দিল্লি, 19 সেপ্টেম্বর : দেশজুড়ে কোরোনা সংক্রমণ রোধে চালু হয় লকডাউন । ভিন রাজ্য থেকে শ্রমিকদের নিজ রাজ্যে ফিরিয়ে আনতে চালু হয় শ্রমিক স্পেশাল ট্রেন । আর এই শ্রমিক স্পেশালে যাত্রাকালে প্রথম দিন থেকে শুরু করে 9 সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মোট 97 জন পরিযায়ী শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে বলে রাজ্যসভায় হিসাব দিল কেন্দ্রীয় সরকার ।
শুক্রবার বিষয়টি নিয়ে রাজ্যসভায় প্রশ্ন তোলেন তৃণমূল সাংসদ ডেরেক ও'ব্রায়েন । কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রী পীযূষ গোয়েলের কাছে শ্রমিক স্পেশাল ট্রেন চালু হওয়া থেকে এখনও পর্যন্ত কতজন শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে সেই তথ্য প্রকাশ করতে দাবি জানান । এরপরই শ্রমিকদের মৃত্যুর সংখ্যা প্রকাশ করে কেন্দ্রীয় সরকার । গয়াল জানিয়েছেন, "রাজ্য পুলিশের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, দেশের কোরোনা পরিস্থিতে শ্রমিক স্পেশালে যাত্রাকালে 9 সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মোট 97 জন পরিযায়ী শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে ।" তিনি আরও জানান, "মোট 87 জনের দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায় রাজ্য পুলিশ । এখনও পর্যন্ত 51টি ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পুলিশের হাতে এসেছে । রিপোর্টে মৃত্যুর কারণ হিসাবে হৃদরোগ, মস্তিষ্কের রক্তক্ষরণ, প্রাক-বিদ্যমান ক্রনিক রোগ, দীর্ঘস্থায়ী ফুসফুস রোগ, দীর্ঘস্থায়ী লিভারের রোগ ইত্যাদিতে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর উল্লেখ রয়েছে । অস্বাভাবিক মৃত্যুর ক্ষেত্রে পুলিশ নির্দিষ্ট ধারায় মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে ।"
এর আগে কেন্দ্রীয় শ্রমমন্ত্রী লোকসভায় জানিয়েছিলেন, কোরোনা পরিস্থিতিতে দেশজুড়ে জারি হওয়া লকডাউনের সময়কালে কতজন শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে তার হিসাব সরকারের কাছে নেই । তাঁর এই মন্তব্যের পর বিরোধীদের ক্ষোভের মুখে পড়ে কেন্দ্রীয় সরকার । ওঠে সমালোচনার ঝড় । লকডাউনের সময় প্রাণ হারানো পরিযায়ী শ্রমিকদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবি উঠতে থাকে বিরোধী মহল থেকে ।
তবে রাজ্যগুলির দিকেই বিষয়টিকে ঠেলে দিয়েছেন গয়াল । তাঁর কথায়, "রেলে পুলিশি ব্যবস্থা সম্পূর্ণ রাজ্যের বিষয় । অপরাধ দমন, কেসের রেজিস্ট্রেশন, সেগুলির তদন্ত, রেল চত্বর ও চলন্ত ট্রেনে আইনের রক্ষণাবেক্ষণ বিষয়গুলি দেখার দায়িত্ব রাজ্য সরকারগুলির । এই দায়িত্বগুলি রাজ্য রেল পুলিশ (GRP) বা জেলা পুলিশের হাতেই অর্পিত । GRP বা জেলা পুলিশ যাতে আরও বেশি করে যাত্রী এলাকা ও যাত্রীদের নিরাপত্তা ও সুরক্ষা দিতে সচেষ্ট হয় তার জন্যই কাজ করে রেলওয়ে সুরক্ষা বাহিনী (RPF) । "
শ্রমিক স্পেশাল ট্রেনে পরিযায়ী শ্রমিকদের থেকে ভাড়া আদায়ের বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন বিরোধীরা । সেই প্রসঙ্গে গয়াল বলেন, "রেল পরিযায়ী শ্রমিকদের থেকে টাকা আদায় করেনি । শ্রমিক স্পেশাল ট্রেনগুলি রাজ্য সরকার কর্তৃক বুক হয়েছিল । তিনি বলেন ,"1 মে প্রথম চালু হয় শ্রমিক স্পেশাল ট্রেন । লকডাউনের সময় পরিযায়ী শ্রমিকদের তাঁদের নিজ রাজ্যে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্যই চালু হয়েছিল এই ট্রেন । 1 মে থেকে 31 অগাস্ট পর্যন্ত 4,621টি শ্রমিক স্পেশাল ট্রেন চলেছে । মোট 6,319,000 যাত্রীকে নিজ রাজ্যে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে । এই সময়কালে রাজ্য সরকারগুলির থেকে মোট 433 কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করা হয়েছে ।"