নয়াদিল্লি, 3 ফেব্রুয়ারি : গালওয়ানে ভারতীয় সেনার সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ানোর জেরে প্রাণ গিয়েছিল 42 জন চিনা সৈনিকের (australian newspaper cliams that china lost 42 soldiers in galwan valley clash, not 4) ৷ বৃহস্পতিবার অস্ট্রেলীয় সংবাদপত্র দ্য ক্ল্যাক্সন এই দাবি করেছে (Australian newspaper The Klaxon) ৷ স্বাভাবিক ভাবে তাদের এই দাবি ঘিরে হইচই পড়েছে ৷ তবে ভারতের তরফে এই নিয়ে এখনও কেউ কোনও প্রতিক্রিয়া দেয়নি ৷
2020-র 15 জুন এই সংঘর্ষ হয় (Galwan Valley clash) ৷ সেদিন পূর্ব লাদাখের গালওয়ান উপত্যকায় চিনা পিএলএ-র সঙ্গে ভারতীয় সেনার রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়েছিল ৷ সেই সংঘর্ষে ভারতের 20 জন জওয়ান শহিদ হন ৷ চিনের দাবি ছিল যে তাদের পিপলস লিবারেশন আর্মির 4 জন মারা গিয়েছেন ৷ কিন্তু অস্ট্রেলিয়ার ওই সংবাদপত্রের প্রতিবেদনের পর সেই দাবিই এখন প্রশ্নের মুখে ৷
ওই সংবাদপত্রের দাবি, সোশ্যাল মিডিয়ার বেশ কয়েকজন গবেষকের সাহায্য নিয়ে তারা স্বাধীনভাবে বিষয়টি খতিয়ে দেখে ৷ তখনই আসল তথ্য সামনে আসে ৷ ওই প্রক্রিয়ায় জানা যায় যে এই সংঘর্ষ নিয়ে কোনওরকম আলোচনা না করতে বলা হয় চিনের তরফে ৷ বিশেষ করে প্রাণহানি নিয়ে কথা বলতে নিষেধ করা হয় ৷
ওই প্রতিবেদনে লেখা হয়েছে, প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর গালওয়ান নদীর উপর একটি সেতু তৈরি নিয়ে সেদিন দুই পক্ষের বিবাদ চরমে উঠেছিল ৷ ওই সেতু ভারতের তরফে তৈরি করা হয় ৷ যা চিনের না পসন্দ ছিল ৷ যদিও দুই পক্ষ উত্তেজনা কমাতে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর বাফার জোন তৈরির সিদ্ধান্ত নেয় ৷ তার পরও চিনের বিরুদ্ধে সেখানে অবৈধ কাঠামো তৈরি করা হয় ৷ সেই নিয়ে বিবাদ আরও বৃদ্ধি পায় ৷
এই পরিস্থিতিতে জুনের 6 তারিখ ভারতের তৈরি সেতু ভাঙতে চেষ্টা করে পিএলএ ৷ ভারত তাতে বাধা দেয় ৷ তার পর উত্তেজনা কমাতে দু’পক্ষ সেখান থেকে সরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় ৷ কিন্তু চিন তার পরও গোপনে ভারতের তৈরি সেতু ভাঙার পরিকল্পনা করতে শুরু করে ৷ প্রতিবেদন অনুযায়ী এই তথ্য তাঁরা পেয়েছেন ওই অঞ্চলে কাজ করা এক ব্যক্তির কাছ থেকে ৷
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, 15 জুন সেখানে যান ভারতের কর্নেল সন্তোষ ৷ তাঁর সঙ্গে অন্য জওয়ানরাও ছিলেন ৷ তখন সেখানে চিনা কর্নেল কিউই ফাবাও প্রায় 150 জন চিনা সৈনিককে নিয়ে হাজির হন ৷ তখন কোনও আলোচনা ছাড়াই ভারতের উপর চড়াও হয় তারা ৷
কিন্তু ফাবাওকে ধরে নেয় ভারতীয় সেনা ৷ ফাবাওকে ছাড়াতে ভারতের এলাকায় ঢুকে পড়ে চিনা সেনা ৷ শুরু হয় সংঘর্ষ ৷ সেই সুযোগে ফাবাও পালান ৷ আর ভারতের প্রতি আক্রমণের মুখে পড়ে রাতের অন্ধকারে পালাতে শুরু করে চিনা সেনা ৷ এই পরিস্থিতিতে 38 জন গালওয়ান নদীতে ভেসে যান ৷
চিনের তরফে দেহগুলি উদ্ধার করে শেষকৃত্য করা হয় ৷ কিন্তু কখনও বিষয়টি নিয়ে তারা কিছু জানায়নি ৷ তবে ভারতের কর্নেল সন্তোষ বাবু-সহ যে 20 জন শহিদ হন, তাঁদের নিয়ে সরকারি তরফে কখনও কোনও ধোঁয়াশা রাখা হয়নি ৷