নয়াদিল্লি, 8 অক্টোবর: কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রকের নয়া পাঠ্যক্রমের কাঠামো অনুযায়ী, বছরে দু'বার হবে বোর্ডের পরীক্ষা ৷ তবে দশম ও দ্বাদশ শ্রেণির বোর্ডের পরীক্ষায় বছরে দু'বারই বসাটা শিক্ষার্থীদের জন্য বাধ্যতামূলক নয় ৷ এ কথা জানালেন কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান । তিনি বলেন, একবারই সুযোগ পাওয়ার ভয়ে পড়ুয়াদের মধ্যে একটা চাপ সৃষ্টি হয়, তা কমানোর জন্যই এই বিকল্প চালু করা হচ্ছে ৷ পিটিআই-কে দেওয়া একটি সাক্ষাত্কারে রবিবার তিনি আরও বলেন যে, 'ডামি স্কুল' ইস্যুটিকে উপেক্ষা করা যায় না এবং এটি নিয়ে জরুরি আলোচনা করার সময় এসেছে ।
ধর্মেন্দ্র প্রধান বলেছেন, "শিক্ষার্থীদের (দশম শ্রেণি ও দ্বাদশ শ্রেণি) বোর্ডের পরীক্ষায় বছরে দু'বার ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ট্রান্স পরীক্ষার জেইই-এর মতোই অ্যাপিয়ার করার বিকল্প থাকবে । তাঁরা সেরা স্কোর বেছে নিতে পারে...তবে এটি সম্পূর্ণ ঐচ্ছিক হবে, কোনও বাধ্যবাধকতা নেই । শিক্ষার্থীরা প্রায়ই মানসিক চাপে পড়ে এই ভেবে যে, তারা একটি বছর হারিয়েছে, তাদের সুযোগ চলে গিয়েছে বা তারা আরও ভালো পারফর্ম করতে পারত...একটিমাত্র সুযোগের ভয়ের কারণে সৃষ্ট চাপ কমাতে এই বিকল্প চালু করা হচ্ছে ৷"
তিনি আরও বলেন, "যদি কোনও শিক্ষার্থী মনে করে যে, সে সম্পূর্ণভাবে প্রস্তুত এবং পরীক্ষার প্রথম সেটের স্কোর নিয়ে সন্তুষ্ট, তাহলে সে পরবর্তী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ নাও করতে পারে । কিছুই বাধ্যতামূলক হবে না ৷" অগস্ট মাসে শিক্ষা মন্ত্রক কর্তৃক ঘোষিত নয়া পাঠ্যক্রম কাঠামো (এনসিএফ) অনুসারে, শিক্ষার্থীদের ভালো পারফর্ম করার পর্যাপ্ত সময় এবং সুযোগ রয়েছে ৷ আর তাদের সেরা স্কোর ধরে রাখার বিকল্প আছে, তা নিশ্চিত করতে বছরে দু'বার বোর্ড পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে ।
আরও পড়ুন: নয়া শিক্ষানীতির পাঠ্যক্রম তৈরি, বোর্ড পরীক্ষা বছরে 2 বার; জানাল কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রক
কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী বলেছেন যে, তিনি বছরে দু'বার বোর্ড পরীক্ষা পরিচালনার পরিকল্পনার বিষয়ে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া পেয়েছেন ।
তাঁর কথায়, "নতুন পাঠ্যক্রম ফ্রেমওয়ার্ক (এনসিএফ) ঘোষণা করার পরে আমি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে দেখা করেছি । তারা এটির প্রশংসা করেছে এবং এই ধারণার সঙ্গে তারা খুশি । আমরা চেষ্টা করছি যে পরীক্ষাগুলি 2024 থেকে বছরে দু'বার যাতে অনুষ্ঠিত হয় ৷"
এই বছর রাজস্থানের কোটায় রেকর্ড ছাত্র আত্মহত্যার বিষয়ে জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, "এটি একটি অত্যন্ত সংবেদনশীল বিষয় । কোনও প্রাণ হারানো উচিত নয়... তারা আমাদের সন্তান । শিক্ষার্থীদের চাপমুক্ত রাখাটা নিশ্চিত করা আমাদের সম্মিলিত দায়িত্ব ।" ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের জন্য জয়েন্ট এন্ট্রান্স এক্সাম (জেইই) এবং মেডিক্যাল কলেজে ভর্তির জন্য নিট-এর মতো প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার জন্য প্রতি বছর দুই লাখেরও বেশি শিক্ষার্থী কোটায় যায় ।
সরকারি পরিসংখ্যান অনুসারে, এই বছর কোটায় 23 জন ছাত্র আত্মহত্যা করেছে -- যা দেশের কোচিং হাবের জন্য সর্বোচ্চ । গত বছর এই সংখ্যা ছিল 15 । প্রধান বলেন, 'ডামি স্কুল' ইস্যুতে একটি জরুরি আলোচনা করার সময় এসেছে । শিক্ষার্থীদের যাতে কোচিংয়ের প্রয়োজন না হয় তা নিশ্চিত করার জন্য কেন্দ্র কাজ করছে বলেও জানান তিনি ।
কর্ণাটক এবং পশ্চিমবঙ্গের মতো রাজ্যগুলির জাতীয় শিক্ষা নীতি (এনইপি) বাস্তবায়ন না করার সিদ্ধান্ত সম্পর্কে জানতে চাইলে ধর্মেন্দ্র প্রধান বলেন, "তাদের আপত্তি অ্যাকাডেমিক নয়, রাজনৈতিক । আমি এখনও বুঝতে পারিনি যে তাদের প্রকৃত আপত্তি কীসে । পশ্চিমবঙ্গ একটি বিকল্প নথি তৈরি করেছে । আমরা তা দেখেছি এবং এটি 99 শতাংশ এনইপি-এর মতোই ৷"