী বললেন "সেভ দা চিলড্রেন ইন্ডিয়া"-র ডেপুটি ডিরেক্টর অফ এডুকেশন ?

কী মনে হয়, এই চার মাস কি একেবারে নষ্ট হয়েছে?

এটা বলা খুব কঠিন যে কোথাও কোনও পড়াশোনাই হচ্ছে না । কারণ সেরকম কোনও বিশ্লেষণ বা নিরীক্ষণ নেই । তবে এটা নিশ্চিত যে, শিক্ষাগ্রহণে বিঘ্ন অবশ্যই ঘটেছে ।

অনলাইন শিক্ষায় ডিজিটাল বিভাজন অন্যতম গুরুতর বিষয় । গ্রামীণ ভারতে শিক্ষার হাল বর্তমানে কী?

আমাদের বিকল্প মাধ্যম খুঁজে বের করতে হবে । শিক্ষাদানের জন্য বিনামূল্যে বা স্বল্পমূল্যে মাধ্যম অন্বেষণ করতে হবে । শিক্ষাদানের জন্য সেভ দা চিলড্রেন ইন্ডিয়া ভ্রাম্যমাণ গ্রন্থাগার (মোবাইল লাইব্রেরি), কমিউনিটি রেডিয়োর কথা বলে । অভিভাবকদের জন্যও আমাদের ছোটো ছোটো কাজের পরিকল্পনা আছে যা তাঁরা তাঁদের সন্তানদের সঙ্গেই করতে পারেন ।

সুতরাং, শিক্ষাগ্রহণ করা হল কেবলমাত্র একটি দিক । এছাড়াও এই মুহূর্তে শিশুদের জীবনে এমন অনেক দিক আছে যার দিকে দৃষ্টিপাত করা হচ্ছে না । কাজেই স্থায়িত্ব বজায় রাখার পাঠ গ্রহণ করা একটি বড় চ্যালেঞ্জ ।

মিড ডি মিল কর্মসূচির কী অবস্থা?

অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের দেখুন । ওঁরা কিন্তু বাড়ি বাড়ি শিশুদের খাবার বণ্টন করছেন । আমরা যেখানেই তাঁদের সঙ্গে কাজ করেছি আমরা এটা দেখেছি । উদ্যোগ অবশ্যই নেওয়া হচ্ছে । কিন্তু যে খাবার পাঠানো হচ্ছে, তা রান্না করা নয় ।

প্যানডেমিক পরিস্থিতিতে পরীক্ষার আয়োজন করার ব্যাপারে আপনাদের মতামত কী?

স্কুল এবং পরীক্ষাকেন্দ্র থেকে শিশুরা যাতে নিরাপদে বাড়ি ফেরে, সেটাই আমাদের বিবেচ্য । আমরা যদি তাদের সেই নিরাপত্তা এবং স্বাস্থ্যবিধি সংক্রান্ত সুরক্ষা দিতে পারি তাহলে এই বিষয়টি আমরা ভেবে দেখব । আমি জানি না, এতে কীভাবে সামাজিক দূরত্ববিধি মেনে চলা সম্ভব হবে । বিষয়টা মোটেও সহজ নয় । অত্যন্ত কঠিন ।

চিন্তাটা শুধু পরীক্ষা নিয়ে নয়, চিন্তাটা হল সেই মানসিক চাপ এবং উদ্বেগ নিয়ে । এক পড়ুয়া থেকে শুরু করে শিক্ষক-শিক্ষিকাদেরও যার মধ্য দিয়ে যেতে হচ্ছে । আমি মনে করি, যতক্ষণ না ওই সব কেন্দ্রে পরিস্থিতি শিশুদের জন্য নিরাপদ হচ্ছে ততক্ষণ তা এড়িয়ে চলাই ভালো ।

আমাদের স্কুল খোলা উচিত না অনুচিত?

"সেভ দা চিলড্রেন"-এ আমরা শিশুদের নিরাপদে বাড়ি ফেরাকে গুরুত্ব দিচ্ছি । যতক্ষণ না পরিস্থিতি নিরাপদ হচ্ছে এবং প্রতিনিয়ত তা নিয়ে নজরদারি চলছে ততক্ষণ পরীক্ষাকেন্দ্রে শিশুদের পাঠানো আমাদের উচিত নয় । স্কুলগুলিকেও আইসোলেশন কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে তাই আমাদের সেগুলিকে স্যানিটাইজ় করতে হবে । স্কুল খোলার আগে অনেকরকম প্রস্তুতি নিতে হবে যা এখনও বাকি ।

COVID-19 পরবর্তী সময়ে শিক্ষাক্ষেত্রকে পুনরুজ্জীবিত করতে কতটা অর্থ লাগবে ?

UNESCO-র সাম্প্রতিক রিপোর্ট বলছে, অর্থের জোগানে অন্তত 12 শতাংশ ঘাটতি হবে । সুতরাং আমরা ইতিমধ্যেই অত্যন্ত খারাপ অবস্থায় আছি আর কোরোনা ভাইরাস তা আরও খারাপ করে দিচ্ছে । যে পরিমাণ কাজ বাকি পড়ে আছে, যা সত্যিই করা দরকার তা বিপুল । আমি বুঝতে পারছি, মানুষের জীবনযাত্রা এবং স্বাস্থ্যে বিনিয়োগ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ । কিন্তু শিক্ষাক্ষেত্রে যে সংকট চলছে তার মোকাবিলা করার জন্য শিক্ষাতেও লগ্নি করা অত্যন্ত প্রয়োজন ।

কোরোনা পরবর্তী সময়ে শিশুদের শিক্ষার অধিকার নিয়ে ভয়াবহ সংকট সম্পর্কে সতর্ক করেছে "সেভ দা চিলড্রেন" নামে ব্রিটেনের একটি মানবাধিকার সংগঠন । "সেভ আওয়ার এডুকেশন" শীর্ষক রিপোর্টে তারা জানিয়েছে, COVID—19 বিশ্বজুড়ে 1.6 বিলিয়ন পড়ুয়ার (যা পড়ুয়াদের মোট সংখ্যার অন্তত 91 শতাংশ) শিক্ষায় বিঘ্ন ঘটিয়েছে । সমীক্ষা অনুযায়ী, পড়ুয়াদের একটি বড় অংশ COVID—19- এর ফলে প্রথাগত শিক্ষাব্যবস্থার বাইরে চলে যাবে । তারা আর ক্লাসে ফিরবে না । এনিয়ে "সেভ দা চিলড্রেন"-এর ডেপুটি ডিরেক্টর অফ এডুকেশন কমল গৌরের সঙ্গে কথা বলেছিলেন ETV ভারতের কৃষ্ণানন্দ ত্রিপাঠী ।

এটি একটি বিশ্বব্যাপী সমীক্ষা । ভারত এবং বিশ্বে কোরোনার প্রভাব কী হবে?

UNESCO বলছে, COVID—19-এর ফলে প্রি—প্রাইমারি থেকে শুরু করে টার্শিয়ারি স্তর পর্যন্ত 322 মিলিন পড়ুয়ার উপর প্রভাব পড়তে পারে । তাদের শিক্ষাগ্রহণে বিঘ্ন ঘটতে পারে । অনলাইন মাধ্যমে হয়তো তারা পড়াশোনা করছে কিন্তু কেউই জানে না বাস্তবে তারা কতটা শিখতে পারছে ।

পড়ুয়ারা স্কুলে না গেলে পড়তেও পারছে না । ASER (অ্যানুয়াল স্ট্যাটাস অফ এডুকেশন রিপোর্ট) হোক বা ভারত সরকারের NAS (ন্যাশনাল অ্যাচিভমেন্ট সার্ভে)–সবেতেই বলা হচ্ছে শিশুরা ঠিকমতো পড়ছে না । শিশুরা কিছু পড়ছে না এবং বর্তমানে শিক্ষাগ্রহণে বিঘ্নও ঘটছে, সেটা বিশ্বজুড়েই ঘটছে । ভারতেও 322 মিলিয়ন শিশুর পড়াশোনায় বিঘ্ন ঘটছে । তাহলে এর কী প্রভাব পড়তে পারে তা সহজেই অনুমেয় । আবার যে শিশুরা এখনও স্কুলে পা'ই রাখেনি তাদের উপর এর কী প্রভাব পড়বে, একবার ভেবে দেখুন ।

শিশুদের স্কুলে না যাওয়ার এই 20 শতাংশ হার কি শুধু ভারতের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য ? না কি গোটা বিশ্বের ক্ষেত্রে ?

যে কোনও আপৎকালীন পরিস্থিতির পর পড়ুয়াদের স্কুলে না যাওয়ার এটাই গড় হার । অ্যাভারেজ ড্রপআউট রেট । এখনও পর্যন্ত এই নিয়ে কোনও পরিসংখ্যান বা গবেষণা হয়নি । ঠিক কতজন পড়ুয়ার উপর এর প্রভাব পড়বে তা এখনও জানা যায়নি । কারণ এখনও পর্যন্ত আমাদের স্কুল এবং অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র কিছুই খোলেনি । আমরা জানি না, পথশিশু পড়ুয়ারা এখন কোথায় রয়েছে ? হঠাৎ করে যেন সকলে উধাও হয়ে গেছে । আমরা জানি না আমাদের শিক্ষাব্যবস্থার সঙ্গে ঠিক কী হচ্ছে ।

মধ্যবিত্ত পরিবারগুলিতে শিশু পড়ুয়াদের একটা বড় অংশ অনলাইনে পড়াশোনা করছে । এতে কতটা কাজ হচ্ছে ?

শিশুদের সঙ্গে এরকম আগে কখনও হয়নি । ডিসটেন্স মোড তথা এরকম দূরশিক্ষার সঙ্গে শিশুরা আগে পরিচিত ছিল না । তবে ধীরে ধীরে তারা মানিয়ে নিচ্ছে । বিষয়টা সম্বন্ধে জেনে গেছে । তাই এটা একটা আলাদা বিষয় । কয়েকজন শিক্ষক-শিক্ষিকা এমনও আছেন, যাঁদের অনলাইনে ক্লাস নেওয়ার কোনও প্রস্তুতি নেই ।

এখন পরিবেশ এমন যে শিশুরা খুব চাপের মধ্যে আছে । বেশিরভাগ সময় আমরা শিশুদের খোলা জায়গায় সময় কাটাতে দেখতাম । খেলার পাশাপাশি শিখতেও দেখতাম তাদের । কিন্তু যখন তাদের বন্ধু-বান্ধব এমনকী সশরীরে শিক্ষক-শিক্ষিকা ছাড়া, ঘরে আবদ্ধ করে রেখে পড়ানো হচ্ছে–তা মোটেও কোনওভাবে তাদের পক্ষে সহায়ক হচ্ছে না । শিশুরা প্রশ্ন করতে পারছে না । এটা দ্বিমুখী শিক্ষাপদ্ধতি নয় ।

কী বললেন "সেভ দা চিলড্রেন ইন্ডিয়া"-র ডেপুটি ডিরেক্টর অফ এডুকেশন ?

কী মনে হয়, এই চার মাস কি একেবারে নষ্ট হয়েছে?

এটা বলা খুব কঠিন যে কোথাও কোনও পড়াশোনাই হচ্ছে না । কারণ সেরকম কোনও বিশ্লেষণ বা নিরীক্ষণ নেই । তবে এটা নিশ্চিত যে, শিক্ষাগ্রহণে বিঘ্ন অবশ্যই ঘটেছে ।

অনলাইন শিক্ষায় ডিজিটাল বিভাজন অন্যতম গুরুতর বিষয় । গ্রামীণ ভারতে শিক্ষার হাল বর্তমানে কী?

আমাদের বিকল্প মাধ্যম খুঁজে বের করতে হবে । শিক্ষাদানের জন্য বিনামূল্যে বা স্বল্পমূল্যে মাধ্যম অন্বেষণ করতে হবে । শিক্ষাদানের জন্য সেভ দা চিলড্রেন ইন্ডিয়া ভ্রাম্যমাণ গ্রন্থাগার (মোবাইল লাইব্রেরি), কমিউনিটি রেডিয়োর কথা বলে । অভিভাবকদের জন্যও আমাদের ছোটো ছোটো কাজের পরিকল্পনা আছে যা তাঁরা তাঁদের সন্তানদের সঙ্গেই করতে পারেন ।

সুতরাং, শিক্ষাগ্রহণ করা হল কেবলমাত্র একটি দিক । এছাড়াও এই মুহূর্তে শিশুদের জীবনে এমন অনেক দিক আছে যার দিকে দৃষ্টিপাত করা হচ্ছে না । কাজেই স্থায়িত্ব বজায় রাখার পাঠ গ্রহণ করা একটি বড় চ্যালেঞ্জ ।

মিড ডি মিল কর্মসূচির কী অবস্থা?

অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের দেখুন । ওঁরা কিন্তু বাড়ি বাড়ি শিশুদের খাবার বণ্টন করছেন । আমরা যেখানেই তাঁদের সঙ্গে কাজ করেছি আমরা এটা দেখেছি । উদ্যোগ অবশ্যই নেওয়া হচ্ছে । কিন্তু যে খাবার পাঠানো হচ্ছে, তা রান্না করা নয় ।

প্যানডেমিক পরিস্থিতিতে পরীক্ষার আয়োজন করার ব্যাপারে আপনাদের মতামত কী?

স্কুল এবং পরীক্ষাকেন্দ্র থেকে শিশুরা যাতে নিরাপদে বাড়ি ফেরে, সেটাই আমাদের বিবেচ্য । আমরা যদি তাদের সেই নিরাপত্তা এবং স্বাস্থ্যবিধি সংক্রান্ত সুরক্ষা দিতে পারি তাহলে এই বিষয়টি আমরা ভেবে দেখব । আমি জানি না, এতে কীভাবে সামাজিক দূরত্ববিধি মেনে চলা সম্ভব হবে । বিষয়টা মোটেও সহজ নয় । অত্যন্ত কঠিন ।

চিন্তাটা শুধু পরীক্ষা নিয়ে নয়, চিন্তাটা হল সেই মানসিক চাপ এবং উদ্বেগ নিয়ে । এক পড়ুয়া থেকে শুরু করে শিক্ষক-শিক্ষিকাদেরও যার মধ্য দিয়ে যেতে হচ্ছে । আমি মনে করি, যতক্ষণ না ওই সব কেন্দ্রে পরিস্থিতি শিশুদের জন্য নিরাপদ হচ্ছে ততক্ষণ তা এড়িয়ে চলাই ভালো ।

আমাদের স্কুল খোলা উচিত না অনুচিত?

"সেভ দা চিলড্রেন"-এ আমরা শিশুদের নিরাপদে বাড়ি ফেরাকে গুরুত্ব দিচ্ছি । যতক্ষণ না পরিস্থিতি নিরাপদ হচ্ছে এবং প্রতিনিয়ত তা নিয়ে নজরদারি চলছে ততক্ষণ পরীক্ষাকেন্দ্রে শিশুদের পাঠানো আমাদের উচিত নয় । স্কুলগুলিকেও আইসোলেশন কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে তাই আমাদের সেগুলিকে স্যানিটাইজ় করতে হবে । স্কুল খোলার আগে অনেকরকম প্রস্তুতি নিতে হবে যা এখনও বাকি ।

COVID-19 পরবর্তী সময়ে শিক্ষাক্ষেত্রকে পুনরুজ্জীবিত করতে কতটা অর্থ লাগবে ?

UNESCO-র সাম্প্রতিক রিপোর্ট বলছে, অর্থের জোগানে অন্তত 12 শতাংশ ঘাটতি হবে । সুতরাং আমরা ইতিমধ্যেই অত্যন্ত খারাপ অবস্থায় আছি আর কোরোনা ভাইরাস তা আরও খারাপ করে দিচ্ছে । যে পরিমাণ কাজ বাকি পড়ে আছে, যা সত্যিই করা দরকার তা বিপুল । আমি বুঝতে পারছি, মানুষের জীবনযাত্রা এবং স্বাস্থ্যে বিনিয়োগ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ । কিন্তু শিক্ষাক্ষেত্রে যে সংকট চলছে তার মোকাবিলা করার জন্য শিক্ষাতেও লগ্নি করা অত্যন্ত প্রয়োজন ।

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.