ETV Bharat / bharat

রাম রাজ্যে কেউ বহিষ্কার হবেন না, আশ্বাস আদবানির - রাম মন্দির

আগামীকাল রাম মন্দিরের ভূমিপুজো । পূরণ হতে চলেছে লালকৃষ্ণ আদবানির স্বপ্ন । আজ এই নিয়েই ভার্চুয়ালি বক্তব্য রাখেন বরিষ্ঠ এই BJP নেতা।

োোো
আদবানি
author img

By

Published : Aug 4, 2020, 10:31 PM IST

Updated : Aug 5, 2020, 2:44 AM IST

দিল্লি, 4 অগাস্ট : স্বপ্নপূরণের সামনে BJP-র লৌহপুরুষ । 1990 সালে তাঁর সেই রথযাত্রার যেন স্বার্থক পরিসমাপ্তি হতে চলেছে আগামীকাল । বুধবার । বেলা 12টা 15-তে । কিন্তু তিনি থাকতে পারছেন না । আজ তাঁর লৌহ পৌরষত্বে যেন কোথাও একটা মরচে পড়ে গিয়েছে । রাম মন্দিরের ঐতিহাসিক ভিত্তি প্রস্তর স্থাপনের অনুষ্ঠানে থাকতে পারছেন না 92 বছরের বৃদ্ধ । কিন্তু তাঁর 15 ঘণ্টা আগেই স্বপ্নপূরণের কথা লালকৃষ্ণ আদবানির মুখে । বললেন, "প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি রাম মন্দিরের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করবেন । শুধু আমার কাছে নয়, প্রত্যেক ভারতবাসীর কাছে আবেগ ও ঐতিহাসিক দিন । স্বপ্নের রাম রাজ্য বাস্তব রূপ পাচ্ছে ।"

1990-এ তাঁর রথযাত্রা ঘিরেই রক্ত ঝড়েছিল । কর সেবকদের সেই মৃত্যু যেন গেরুয়া শিবিরের ইচ্ছাকে বহুগুণ বাড়িয়েছিল । 1992-এর 6 ডিসেম্বর লালকৃষ্ণ আদবানি, মুরলি মনোহর জোশিদের নেতৃত্বে হাজার কর সেবক ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন বাবরি মসজিদে । ইতিহাসের এক করুণ অধ্যায় লেখা হয়েছিল সেদিন । সরযূ নদী দিয়ে জল অনেক দূর গড়িয়েছে । শীর্ষ আদালতের হস্তক্ষেপে অবশেষে রাম মন্দির গড়ার স্বীকৃতি মিলেছে । প্রায় 30 বছর আগের যে উত্তেজনা আদবানিরা দেখিয়েছিলেন সেটাই যেন বাস্তব রূপ পাচ্ছে । কিন্তু কালের নিয়মে আজ দলে কার্যত অপাংক্তেয় হয়ে গিয়েছেন প্রাক্তন উপ প্রধানমন্ত্রী ।

92 বছরের মানুষটাকে আজকের দিনে আমন্ত্রণ জানানো হবে কি না তা নিয়েও চলেছিল চাপানউতোর । একদিকে মোদি-অমিত শাহ জমানা বাড়বাড়ন্ত । বয়সের ভাড়ে নুব্জ হয়ে পড়া মানুষটাকে কোরোনার আতঙ্কের মধ্যে অযোধ্যায় আনা হবে কি না তা নিয়েও জল্পনা তৈরি হয়েছিল। অবশেষে ভার্চুয়ালভাবে রাম মন্দিরের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপনের সাক্ষী থাকার বিষয়ে চূড়ান্ত হয় । কিন্তু এতদিন কার্যত নিশ্চুপ ছিলেন তিনি । অবশেষে নীরবতা ভাঙলেন । বললেন, রাম রাজ্য গড়ার বিষয় তাঁর আবেগের কথা । সেদিন যে 'আন্দোলন'-এর সূচনা করেছিলেন সে বিষয়ে নিজের গর্বের কথাও ফের একবার ঘোষণা করলেন ।

রাম মন্দিরের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপনের আগে বক্তব্য রাখছেন লালকৃষ্ণ আদবানি

আদবানির কথায়, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির হাত ধরে এক দীর্ঘ দিনের স্বপ্ন বাস্তব রূপ পাচ্ছে । এই 'রাম রাজ্য'-র সব মানুষ সুখে শান্তিতে থাকতে পারবে বলেও আশাপ্রকাশ করেছেন তিনি । পাশাপাশি এই 'শান্তি'-র দেশে কেউ বহিষ্কার হবে না বলেও আভাস দিয়েছেন বাজপেয়ি জমানার সেকেন্ড-ইন-কমান্ড ।

কিন্তু হঠাৎ করে বহিষ্কারের কথা বললেন কেন তিনি? এখানেই যেন একটা অন্য কিছুর আভাস পাচ্ছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা । প্রসঙ্গত গত বছর জাতীয় নাগরিকপঞ্জী এবং নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন নিয়ে উত্তাল হয়েছিল গোটা দেশ । নাগরিকত্ব 'হারিয়ে' দেশ ছাড়ার পরিস্থিতির মুখে কয়েক লাখ মানুষ । পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে এক সময় এদেশে আসা পূর্ব পুরুষদের স্মৃতি আঁকড়ে থাকা মানুষগুলোর মাথায় যেন মুহূর্তে ছাদ ভেঙে যাওয়ার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে । কেন্দ্রীয় সরকারের এই পদক্ষেপ নিয়ে তৃণমূল, কংগ্রেস, বাম-সহ প্রতিটি বিরোধী দল সরব হয় সংসদের ভিতরে ও বাইরে । বাংলা-বিহার-ওড়িশা-অসম-সহ দেশের নানা প্রান্তে প্রতিবাদ সপ্তমে ওঠে । বারবার কেন্দ্রীয় সরকারকে বিবৃতি জারি করতে হয় । এক বছর হতে চললেও পরিস্থিতি এখনও স্বাভাবিক হয়নি ।

আবার BJP এবং হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে সম্পর্ক বরাবরই একটু নিবিড় । নাগরিকত্ব আইন কার্যকর হওয়ায় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের দেশ ছাড়ার একটা আশঙ্কা তৈরি হয়েছিল । আজ রাম রাজ্য গঠনের কয়েক ঘণ্টা আগে লালকৃষ্ণ আদবানির 'বহিষ্কার' শব্দটা কোথাও যেন একটা ইতিহাসের সেই অধ্যায়ের কথা মনে করিয়ে দিল ।

দিল্লি, 4 অগাস্ট : স্বপ্নপূরণের সামনে BJP-র লৌহপুরুষ । 1990 সালে তাঁর সেই রথযাত্রার যেন স্বার্থক পরিসমাপ্তি হতে চলেছে আগামীকাল । বুধবার । বেলা 12টা 15-তে । কিন্তু তিনি থাকতে পারছেন না । আজ তাঁর লৌহ পৌরষত্বে যেন কোথাও একটা মরচে পড়ে গিয়েছে । রাম মন্দিরের ঐতিহাসিক ভিত্তি প্রস্তর স্থাপনের অনুষ্ঠানে থাকতে পারছেন না 92 বছরের বৃদ্ধ । কিন্তু তাঁর 15 ঘণ্টা আগেই স্বপ্নপূরণের কথা লালকৃষ্ণ আদবানির মুখে । বললেন, "প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি রাম মন্দিরের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করবেন । শুধু আমার কাছে নয়, প্রত্যেক ভারতবাসীর কাছে আবেগ ও ঐতিহাসিক দিন । স্বপ্নের রাম রাজ্য বাস্তব রূপ পাচ্ছে ।"

1990-এ তাঁর রথযাত্রা ঘিরেই রক্ত ঝড়েছিল । কর সেবকদের সেই মৃত্যু যেন গেরুয়া শিবিরের ইচ্ছাকে বহুগুণ বাড়িয়েছিল । 1992-এর 6 ডিসেম্বর লালকৃষ্ণ আদবানি, মুরলি মনোহর জোশিদের নেতৃত্বে হাজার কর সেবক ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন বাবরি মসজিদে । ইতিহাসের এক করুণ অধ্যায় লেখা হয়েছিল সেদিন । সরযূ নদী দিয়ে জল অনেক দূর গড়িয়েছে । শীর্ষ আদালতের হস্তক্ষেপে অবশেষে রাম মন্দির গড়ার স্বীকৃতি মিলেছে । প্রায় 30 বছর আগের যে উত্তেজনা আদবানিরা দেখিয়েছিলেন সেটাই যেন বাস্তব রূপ পাচ্ছে । কিন্তু কালের নিয়মে আজ দলে কার্যত অপাংক্তেয় হয়ে গিয়েছেন প্রাক্তন উপ প্রধানমন্ত্রী ।

92 বছরের মানুষটাকে আজকের দিনে আমন্ত্রণ জানানো হবে কি না তা নিয়েও চলেছিল চাপানউতোর । একদিকে মোদি-অমিত শাহ জমানা বাড়বাড়ন্ত । বয়সের ভাড়ে নুব্জ হয়ে পড়া মানুষটাকে কোরোনার আতঙ্কের মধ্যে অযোধ্যায় আনা হবে কি না তা নিয়েও জল্পনা তৈরি হয়েছিল। অবশেষে ভার্চুয়ালভাবে রাম মন্দিরের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপনের সাক্ষী থাকার বিষয়ে চূড়ান্ত হয় । কিন্তু এতদিন কার্যত নিশ্চুপ ছিলেন তিনি । অবশেষে নীরবতা ভাঙলেন । বললেন, রাম রাজ্য গড়ার বিষয় তাঁর আবেগের কথা । সেদিন যে 'আন্দোলন'-এর সূচনা করেছিলেন সে বিষয়ে নিজের গর্বের কথাও ফের একবার ঘোষণা করলেন ।

রাম মন্দিরের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপনের আগে বক্তব্য রাখছেন লালকৃষ্ণ আদবানি

আদবানির কথায়, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির হাত ধরে এক দীর্ঘ দিনের স্বপ্ন বাস্তব রূপ পাচ্ছে । এই 'রাম রাজ্য'-র সব মানুষ সুখে শান্তিতে থাকতে পারবে বলেও আশাপ্রকাশ করেছেন তিনি । পাশাপাশি এই 'শান্তি'-র দেশে কেউ বহিষ্কার হবে না বলেও আভাস দিয়েছেন বাজপেয়ি জমানার সেকেন্ড-ইন-কমান্ড ।

কিন্তু হঠাৎ করে বহিষ্কারের কথা বললেন কেন তিনি? এখানেই যেন একটা অন্য কিছুর আভাস পাচ্ছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা । প্রসঙ্গত গত বছর জাতীয় নাগরিকপঞ্জী এবং নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন নিয়ে উত্তাল হয়েছিল গোটা দেশ । নাগরিকত্ব 'হারিয়ে' দেশ ছাড়ার পরিস্থিতির মুখে কয়েক লাখ মানুষ । পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে এক সময় এদেশে আসা পূর্ব পুরুষদের স্মৃতি আঁকড়ে থাকা মানুষগুলোর মাথায় যেন মুহূর্তে ছাদ ভেঙে যাওয়ার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে । কেন্দ্রীয় সরকারের এই পদক্ষেপ নিয়ে তৃণমূল, কংগ্রেস, বাম-সহ প্রতিটি বিরোধী দল সরব হয় সংসদের ভিতরে ও বাইরে । বাংলা-বিহার-ওড়িশা-অসম-সহ দেশের নানা প্রান্তে প্রতিবাদ সপ্তমে ওঠে । বারবার কেন্দ্রীয় সরকারকে বিবৃতি জারি করতে হয় । এক বছর হতে চললেও পরিস্থিতি এখনও স্বাভাবিক হয়নি ।

আবার BJP এবং হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে সম্পর্ক বরাবরই একটু নিবিড় । নাগরিকত্ব আইন কার্যকর হওয়ায় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের দেশ ছাড়ার একটা আশঙ্কা তৈরি হয়েছিল । আজ রাম রাজ্য গঠনের কয়েক ঘণ্টা আগে লালকৃষ্ণ আদবানির 'বহিষ্কার' শব্দটা কোথাও যেন একটা ইতিহাসের সেই অধ্যায়ের কথা মনে করিয়ে দিল ।

Last Updated : Aug 5, 2020, 2:44 AM IST
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.