ইম্ফল, 21 জুলাই: মণিপুরে চরম লাঞ্ছনার শিকার দুই মহিলার মধ্যে একজনের স্বামী কারগিল যুদ্ধের সেনানী ৷ স্ত্রীর এই লজ্জার দিনে তীব্র আক্ষেপ ধরা পড়ল তাঁর গলায় ৷ প্রাক্তন এই জওয়ান বললেন, তিনি দেশকে রক্ষা করেছিলেন ৷ কিন্তু তাঁর স্ত্রীর সম্ভ্রম রক্ষা করতে পারেননি ৷
নির্যাতিতার স্বামী প্রাক্তন সেনাকর্মী: গত 4 মে শুট হওয়া মণিপুরের একটি ভিডিয়ো বুধবার রাতে প্রকাশ্যে আসার পর থেকেই দেশব্যাপী নিন্দার ঝড় ওঠে ৷ গণধর্ষণের পর নগ্ন করে দুই মহিলাকে প্রকাশ্য রাস্তায় হাঁটানোর ভিডিয়ো দেখে শিউড়ে ওঠে মানুষ ৷ ওই দুই নির্যাতিতার একজনের স্বামী অসম রেজিমেন্টের সুবেদার হিসেবে ভারতীয় সেনাবাহিনীতে কাজ করেছেন ৷ স্ত্রীর সঙ্গে এই ঘটনা ঘটায় মুষড়ে পড়েছেন তিনি ৷
একটি হিন্দি চ্যানেলের সঙ্গে কথা বলার সময় তিনি বলেন, "আমি কার্গিলের যুদ্ধে জাতির জন্য লড়াই করেছি এবং ভারতীয় শান্তি রক্ষা বাহিনীর অংশ হিসেবে শ্রীলঙ্কায়ও ছিলাম । আমি জাতিকে রক্ষা করেছি কিন্তু আজ আমি হতাশ যে আমার অবসরের পরে, আমি আমার বাড়ি, আমার স্ত্রী এবং সহ-গ্রামবাসীদের রক্ষা করতে পারিনি...আমি দুঃখিত, হতাশাগ্রস্ত ৷"
তিনি বলেন, গত 4 মে সকালে জনতা ওই এলাকার বেশ কয়েকটি বাড়িঘর পুড়িয়ে দেয়, দুই মহিলার পোশাক খুলে দেয় এবং গ্রামের রাস্তায় লোকজনের সামনে ওই অবস্থায় তাঁদের হাঁটতে বাধ্য করে ।
প্রাক্তন সেনাকর্মীর অভিযোগ, "পুলিশ উপস্থিত ছিল কিন্তু কোনও ব্যবস্থা নেয়নি । আমি চাই যারা ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দিয়েছে এবং নারীদের অপমান করেছে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হোক ।"
ভিডিয়োটি প্রকাশের একদিন পর বৃহস্পতিবার এই মামলায় চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে । মণিপুর পুলিশ একটি টুইটার পোস্টে বলেছে, "রাজ্য পুলিশ অন্য অপরাধীদের দ্রুত গ্রেফতার করার জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালাচ্ছে । অভিযান অব্যাহত রয়েছে ।"
আরও পড়ুন: 'মোদিজি, আপনি কবে ইস্তফা দেবেন ?', টুইট মণিপুরের একরত্তি মেয়ের
হিংসায় জ্বলছে মণিপুর: 3 মে মণিপুরে জাতিগত হিংসা শুরু হওয়ার পর থেকে 160 জনেরও বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন এবং বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন ৷ মেইতি সম্প্রদায়ের তফসিলি উপজাতি (এসটি) তকমার দাবির প্রতিবাদে পার্বত্য জেলাগুলিতে 'উপজাতি সংহতি মার্চ' সংগঠিত হয়েছিল । মণিপুরের জনসংখ্যার প্রায় 53 শতাংশ মেইতি এবং বেশিরভাগই ইম্ফল উপত্যকায় বাস করে ৷ আর 40 শতাংশ রয়েছে নাগা ও কুকির মতো উপজাতি ৷ এঁদের বেশিরভাগই পার্বত্য জেলাগুলিতে বসবাস করে ।