নয়াদিল্লি, 15 অগস্ট: যে যতই দুর্বল হোন বা শক্তিশালী, প্রতিটি ভারতীয়েরই কণ্ঠস্বর 'ভারতমাতা'৷ বললেন কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধি ৷ স্বাধীনতা দিবসে একটি দীর্ঘ খোলা চিঠিতে তিনি কন্যাকুমারী থেকে কাশ্মীর পর্যন্ত 145 দিনের ভারত জোড়ো যাত্রায় তাঁর নানা অভিজ্ঞতার কথা শেয়ার করেছেন ৷
রাহুল তাঁর বার্তায় বলেন, "আমার ভালবাসার জিনিসটি হঠাৎ করেই নিজেকে প্রকাশ করেছিল । আমার প্রিয় ভারত মাতা কোনও ভূমি ছিল না । এটি কোনও ধারণার সমষ্টি ছিল না । এটি কোনও নির্দিষ্ট সংস্কৃতি, ইতিহাস বা ধর্ম ছিল না । মানুষের কোনও বর্ণও নয় । ভারত ছিল প্রতিটি ভারতীয়ের কণ্ঠস্বর, তাঁরা যতই দুর্বল বা শক্তিশালী হোন না কেন ৷ ভারত সব কণ্ঠস্বরের মধ্যে লুকিয়ে থাকা সুখ, ভয় এবং বেদনা ৷"
রাহুল আরও বলেন, "ভারতের কথা শুনতে, আমার নিজের কণ্ঠস্বর - আমার ইচ্ছা - আমার উচ্চাকাঙ্ক্ষাগুলিকে চুপ করে যেতে হয়েছিল । ভারত তার নিজের একজনের সঙ্গে কথা বলবে, কিন্তু শুধুমাত্র যদি কেউ নম্র এবং সম্পূর্ণ নীরব থাকে তবেই বলবে ৷"
সমস্ত ভারত জোড়ো যাত্রার অভিজ্ঞতা ভাগ করে নিয়ে রাহুল বলেন, "এটি কত সহজ ছিল । আমি নদীতে যেটা খুঁজছিলাম তা কেবল সমুদ্রে পাওয়া যায় ।" তিনি ফার্সি কবি রুমির উদ্ধৃতি তুলে ধরে বলেন, "কথা যদি হৃদয় থেকে আসে তবেই তা হৃদয়ে প্রবেশ করবে ।"
আরও পড়ুন: স্বাধীনতা আন্দোলনে কতজন বাঙালি জেল খেটেছিলেন, কতজনের হয়েছিল ফাঁসি, জানেন কি ?
যাত্রা শুরু করার পরই তাঁর হাঁটুর পুরনো একটি আঘাত তাঁকে যে বেদনা দিয়েছিল সেই কথা স্মরণ করে রাহুল বলেন, যাত্রায় লোকের সংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে সেই ব্যথা কমে গিয়েছে ৷
তাঁর কথায়, "এবং তারপরে আমি কিছু লক্ষ্য করতে শুরু করলাম । যতবারই আমি থামার কথা ভাবতাম, প্রতিবারই যখন আমি হাল ছেড়ে দেওয়ার কথা ভাবতাম, কেউ একজন এসে আমাকে চালিয়ে যাওয়ার শক্তি দান করত ৷ এটি যেন একটি নীরব শক্তি যা আমাকে সাহায্য করতে থাকে এবং একটি অন্ধকার জঙ্গলে আগুনের মতো, এটা সর্বত্র ছিল । যখন আমার সত্যিই এটির প্রয়োজন ছিল, তখন এটি সাহায্য করার এবং গাইড করার জন্য আমার পাশে ছিল ৷"
রাহুল আরও বলেন, "তারপর একদিন, আমি এমন নীরবতা অনুভব করেছি যা আমি আগে কখনও অনুভব করিনি । আমার হাত ধরে আমার সঙ্গে কথা বলার লোকটির কণ্ঠ ছাড়া আর কিছুই শুনতে পেলাম না । ছোটবেলা থেকেই ভেতরের একটা কণ্ঠস্বর আমার সঙ্গে কথা বলত সে যেন চলে গিয়েছে । মনে হয়েছিল যেন কেউ মারা গিয়েছে ৷"