দিল্লি, 26 মার্চ : কোরোনার জেরে সংশোধনাগারের বন্দীদের প্যারোলে ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট ৷ সেই নির্দেশ অনুযায়ী একে একে বিভিন্ন রাজ্যের তরফে বন্দীদের প্যারোলে ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া শুরু হয়েছে ৷ মহারাষ্ট্র, রাজস্থান, পঞ্জাব ও দিল্লি প্রশাসন ঘোষণা করেছে, বন্দীদের প্যারোলে ছাড়া হবে ৷ আর এখানেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, কয়েক হাজার বন্দীকে প্যারোলে ছাড়া হলে লকডাউন পরবর্তী সময়ে পরিস্থিতি কোন দিকে যাবে?
কোরোনার বর্তমান পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে সংশোধনাগারগুলিতে ভিড় কমানোর নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট ৷ এর জন্য প্রত্যেক রাজ্যকে প্যানেল গঠন করে সাত বছরের বেশি বন্দীদের প্যারোলে মুক্তি দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ৷ রাজস্থান সরকারের তরফে আজ ঘোষণা করা হয়, প্রায় এক হাজার 300 বন্দীকে প্যারোলে মু্ক্তি দেওয়া হবে ৷ এদের মধ্যে এক হাজার 200 বিচারাধীন বন্দী ও 100-র বেশি সাজাপ্রাপ্ত ৷ পঞ্জাব সরকারের পক্ষ থেকেও প্রায় ছ’হাজার বন্দী মুক্তির ঘোষণা করা হয়েছে ৷
মহারাষ্ট্র সরকার ইতিমধ্যে পাঁচ হাজারের বেশি বন্দীকে প্যারোলে মুক্তি দেওয়ার ঘোষণা করেছে ৷ দেশের সবথেকে বড় সংশোধনাগার হিসেবে ধরা হয় তিহাড়কে ৷ শুধুমাত্র তিহাড় থেকেই তিন হাজার বন্দীকে মুক্তি দেওয়ার কথা ঘোষণা করা হয়েছে ৷ প্যারোলে মুক্তি দেওয়া হবে দেড় হাজার বন্দীকে ৷ একই সংখ্যক বিচারাধীন বন্দীকে অন্তর্বর্তীকালীন জামিনে মুক্তি দেওয়া হবে ৷ ছ’সপ্তাহের জন্য তাদের প্যারোলে মুক্তি দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে পাঞ্জাব প্রশাসন ৷
বন্দী মুক্তির বিষয়টি খুব একটা সহজ হবে না বলে মনে করা হচ্ছে ৷ কারণ প্রত্যেক রাজ্যের সংশোধনাগারগুলিতে ভিন রাজ্যের বাসিন্দারাও আছে ৷ লকডাউনের জেরে পরিবহণ সুবিধা বন্ধ রয়েছে ৷ ফলে অন্য জেলার বা রাজ্যের বন্দীরা মুক্তি পেলে কীভাবে বাড়ি ফিরবেন তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে ৷ ভয়ঙ্কর অপরাধে সাজাপ্রাপ্ত বা বিচারাধীন বন্দীদের মুক্তি দেওয়া হবে না ৷ এই নিয়ম বিদেশি বন্দীদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য বলে জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট ৷
এখন প্রশ্ন, কয়েক হাজার অপরাধীকে মুক্তি দিলে সমাজে তার কী প্রভাব পড়বে? অপরাধের সংখ্যা ফের বেড়ে যাবে না তো? লকডাউন যতদিন চলবে, ততদিন বাড়ির বাইরে কেউ বের হতে পারবে না ৷ কিন্তু লকডাউন পরবর্তী সময়ে কী হবে? প্যারোলে মুক্তি পাওয়া হাজার হাজার বন্দীকে কী ফের সংশোধনাগারে ফেরানো সম্ভব হবে? প্রশ্ন-আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে ৷