নারায়ণপেটা (তেলঙ্গানা), 3 ফেব্রুয়ারি: ফুটবল (Football) ফিরিয়ে দিল হারানো ছেলেকে ৷ সম্প্রতি এই মিরাকল ঘটেছে তেলঙ্গানার (Telangana) নারায়ণপেটায় ৷ মাত্র 6 বছর বয়সে মহম্মদ দানিশ নামে ওই বালক হারিয়ে যায় ৷ তার 9 বছর পর তার মা-বাবা আবার ছেলেকে ফিরে পেলেন ৷ অনূর্ধ্ব-15 জাতীয় ফুটবল দলে (U15 Indian Football Team) দানিশ জায়গা পেতেই তার শিকড়ের সন্ধান শুরু হয় ৷ সেই প্রক্রিয়াতেই সন্তানকে খুঁজে পাওয়ার দীর্ঘ অপেক্ষা শেষ হয় মহম্মদ মইজ ও শাবানার ৷
2014 সালের 16 ডিসেম্বর দানিশ নিখোঁজ হয় ৷ অনেক খোঁজাখুঁজি করেও তাকে পাননি মইজ ও শাবানা ৷ শেষে তাঁরা পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেন ৷ পুলিশি সন্ধানে দানিশের কোনও হদিশ মেলেনি ৷ এদিকে দানিশ হায়দরাবাদ থেকে ট্রেনে মুম্বই পৌঁছায় । সেখানে তাকে চাইল্ড কেয়ার সেন্টার বা সিডব্লিউসি (CWC)-র কর্মকর্তারা উদ্ধার করেন ৷ কেয়ার সেন্টারে তাকে রাখা হয় ৷ স্কুলেও ভরতি করা হয় ৷ এখন সে নবম শ্রেণিতে পড়ছে ।
সেখানকার কর্মকর্তারা অবশ্য তার ঠিকানার সন্ধান করেছিল ৷ আধারের বায়োমেট্রিক তথ্যেরও (Aadhar Biometric Information) সাহায্য নেওয়া হয় দানিশের জন্মস্থান খুঁজে বের করার জন্য ৷ কিন্তু কোনও লাভ হয়নি । যদিও তার জীবন থেমে থাকেনি ৷ বরং সময়ের সঙ্গে সে দক্ষ ফুটবলার হয়ে ওঠে ৷ নয় বছর পর অনূর্ধ্ব-15 জাতীয় ফুটবল দলে তার জায়গা হয় ৷ বছর 15-র দানিশ অনূর্ধ্ব-15 জাতীয় ফুটবল দলের জন্য নির্বাচিত হওয়ায় সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের তার মা-বাবা পরিচয় জানা ও জন্মস্থান সনাক্ত করার প্রয়োজন হয়ে পড়ে ৷
কিন্তু মুম্বইয়ের ওই কেয়ার সেন্টার কোনও তথ্য দিতে পারেনি ৷ সেই কারণেই দানিশের আঙুলের ছাপ নেওয়া হয় ৷ সেখান থেকে খুঁজে বের করা হয় তার আধার নম্বর ও মা-বাবার তথ্য ৷ তখনই জানা যায় যে দানিশ তেলঙ্গানার বাসিন্দা ও নারায়ণপেটা জেলা সদরের বাহারপেটের মহম্মদ মইজ ও শাবানার ছেলে । তার মা-বাবার সঙ্গে দানিশের সাক্ষাৎ করিয়ে দেওয়া হয় ৷ তার মা-বাবাও গত ন’বছর ধরে দানিশের সন্ধান চালিয়ে যাচ্ছিলেন ৷ তাঁরাও কোনোভাবে সফল হননি ৷ অবশেষে ফুটবল খুঁজে দিল হারানো দানিশকে ৷
ফুটবল দলের নির্বাচকদের কাছ থেকে বিস্তারিত জানার পর কেয়ার সেন্টারের কর্মকর্তারা নারায়ণপেটা কর্তৃপক্ষকে জানায় । মাহাবুবনগর জেলা শিশু কল্যাণ আধিকারিক বেনুগোপাল এবং ডিসিপিও কুসুমা লাথা ছেলেটির বাবা-মাকে জানিয়ে তাঁদের মুম্বই পাঠিয়ে দেন । তাঁরা গিয়ে ছেলেকে নিয়ে ফিরে যান । কর্তৃপক্ষ সরকারি কাগজপত্র-সহ ছেলেটিকে তাঁদের কাছে হস্তান্তর করেছে । মইজ ও শাবানা ছেলেকে ফিরে পেয়ে খুবই খুশি ৷ তাই তাঁরা আর ছেলেকে হারাতে চান না ৷
আরও পড়ুন: 7 ঘণ্টা পর চোখ মেললেন 'মৃত' ঠাকুমা, খুশির হাওয়া 109 বছরের বৃদ্ধার পরিবারে