ETV Bharat / bharat

আইনের ছাত্র থেকে মোদি মন্ত্রিসভার সেকেন্ড ইন কমান্ড : এক বর্ণময় সফর - মারা গেলেন অরুণ জেটলি

অসুস্থতার জন্য বর্তমান মন্ত্রিসভা থেকে নিজেকে সরিয়েও নিয়েছিলেন ৷ তীব্র মধুমেহ রোগ আক্রান্ত জেটলির একাধিক শারীরিক সমস্যা তৈরি হচ্ছিল ৷ গত বছরই কিডনি প্রতিস্থাপন করা হয়েছিল ৷ সঙ্গে ছিল কর্কট রোগও ৷ সবে মিলে ক্রমেই জটিল হচ্ছিল পরিস্থিতি ৷ বেশ কয়েকবার হাসপাতালেও ভরতিও হন ৷ অবশেষে 66 বছরে থমকে গেল এই বর্ণময় চরিত্রটি ৷

অরুণ জেটলি
author img

By

Published : Aug 24, 2019, 12:57 PM IST

Updated : Aug 24, 2019, 1:04 PM IST

দিল্লি, 24 অগাস্ট : দেশের অর্থনীতিকে চাঙ্গা করার দাওয়াই দিয়েছিলেন তিনি ৷ তাঁর ওষুধেই বেসরকারি লগ্নির পথ প্রশস্ত হয়েছিল দেশে ৷ অরুণ জেটলির সেই পদক্ষেপ নিয়ে তর্ক-বিতর্ক, পক্ষে-বিপক্ষে সমালোচনা কম হয়নি ৷ প্রয়াত হলেন ভারতের সংসদীয় রাজনীতির অতি বর্ণময় সেই চরিত্র, অরুণ জেটলি ৷ আইনের ছাত্র থেকে মোদি মন্ত্রিসভায় 'সেকেন্ড ইন ম্যান' হয়ে ওঠা অরুণ জেটলি বেশ কিছুদিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন ৷

অসুস্থতার জন্য বর্তমান মন্ত্রিসভা থেকে নিজেকে সরিয়েও নিয়েছিলেন ৷ তীব্র মধুমেহ রোগ আক্রান্ত জেটলির একাধিক শারীরিক সমস্যা তৈরি হচ্ছিল ৷ গত বছরই কিডনি প্রতিস্থাপন করা হয়েছিল ৷ সঙ্গে ছিল কর্কট রোগও ৷ সবে মিলে ক্রমেই জটিল হচ্ছিল পরিস্থিতি ৷ বেশ কয়েকবার হাসপাতালেও ভরতিও হন ৷ অবশেষে 66 বছরে থমকে গেল এই বর্ণময় চরিত্রটি ৷

প্রথম জীবন :
1952 সালের 28 ডিসেম্বর দিল্লিতে জন্মগ্রহণ করেন অরুণ জেটলি ৷ বাবা মহারাজ কিষেণ সিং ছিলেন আইনজীবী ৷ তবে, ছেলের স্বপ্ন ছিল চাটার্ড অ্যাকাউনটেন্ট হওয়া ৷ 1973 সালে দিল্লির শ্রীরাম কলেজ থেকে কমার্সে স্নাতক হন ৷ কলেজ জীবন থেকেই সুবক্তা হিসেবে পরিচিতি গড়ে ওঠে জেটলির ৷ 1977 সালে দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইন পাশ করেন ৷

রাজনীতিতে পদার্পণ :
কলেজ জীবনেই রাজনীতিতে হাতেখড়ি জেটলির ৷ 1974 সালে দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদের সভাপতি নির্বাচিত হন ৷ সেই সময় বিশ্ববিদ্যালয়ে একচ্ছত্র আধিপত্য ছিল কংগ্রেসের ৷ তাদের সরিয়ে ABVP প্রার্থী হিসেবে লড়েন জেটলি ৷ 1975 সালের 26 জুন দেশে জরুরি অবস্থা ঘোষিত হয় ৷ এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদে সামিল হন জেটলি ৷ সেদিনই তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয় ৷ তিহার জেলে 19 মাস বন্দী ছিলেন ৷

1976 সালে লোকতান্ত্রিক যুব মোর্চার জাতীয় আহ্বায়ক হন জেটলি ৷ জনতা দলের প্রার্থীদের হয়ে প্রচার করেন তিনি ৷ 1980 সালে তৈরি হয় BJP ৷ তখন থেকেই BJP-র সর্বক্ষণের সঙ্গী হয়ে ওঠেন ৷ এর সঙ্গেই চলতে থাকে জেটলির পেশাদারি জীবন ৷ 1991 সালে জেটলি BJP-র ন্যাশনাল এক্সজ়িকিউটিভ কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত হন ৷ 1999 সালে লোকসভা নির্বাচনের সময় দলের মুখপাত্র হিসেবের দায়িত্ব সামলান ৷ সে বছরই তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রকের রাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব পান ৷ 2002 সালে গুজরাত থেকে রাজ্যসভার সাংসদ হিসেবে নির্বাচিত হন ৷ সেই বছরই অটলবিহারী বাজপেয়ীর মন্ত্রিসভায় আইন, বিচার বিভাগ ও কম্পানি অ্যাফেয়ার্স মন্ত্রী হন ৷ এর সঙ্গে 2001 সালে যুক্ত হয় জাহাজ মন্ত্রকের দায়িত্ব ৷ ইতিমধ্যে 2004 সালে ক্ষমতাচ্যুত হয় BJP ৷ তবে, জাতীয় রাজনীতিতে জেটলির প্রাসঙ্গিকতা আরও বাড়তে থাকে ৷ দলের সাধারণ সম্পাদক হন তিনি ৷ 2006 সালে পুনরায় রাজ্যসভায় নির্বাচিত হন ৷ তিন বছর পর সংসদের উচ্চকক্ষে তিনি BJP-র দলনেতার ভূমিকায় অবতীর্ণ হন ৷ দলের এক ব্যক্তি, এক নীতি অনুযায়ী BJP-র সাধারণ সম্পাদক থেকে ইস্তফা দেন জেটলি ৷ সে বছরই আইনজীবী হিসাবে প্র্যাকটিস বন্ধ করে দেন তিনি ৷ 2012 সাল গুজরাত থেকে ফের রাজ্যসভার সাংসদ হন ৷

নরেন্দ্র মোদি ক্যাবিনেটে ঠাঁই :
2014 সালে লোকসভা নির্বাচনে দাঁড়ালেও হেরে যান জেটলি ৷ তা সত্ত্বেও অর্থমন্ত্রকের পূর্ণমন্ত্রীর দায়িত্ব পান ৷ প্রথম থেকেই প্রধানমন্ত্রীর আস্থাভাজন বন্ধনীতে ছিলেন জেটলি ৷ বাড়তি দায়িত্ব হিসেবে প্রতিরক্ষা ও কর্পোরেট বিষয়ক মন্ত্রকের দায়িত্বও সামলান ৷ সামলেছেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রকের দায়িত্ব ৷ রাজ্যসভায় দলনেতা হন ৷ পরে প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের দায়িত্ব ছেড়ে দেন ৷ মোদি জমানায় তাঁর সবথেকে বড় কৃতিত্ব দেশে এক কর ব্যবস্থা তথা GST চালু করা ৷ কিন্তু, সফল রাজনৈতিক জীবনে বাধা হয়ে দাঁড়ায় অসুস্থতা ৷ 2018 সালে কিডনি প্রতিস্থাপন হয় ৷ এরপর ক্রমশ শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে ৷ চিকিৎসার জন্য অ্যামেরিকায় থাকায় 2019 সালে মোদি সরকারের শেষ বাজেট (অন্তবর্তীকালীন বাজেট বা ভোট অন অ্যাকাউন্ট) পেশ করতে পারেননি ৷ শারীরিক অসুস্থতার কারণে মন্ত্রিত্ব থেকে অব্যাহতি চান জেটলি ৷ দ্বিতীয় মোদি সরকারের জমানায় নিজে থেকেই সরে দাঁড়ান ৷ বর্তমানে উত্তরপ্রদেশ থেকে তিনি রাজ্যসভায় নির্বাচিত সাংসদ ৷

রাজনীতির বাইরে অন্য জগৎ :
1990 সালে অ্যাডিশনাল সলিসিটর জেনেরাল (ASG) নিযুক্ত হন ৷ বফর্স মামলায় ASG ছিলেন জেটলিই ৷ 1998 সালে রাষ্ট্রসংঘের সাধারণ সভায় ভারতীয় প্রতিনিধিদলের সদস্য ছিলেন ৷ সেখানে অর্থ পাচার ও মাদক সংক্রান্ত আইনের ঘোষণাপত্র গৃহীত হয় ৷ 1999 সালে দিল্লি ডিস্ট্রিক্ট ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি হন ৷ 10 বছর পর ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের (BCCI) সহ-সভাপতি হন ৷

দিল্লি, 24 অগাস্ট : দেশের অর্থনীতিকে চাঙ্গা করার দাওয়াই দিয়েছিলেন তিনি ৷ তাঁর ওষুধেই বেসরকারি লগ্নির পথ প্রশস্ত হয়েছিল দেশে ৷ অরুণ জেটলির সেই পদক্ষেপ নিয়ে তর্ক-বিতর্ক, পক্ষে-বিপক্ষে সমালোচনা কম হয়নি ৷ প্রয়াত হলেন ভারতের সংসদীয় রাজনীতির অতি বর্ণময় সেই চরিত্র, অরুণ জেটলি ৷ আইনের ছাত্র থেকে মোদি মন্ত্রিসভায় 'সেকেন্ড ইন ম্যান' হয়ে ওঠা অরুণ জেটলি বেশ কিছুদিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন ৷

অসুস্থতার জন্য বর্তমান মন্ত্রিসভা থেকে নিজেকে সরিয়েও নিয়েছিলেন ৷ তীব্র মধুমেহ রোগ আক্রান্ত জেটলির একাধিক শারীরিক সমস্যা তৈরি হচ্ছিল ৷ গত বছরই কিডনি প্রতিস্থাপন করা হয়েছিল ৷ সঙ্গে ছিল কর্কট রোগও ৷ সবে মিলে ক্রমেই জটিল হচ্ছিল পরিস্থিতি ৷ বেশ কয়েকবার হাসপাতালেও ভরতিও হন ৷ অবশেষে 66 বছরে থমকে গেল এই বর্ণময় চরিত্রটি ৷

প্রথম জীবন :
1952 সালের 28 ডিসেম্বর দিল্লিতে জন্মগ্রহণ করেন অরুণ জেটলি ৷ বাবা মহারাজ কিষেণ সিং ছিলেন আইনজীবী ৷ তবে, ছেলের স্বপ্ন ছিল চাটার্ড অ্যাকাউনটেন্ট হওয়া ৷ 1973 সালে দিল্লির শ্রীরাম কলেজ থেকে কমার্সে স্নাতক হন ৷ কলেজ জীবন থেকেই সুবক্তা হিসেবে পরিচিতি গড়ে ওঠে জেটলির ৷ 1977 সালে দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইন পাশ করেন ৷

রাজনীতিতে পদার্পণ :
কলেজ জীবনেই রাজনীতিতে হাতেখড়ি জেটলির ৷ 1974 সালে দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদের সভাপতি নির্বাচিত হন ৷ সেই সময় বিশ্ববিদ্যালয়ে একচ্ছত্র আধিপত্য ছিল কংগ্রেসের ৷ তাদের সরিয়ে ABVP প্রার্থী হিসেবে লড়েন জেটলি ৷ 1975 সালের 26 জুন দেশে জরুরি অবস্থা ঘোষিত হয় ৷ এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদে সামিল হন জেটলি ৷ সেদিনই তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয় ৷ তিহার জেলে 19 মাস বন্দী ছিলেন ৷

1976 সালে লোকতান্ত্রিক যুব মোর্চার জাতীয় আহ্বায়ক হন জেটলি ৷ জনতা দলের প্রার্থীদের হয়ে প্রচার করেন তিনি ৷ 1980 সালে তৈরি হয় BJP ৷ তখন থেকেই BJP-র সর্বক্ষণের সঙ্গী হয়ে ওঠেন ৷ এর সঙ্গেই চলতে থাকে জেটলির পেশাদারি জীবন ৷ 1991 সালে জেটলি BJP-র ন্যাশনাল এক্সজ়িকিউটিভ কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত হন ৷ 1999 সালে লোকসভা নির্বাচনের সময় দলের মুখপাত্র হিসেবের দায়িত্ব সামলান ৷ সে বছরই তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রকের রাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব পান ৷ 2002 সালে গুজরাত থেকে রাজ্যসভার সাংসদ হিসেবে নির্বাচিত হন ৷ সেই বছরই অটলবিহারী বাজপেয়ীর মন্ত্রিসভায় আইন, বিচার বিভাগ ও কম্পানি অ্যাফেয়ার্স মন্ত্রী হন ৷ এর সঙ্গে 2001 সালে যুক্ত হয় জাহাজ মন্ত্রকের দায়িত্ব ৷ ইতিমধ্যে 2004 সালে ক্ষমতাচ্যুত হয় BJP ৷ তবে, জাতীয় রাজনীতিতে জেটলির প্রাসঙ্গিকতা আরও বাড়তে থাকে ৷ দলের সাধারণ সম্পাদক হন তিনি ৷ 2006 সালে পুনরায় রাজ্যসভায় নির্বাচিত হন ৷ তিন বছর পর সংসদের উচ্চকক্ষে তিনি BJP-র দলনেতার ভূমিকায় অবতীর্ণ হন ৷ দলের এক ব্যক্তি, এক নীতি অনুযায়ী BJP-র সাধারণ সম্পাদক থেকে ইস্তফা দেন জেটলি ৷ সে বছরই আইনজীবী হিসাবে প্র্যাকটিস বন্ধ করে দেন তিনি ৷ 2012 সাল গুজরাত থেকে ফের রাজ্যসভার সাংসদ হন ৷

নরেন্দ্র মোদি ক্যাবিনেটে ঠাঁই :
2014 সালে লোকসভা নির্বাচনে দাঁড়ালেও হেরে যান জেটলি ৷ তা সত্ত্বেও অর্থমন্ত্রকের পূর্ণমন্ত্রীর দায়িত্ব পান ৷ প্রথম থেকেই প্রধানমন্ত্রীর আস্থাভাজন বন্ধনীতে ছিলেন জেটলি ৷ বাড়তি দায়িত্ব হিসেবে প্রতিরক্ষা ও কর্পোরেট বিষয়ক মন্ত্রকের দায়িত্বও সামলান ৷ সামলেছেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রকের দায়িত্ব ৷ রাজ্যসভায় দলনেতা হন ৷ পরে প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের দায়িত্ব ছেড়ে দেন ৷ মোদি জমানায় তাঁর সবথেকে বড় কৃতিত্ব দেশে এক কর ব্যবস্থা তথা GST চালু করা ৷ কিন্তু, সফল রাজনৈতিক জীবনে বাধা হয়ে দাঁড়ায় অসুস্থতা ৷ 2018 সালে কিডনি প্রতিস্থাপন হয় ৷ এরপর ক্রমশ শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে ৷ চিকিৎসার জন্য অ্যামেরিকায় থাকায় 2019 সালে মোদি সরকারের শেষ বাজেট (অন্তবর্তীকালীন বাজেট বা ভোট অন অ্যাকাউন্ট) পেশ করতে পারেননি ৷ শারীরিক অসুস্থতার কারণে মন্ত্রিত্ব থেকে অব্যাহতি চান জেটলি ৷ দ্বিতীয় মোদি সরকারের জমানায় নিজে থেকেই সরে দাঁড়ান ৷ বর্তমানে উত্তরপ্রদেশ থেকে তিনি রাজ্যসভায় নির্বাচিত সাংসদ ৷

রাজনীতির বাইরে অন্য জগৎ :
1990 সালে অ্যাডিশনাল সলিসিটর জেনেরাল (ASG) নিযুক্ত হন ৷ বফর্স মামলায় ASG ছিলেন জেটলিই ৷ 1998 সালে রাষ্ট্রসংঘের সাধারণ সভায় ভারতীয় প্রতিনিধিদলের সদস্য ছিলেন ৷ সেখানে অর্থ পাচার ও মাদক সংক্রান্ত আইনের ঘোষণাপত্র গৃহীত হয় ৷ 1999 সালে দিল্লি ডিস্ট্রিক্ট ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি হন ৷ 10 বছর পর ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের (BCCI) সহ-সভাপতি হন ৷

Mumbai, Aug 22 (ANI): B-town celebrated 8th anniversary of Nikkhil Advani's production house 'Emmay Entertainment' in Mumbai. Actor John Abraham, filmmaker Divya Khosla Kumar and actor Siddhant Chaturvedi were seen in the event. Actor Riteish Deshmukh reached with Genelia Deshmukh. Filmmaker Karan Johar, Athiya Shetty, Chitrangada Singh and Rakul Preet Singh also joined celebration. Actors Arjun Kapoor and Sonakshi Sinha also marked their presence for the event.
Last Updated : Aug 24, 2019, 1:04 PM IST
ETV Bharat Logo

Copyright © 2025 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.