হায়দরাবাদ, 12 মে: নিজামের শহরে নাশকতার ছক । সম্প্রতি পুলিশি অভিযানে প্রকাশ্যে আসা হিজাব-উৎ-তাহরীর (এইচইউটি) জঙ্গি সংগঠনের একাধিক পরিকল্পনা সামনে আসায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে শহরে । পুলিশ জানতে পেরেছে, অভিযুক্তরা হায়দরাবাদের একাধিক জায়গায় বড় আকারের বিস্ফোরণের পরিকল্পনা করেছিল ।
মধ্যপ্রদেশ পুলিশ ভোপাল ও হায়দরাবাদে একসঙ্গে অভিযান চালিয়ে প্রাথমিকভাবে 16 জনকে গ্রেফতার করে । তাদের মধ্যে পাঁচজন হায়দরাবাদের বাসিন্দা । পরে আরও একজনকে গ্রেফতার করায় অভিযুক্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে 17 জনে । পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, দলের মূল পাণ্ডা মহম্মদ সেলিম ওরফে সৌরভ রাজ । একটি কলেজের এইচওডি হিসাবে কর্মরত সেলিম হায়দরাবাদের হিজাব-উৎ-তাহরীর পক্ষে কার্যক্রম পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন । গোলকোণ্ডা বড় বাজার এলাকার একটি বাড়িতে থাকেন তার বাস । জানা গিয়েছে, অভিযুক্তরা বহুবার তার বাড়িতে দেখা করেছে ।
আব্দুর রহমান, মহম্মদ আব্বাস আলি, শেখ জুনায়েদ, মহম্মদ হামিদ, মহম্মদ সলমন-সহ আরও কয়েকজন যুবক জঙ্গি গোষ্ঠীর বিভিন্ন সভায় অংশ নেয় । গ্রেফতারের আগে বিভিন্ন জায়গায় তারা যাদের সঙ্গে দেখা করেছিল, তাদের খোঁজ চলছে । গোটা বিষয়টির জন্য একটি 3 ধাপের প্রক্রিয়া অনুসরণ করেছিল তারা । প্রথম পর্যায়ে, শহরের যুবকদের নিজেদের দিকে আকৃষ্ট করা । বিভিন্নভাবে তাদের মগজধোলাই করে নিজেদের দিকে নিয়ে আসা । দ্বিতীয় পর্বে তাদের প্রযুক্তি ও অন্যান্য বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া । তৃতীয় পর্যায়ে, পরিকল্পনা অনুযায়ী বিস্ফোরণ এবং জঙ্গি আক্রমণকে দিশা দেওয়া । জানা গিয়েছে, শহরের বিভিন্ন অঞ্চলে ব্যাপক হামলা চালিয়ে ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টির পরিকল্পনা করা হয়েছিল । বেশ কয়েকমাস ধরে ভিকারাবাদের অনন্তগিরি পাহাড়ে বন্দুক, ছুরি দিয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে একাধিক যুবককে ।
অভিযুক্ত যুবকদের আকৃষ্ট করতে এবং তাদের কার্যক্রম সম্পর্কে জানাতে একটি ইউটিউব চ্যানেল চালু করা হয়েছিল হিজাব-উৎ-তাহরীর তরফ থেকে । তাদের মগজধোলাই করতে ওই চ্যানেলে আপলোড করা হয়েছিল 33টি ভিডিয়ো । সাবস্ক্রাইবার সংখ্যা প্রায় 3,600 । ধর্ম পরিবর্তন, গণহত্যার বিষয়ে মগজধোলাই-সহ অন্যান্য নাশকতার সমস্ত উপাদান মজুত ওই ভিডিয়োতে । পুলিশ জানিয়েছে, যে মহিলা ধর্মান্তরকরণের বিষয়ে ওই ভিডিয়োতে কথা বলছিলেন, তাকে অভিযুক্তদের একজনের স্ত্রী বলে চিহ্নিত করা হয়েছে । ঘটনার বিস্তারিত তদন্ত করছে পুলিশ ।
আরও পড়ুন: ড্রোন ব্যবহার করে নাশকতা, উপত্যকার নিরাপত্তায় বড় চ্যালেঞ্জ