ভোপাল, 20 মার্চ : মধ্যপ্রদেশ বিধানসভায় কংগ্রেসের ভাগ্য নির্ধারণ হবে আজ ৷ সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী আজ দুপুর 2টোয় আস্থা ভোট করানো হবে ৷ বিকেল 5টায় জানা যাবে ফলাফল ৷
10 মার্চ জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া দল ছেড়ে BJP-তে যোগ দেওয়ার পর রাজনৈতিক মহলে সিন্ধিয়া-ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত আরও 22 জন কংগ্রেস বিধায়ক গত সপ্তাহে ইস্তফাপত্র জমা দেন ৷ তারপর মধ্যপ্রদেশের BJP শিবির কমল নাথ সরকারের সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে প্রশ্ন তোলে ৷ এই বিষয়ে তারা সুপ্রিম কোর্টে যায় ৷
কংগ্রেস ও BJP র এই টানাপোড়েনে শীর্ষ আদালত দুই পক্ষের বক্তব্য শুনে 20 মার্চ থেকে অধিবেশনের অনুমতি দিয়ে বলে, ‘‘লক্ষ্য একটাই, সরকারের সংখ্যাগরিষ্ঠতা রয়েছে কি না তা পরীক্ষা করে দেখা ৷ আস্থাভোটের মাধ্যমেই মধ্যপ্রদেশ সরকারের এই অনিশ্চয়তা মেটানো সম্ভব ৷"
কমল নাথ বারবার নিজেদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকার দাবি করলেও BJP-র অভিযোগ, ‘‘নিজেদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণ করতে অক্ষম কংগ্রেস ৷ তাই তারা কোরোনা ভাইরাসের নাম করে আস্থা ভোট পিছোনোর চেষ্টা করছে ৷’’
আস্থা ভোট হওয়ার আগে বেশিক্ষণ সময় পেলে ‘‘ঘোড়া কেনা বেচা’’ হতে পারে বলে উল্লেখ করে সুপ্রিম কোর্ট দেয়, আজ বিকেলের মধ্যেই আস্থা ভোট সম্পন্ন করতে হবে ৷ ভোট যাতে শান্তিপূর্ণ ভাবে হয়, সেই নির্দেশও দেয় আদালত ৷ বিচারপতি বলেন, ‘‘সম্পূর্ণ ভোটগ্রহণ প্রক্রিয়া ভিডিয়ো রেকর্ড করতে হবে এবং এর লাইভ টেলিকাস্টও করতে হবে ৷’’
দলত্যাগী 16 বিধায়ক, কংগ্রেসের মতে যাদের অপহরণ করে আটকে রেখেছে BJP, তাঁদের বিষয়ে আদালতের তরফ থেকে বলা হয়, ‘‘যদি তাঁরা আস্থা ভোটে অংশ নিতে চান, তাহলে তাঁদের উপযুক্ত নিরাপত্তা দান করা হবে ৷’’ তবে দলত্যাগী বিধায়করা গতকাল কোর্টে বলেন, তাঁরা স্বেচ্ছায় ইস্তফা দিয়েছেন ৷
সোমবার রাজ্যপাল আস্থাভোট করানোর জন্য মু্খ্যমন্ত্রীকে জানালেও তাতে আমল দেওয়া হয়নি ৷ এরপর 17 মার্চ আবারও আস্থাভোট করানোর জন্য মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি পাঠান তিনি ৷ কিন্তু তারপরেও আস্থাভোট না হওয়ায় ক্ষুব্ধ রাজ্যপাল বলেন, ‘‘এরকম চলতে থাকলে বিধানসভায় শাসক দল সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারিয়েছে বলেই ধরে নেওয়া হবে ৷’’ রাজ্যপালের এই বক্তব্যের প্রতিবাদ করে কংগ্রেসের দুশ্যন্ত দাভে ৷ কাল আদালত তার পরিপ্রেক্ষিতে বলে, ‘‘রাজ্যপালের সিদ্ধান্ত ভুল নয় ৷’’
আদালতের রায় ঘোষণার পর BJP-র তিনবারের মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহান টুইটে লেখেন, ‘‘সত্যমেব জয়তে ৷'' অন্যদিকে কংগ্রেস নেতা পি এল পুনিয়া বলেন, ‘‘কংগ্রেস তার সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণ করতে সক্ষম হবে৷'' এই নিয়ে কংগ্রেস নেতা অধীর চৌধুরি বলেন, ‘‘যার হাতে সংখ্যা বেশি, সেই জিতবে ৷’’
জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া সহ 22 জন কংগ্রেস বিধায়ক ইস্তফা দেওয়ায় বর্তমানে কংগ্রেসের হাতে 104 জন বিধায়ক রয়েছে ৷ সংখ্যাগরিষ্ঠতায় পৌঁছানোর জন্য কমপক্ষে তাদের আরও 5জনের সমর্থন দরকার ৷ অন্যদিকে BJP-র দখলে রয়েছে 107টি আসন ৷ যা সংখ্যাগরিষ্ঠ সংখ্যার থেকে তিন বেশি ৷ বিধানসভায় আজ কমল নাথ সরকার কোন ম্যাজিকে সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণ করবে, তাই দেখার অপেক্ষা ৷