ETV Bharat / bharat

স্মরণে মুক্তিযুদ্ধ জয়ের নেপথ্য নায়ক : ফিল্ড মার্শাল স্যাম মানেকশ

author img

By

Published : Jun 27, 2020, 6:54 PM IST

Updated : Jun 27, 2020, 7:05 PM IST

মানেকশদের মৃত্যু হয় না । ফিনিক্স পাখি হয়ে এঁরা ছাইয়ের গাদা থেকে ফিরে আসেন । প্রতিবার ।

স্যাম মানেকশ
স্যাম মানেকশ

হায়দরাবাদ, 27 জুন : দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ । ভারতে তখন ব্রিটিশ শাসন । শ'য়ে শ'য়ে ভারতীয়কে নিয়োগ করা হয়েছিল যুদ্ধের জন্য । দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সেই ভয়াবহতার সাক্ষী ছিলেন পরবর্তীকালের ফিল্ড মার্শাল স্যাম মানেকশ । সে-সময়ে তিনি ছিলেন বার্মায় । যুদ্ধের ময়দানে । তরুণ ক্যাপ্টেন স্যাম মানেকশ বার্মায় যুদ্ধে গুরুতর জখম হয়েছিলেন । শত্রুপক্ষের মুখোমুখি হয়ে বীরের মতো লড়েছিলেন তিনি । তাঁর এই বীরত্বের জন্য 1942 সালে মিলিটারি ক্রস পদকে সম্মানিত হয়েছিলেন ।

1914 সালের 3 এপ্রিল অমৃতসরে জন্মগ্রহণ করেছিলেন স্যাম মানেকশ । এরপর থেকে চার দশকেরও বেশি সময় ধরে গৌরবোজ্জ্বল হয়ে ছিল তাঁর মিলিটারি কেরিয়ার। মিলিটারি ক্রসের পর 1946-47 সালে মিলিটারি অপারেশনের ডিরেক্টরেট হিসেবে নিযুক্ত হন তিনি । সে-সময়ে নানা প্রশাসনিক কাজকে খুব সামনে থেকে দেখেছিলেন তিনি । পরবর্তী সময়ে জম্মু ও কাশ্মীরের সামরিক অভিযানেরও সাক্ষী থাকেন তিনি ।

তারপর আসে 1962 সাল । ভারত - চিন যু্দ্ধ । তখন তিনি কর্পস কমান্ডার । সে-সময়ে তিনি জওয়ানদের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন । তাঁর এই নেতৃত্ব '62-র অভিযানে ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছিল । এর পাশাপাশি তিনি তৎকালীন মিলিটারি হেড-কোয়ার্টারস অফ ওয়ার (Mhow)-এর ইনফ্যানট্রি স্কুলের ও ওয়েলিংটন ডিফেন্স সার্ভিসেস স্টাফ কলেজের কমান্ডান্ট ছিলেন । 1968 সালে ভারত সরকার তাঁকে পদ্মভূষণে সম্মানিত করে ।

এরপরই আসে তাঁর কর্মজীবনের সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় । পদ্মভূষণ উপাধি পাওয়ার ঠিক পরের বছরই সেনাপ্রধান পদে নিযুক্ত হন তিনি । দিনটা ছিল 1969 সালের 8 জানুয়ারি । বাংলাদেশ তখনও স্বাধীন হয়নি । পূর্ব পাকিস্তান । 1971 সালের মুক্তিযুদ্ধে পূর্ব পাকিস্তান অধুনা বাংলাদেশকে পূর্ণ সহযোগিতার আশ্বাস দেয় দিল্লি । মুক্তিযোদ্ধাদের নিরাশ করেননি স্যাম মানেকশ । 13 দিনের মধ্যে বাংলাদেশকে স্বাধীনতা এনে দেওয়ার অন্যতম নেপথ্য নায়ক ছিলেন তিনি । এরপর 1972 সালে পদ্মবিভূষণ উপাধিতে ভূষিত হন স্যাম মানেকশ । সেনাবাহিনীর প্রতি এই অসামান্য অবদানের জন্য 1973 সালের 15 জানুয়ারি তাঁকে ফিল্ড মার্শালের পদে উন্নীত করা হয় । 2008 সালের 27 জুন শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি ।

সেনার দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি পাওয়ার পর তিনি ওয়েলিংটনে থাকতে শুরু করেন । ওয়েলিংটনে ডিফেন্স সার্ভিসেস স্টাফ কলেজের কমান্ডান্ট থাকাকালীনই তিনি সেখানকার সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে পড়েছিলেন । নীলগিরির প্রাকৃতিক যে শোভা ও সেখানকার মানুষদের সঙ্গে এক অটুট বাঁধন অনুভব করতেন তিনি । স্যাম মানেকশের স্মৃতিতে স্থানীয় NGO-গুলির সহযোগিতায় ডিফেন্স সার্ভিসেস স্টাফ কলেজ দরিদ্র-অভাবী মানুষদের পাশে দাঁড়ায় । সাহসিকতা, নৈতিকতা ও তাঁর নেতৃত্বের জন্য তিনি আজও সমানভাবে স্মরণীয় হয়ে রয়েছেন । ভারতীয় সেনার জন্য তাঁর অবদান আজও সকলের জন্য অনুপ্রেরণা ।

আজ তাঁর দ্বাদশ মৃত্যুবার্ষিকী । স্থানীয় পারসিদের উপস্থিতিতে আজকের দিনে তাঁর সৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয় । তবে মানেকশদের মৃত্যু হয় না । ফিনিক্স পাখি হয়ে এঁরা ছাইয়ের গাঁদা থেকে আবারও ফিরে আসেন । প্রতিবার ।

হায়দরাবাদ, 27 জুন : দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ । ভারতে তখন ব্রিটিশ শাসন । শ'য়ে শ'য়ে ভারতীয়কে নিয়োগ করা হয়েছিল যুদ্ধের জন্য । দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সেই ভয়াবহতার সাক্ষী ছিলেন পরবর্তীকালের ফিল্ড মার্শাল স্যাম মানেকশ । সে-সময়ে তিনি ছিলেন বার্মায় । যুদ্ধের ময়দানে । তরুণ ক্যাপ্টেন স্যাম মানেকশ বার্মায় যুদ্ধে গুরুতর জখম হয়েছিলেন । শত্রুপক্ষের মুখোমুখি হয়ে বীরের মতো লড়েছিলেন তিনি । তাঁর এই বীরত্বের জন্য 1942 সালে মিলিটারি ক্রস পদকে সম্মানিত হয়েছিলেন ।

1914 সালের 3 এপ্রিল অমৃতসরে জন্মগ্রহণ করেছিলেন স্যাম মানেকশ । এরপর থেকে চার দশকেরও বেশি সময় ধরে গৌরবোজ্জ্বল হয়ে ছিল তাঁর মিলিটারি কেরিয়ার। মিলিটারি ক্রসের পর 1946-47 সালে মিলিটারি অপারেশনের ডিরেক্টরেট হিসেবে নিযুক্ত হন তিনি । সে-সময়ে নানা প্রশাসনিক কাজকে খুব সামনে থেকে দেখেছিলেন তিনি । পরবর্তী সময়ে জম্মু ও কাশ্মীরের সামরিক অভিযানেরও সাক্ষী থাকেন তিনি ।

তারপর আসে 1962 সাল । ভারত - চিন যু্দ্ধ । তখন তিনি কর্পস কমান্ডার । সে-সময়ে তিনি জওয়ানদের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন । তাঁর এই নেতৃত্ব '62-র অভিযানে ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছিল । এর পাশাপাশি তিনি তৎকালীন মিলিটারি হেড-কোয়ার্টারস অফ ওয়ার (Mhow)-এর ইনফ্যানট্রি স্কুলের ও ওয়েলিংটন ডিফেন্স সার্ভিসেস স্টাফ কলেজের কমান্ডান্ট ছিলেন । 1968 সালে ভারত সরকার তাঁকে পদ্মভূষণে সম্মানিত করে ।

এরপরই আসে তাঁর কর্মজীবনের সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় । পদ্মভূষণ উপাধি পাওয়ার ঠিক পরের বছরই সেনাপ্রধান পদে নিযুক্ত হন তিনি । দিনটা ছিল 1969 সালের 8 জানুয়ারি । বাংলাদেশ তখনও স্বাধীন হয়নি । পূর্ব পাকিস্তান । 1971 সালের মুক্তিযুদ্ধে পূর্ব পাকিস্তান অধুনা বাংলাদেশকে পূর্ণ সহযোগিতার আশ্বাস দেয় দিল্লি । মুক্তিযোদ্ধাদের নিরাশ করেননি স্যাম মানেকশ । 13 দিনের মধ্যে বাংলাদেশকে স্বাধীনতা এনে দেওয়ার অন্যতম নেপথ্য নায়ক ছিলেন তিনি । এরপর 1972 সালে পদ্মবিভূষণ উপাধিতে ভূষিত হন স্যাম মানেকশ । সেনাবাহিনীর প্রতি এই অসামান্য অবদানের জন্য 1973 সালের 15 জানুয়ারি তাঁকে ফিল্ড মার্শালের পদে উন্নীত করা হয় । 2008 সালের 27 জুন শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি ।

সেনার দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি পাওয়ার পর তিনি ওয়েলিংটনে থাকতে শুরু করেন । ওয়েলিংটনে ডিফেন্স সার্ভিসেস স্টাফ কলেজের কমান্ডান্ট থাকাকালীনই তিনি সেখানকার সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে পড়েছিলেন । নীলগিরির প্রাকৃতিক যে শোভা ও সেখানকার মানুষদের সঙ্গে এক অটুট বাঁধন অনুভব করতেন তিনি । স্যাম মানেকশের স্মৃতিতে স্থানীয় NGO-গুলির সহযোগিতায় ডিফেন্স সার্ভিসেস স্টাফ কলেজ দরিদ্র-অভাবী মানুষদের পাশে দাঁড়ায় । সাহসিকতা, নৈতিকতা ও তাঁর নেতৃত্বের জন্য তিনি আজও সমানভাবে স্মরণীয় হয়ে রয়েছেন । ভারতীয় সেনার জন্য তাঁর অবদান আজও সকলের জন্য অনুপ্রেরণা ।

আজ তাঁর দ্বাদশ মৃত্যুবার্ষিকী । স্থানীয় পারসিদের উপস্থিতিতে আজকের দিনে তাঁর সৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয় । তবে মানেকশদের মৃত্যু হয় না । ফিনিক্স পাখি হয়ে এঁরা ছাইয়ের গাঁদা থেকে আবারও ফিরে আসেন । প্রতিবার ।

Last Updated : Jun 27, 2020, 7:05 PM IST
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.