মোহালি, 14 সেপ্টেম্বর: চাইলেই বদলি হয়ে যেতে পারতেন আপাত নিরীহ কোনও জায়গায় ৷ কোনওরকম ঝক্কি ছাড়াই কাটিয়ে দিতে পারতেন সেনায় কর্মজীবনের বাকিটা সময় ৷ কিন্তু 2021-এ পদোন্নতির সময় সেই প্রস্তাব নাকচ করেছিলেন কর্নেল মনপ্রীত সিং ৷ 19 রাষ্ট্রীয় রাইফেলসের সেকেন্ড-ইন-কমান্ড হিসেবে রয়ে গিয়েছিলেন উপত্যকায় ৷ জিতেছিলেন সেনা মেডেলও ৷ বুধবার জঙ্গিদের সঙ্গে গুলির লড়াইয়ে জম্মু-কাশ্মীরের অনন্তনাগে লড়াই থামল মনপ্রীত সিংয়ের ৷
1982 সালের 11 মার্চ মোহালিতে জন্ম মনপ্রীত সিংয়ের ৷ বাবা-ঠাকুরদার পদাঙ্ক অনুসরণ করেই দেশরক্ষায় নিজেকে নিয়োজিত করেছিলেন কর্নেল ৷ বাবা লখমির সিং এবং ঠাকুরদা ছিলেন ব্রিটিশ আর্মিতে কর্মরত ৷ পরিবারের আরও 19 এমন সদস্য ছিলেন বা রয়েছেন, যাঁরা কখনও না-কখনও দেশের জন্য জীবন বাজি রেখেছিলেন ৷ ছ'বছরের পুত্রসন্তানকে ভবিষ্যতে সেনার উর্দিতেই দেখতে চেয়েছিলেন কর্নেল মনপ্রীত সিং, জানান বোন সন্দীপ কউর ৷
কিন্তু ছেলেকে সেনার পোশাকে দেখার ইচ্ছে অপূর্ণ রেখেই চিরঘুমের দেশে পাড়ি দিলেন মনপ্রীত ৷ তাঁর ভাই, বোন, দুই সন্তান এবং স্ত্রী বর্তমান ৷ ছেলের শহিদ হওয়ার খবরে জাগতিক নিয়মেই কান্নার রোল পরিবারে ৷ তবে ভিতরে ভিতরে গর্বও অনুভব করছেন তাঁরা ৷ শুক্রবার তেরঙায় মুড়ে চণ্ডীগড় থেকে 6 কিলোমিটার দূরের গ্রামে ফিরবে নিহত কর্নেলের কফিনবন্দি দেহ ৷ শেষকৃত্যের যাবতীয় বন্দোবস্তের জন্য গ্রামে ইতিমধ্যেই পৌঁছে গিয়েছেন সেনা আধিকারিকরা ৷
গ্রামে প্রবেশের পর শহিদ কর্নেলের বাড়ির পথে এমন 19টি ঘর রয়েছে, যে পরিবারের সদস্যরা এমনই দেশরক্ষায় নিয়োজিত রয়েছেন বা ছিলেন কোনও না কোনও সময় ৷ 1962 কিংবা 1965-র যুদ্ধে মৃত্যুবরণ করা এমন অনেক সৈনিকের নামে রাস্তাও রয়েছে ভ্রাঙ্গিয়ান গ্রামে ৷ শহিদ মনপ্রীত সিংও হয়তো অচিরে স্থান করে নিলেন সেই দলে ৷
আরও পড়ুন: সিং পরিবারের তৃতীয় প্রজন্মের সৈনিক মনপ্রীত প্রাণ দিলেন দেশরক্ষার লড়াইয়ে
পরিবার সূত্রে খবর, সেনার তরফে জানানো হয়েছে শুক্রবার বেলা 12টার আশেপাশে গ্রামে এসে পৌঁছবে শহিদ কর্নেলের দেহ ৷ পরিবারের সঙ্গে কথা বলে শেষকৃত্যের যাবতীয় বন্দোবস্ত সেরে ফেলেছেন সেনা আধিকারিকরা ৷ হোক না প্রাণহীন দেহ, বীর সন্তানকে বরণ করে নিতে পথ চেয়ে শহিদ মনপ্রীত সিং'য়ের গ্রাম ৷