চেন্নাই, 7 অক্টোবর : প্রায় 1 মাস আগের ঘটনা । শুভশ্রী রবি (23) চেন্নাইয়ের একটি তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থায় কাজ করতেন । 12 সেপ্টেম্বর তিনি স্কুটি চালিয়ে যখন অফিসে যাচ্ছিলেন তখন একটি হোর্ডিং ভেঙে পড়ে তাঁর উপর । হোর্ডিংয়ের আঘাতে স্কুটি থেকে পড়ে যান শুভশ্রী । পেছন থেকে একটি ট্রাক এসে তাঁকে চাপা দিয়ে চলে যায় । গুরতর জখম অবস্থায় তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় । সেখানে চিকিৎসকরা শুভশ্রীকে মৃত বলে ঘোষণা করেন ।
যে হোর্ডিংটি ভেঙে পড়েছিল সেটি ছিল তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী ই পালানিস্বামীর একটি লাইফ-সাইজ় কাটআউট । রাস্তার ধারে অবৈধভাবে হোর্ডিংটি লাগিয়েছিলেন AIADMK-র সদস্য জয়াগোপাল । ঘটনার প্রায় তিন সপ্তাহ পর পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে । কিন্তু দলের অন্যতম বর্ষীয়ান নেতা সি পুন্নাইয়া জয়াগোপালকে এই ঘটনায় দোষী মানতে রাজি নন । গতকাল তিনি স্থানীয় এক TV চ্যানেলে বলেন, "ওই ঘটনায় আমাদের দলের কর্মীর কোনও দোষ নেই । যদি কারও দোষ থাকে তবে সেটা হল বাতাস । ঘটনার সময় এলাকায় দমকা বাতাস দিচ্ছিল । তার জেরেই হোর্ডিংটি ভেঙে পড়ে । যদি কারও বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ জানাতেই হয়, তবে বাতাসের বিরুদ্ধেই জানানো উচিত । " যদিও রাস্তার ধারে অবৈধভাবে হোর্ডিং কেন লাগানো হয়েছিল, তা নিয়ে ওই বর্ষীয়ান নেতা কোনও মন্তব্য করেননি ।
শুভশ্রীর মৃত্যুর পর রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় রাস্তার ধারে অবৈধভাবে লাগানো রাজনৈতিক দলগুলির হোর্ডিংয়ের বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ছড়িয়েছেন । বিষয়টি নিয়ে মাদ্রাজ় হাইকোর্টও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে । অবৈধভাবে হোর্ডিং লাগানো বন্ধ করতে রাজ্য সরকারকে অবিলম্বে কড়া পদক্ষেপ করতে বলেছে হাইকোর্ট । হাইকোর্ট প্রশ্ন করেছে, "আর কত রক্তপাতের পর রাজ্য সরকার নড়েচড়ে বসবে ?"
2017 সালেও রাস্তার ধারে অবৈধভাবে লাগানো হোর্ডিংয়ের সঙ্গে বাইকের ধাক্কায় এক তথ্যপ্রযুক্তি কর্মীর মৃত্যু হয় । তিনি অ্যামেরিকায় চাকরি করতেন । বিয়ে করার জন্য দেশে ফিরেছিলেন । সেই সময় দুর্ঘটনায় তাঁর মৃত্যু হয় । সেই হোর্ডিংটিও লাগিয়েছিল AIADMK-র এক কর্মী ।
তবে এত কিছুর পরেও পরিস্থিতি পালটায়নি । চলতি মাসেই চেন্নাইয়ের অদূরে মামাল্লাপূরমে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে চিনের প্রেসিডেন্ট জ়ি জিনপিং-এর বৈঠক হওয়ার কথা । বৈঠক উপলক্ষে ইতিমধ্যে 30টি বড় বড় হোর্ডিং লাগানো হয়েছে রাস্তার দু'ধারে ।