ETV Bharat / bharat

CJI Ramana : ইন্দিরা গান্ধির বিরুদ্ধে এলাহাবাদ হাইকোর্টের রায় দারুণ সাহসিকতার, বললেন প্রধান বিচারপতি

12 জুন, 1975 ৷ স্থান এলাহাবাদ হাইকোর্ট ৷ সেখানে কাঠগড়ায় তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধি ৷ জওহরলাল-তনরায় বিরুদ্ধে ভোটে কারচুপি করে জেতার অভিযোগ এনেছেন রাজ নারায়ণ ৷ সেদিন ইন্দিরা গান্ধির নির্বাচনে জেতাকে আইনবিরুদ্ধ বলে ঘোষণা করেছিলেন বিচারপতি জগমোহনলাল সিনহা ৷ এই রায় কাঁপিয়ে দিয়েছিল সারা দেশকে, জানালেন দেশের প্রধান বিচারপতি এন ভি রামানা ৷

ইন্দিরা গান্ধির বিরুদ্ধে রায়দান সাহসিকতার
ইন্দিরা গান্ধির বিরুদ্ধে রায়দান সাহসিকতার
author img

By

Published : Sep 12, 2021, 2:27 PM IST

এলাহাবাদ, 12 সেপ্টেম্বর : ভোটে কারচুপি করে জেতার অপরাধে এলাহাবাদ হাই কোর্টের বিচারপতি জগমোহনলাল সিনহা (Justice Jagmohanlal Sinha) তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধিকে দোষী সাব্যস্ত করেছিলেন ৷ এই রায়কে "দারুণ সাহসিকতার" (great courage) বলে উল্লেখ করলেন দেশের প্রধান বিচারপতি (Chief Justice of India) এন ভি রমানা (N V Ramana) ৷ 1975 সালে বিচারপতি জগমোহনলাল সিনহার (Justice Jagmohanlal Sinha) সেই ঐতিহাসিক রায় সেদিন সারা দেশকে "কাঁপিয়ে" (shook) দিয়েছিল, যার ফল হয়েছিল "জরুরি অবস্থা" বা এমারজেন্সি (Emergency), জানালেন প্রধান বিচারপতি ৷

গতকাল উত্তরপ্রদেশে আইন বিশ্ববিদ্যালয় (National Law University) এবং এলাহাবাদ হাই কোর্টের নতুন একটি ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে অংশ নিতে এলাহাবাদে আসেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ (President Ram Nath Kovind), প্রধান বিচারপতি এন ভি রামানা ৷ দেশের অন্যতম পুরনো এবং ঐতিহ্যপূর্ণ আদালত এলাহাবাদ হাইকোর্ট ৷ ন্যায় বিচারের ইতিহাসে এই আদালতের অবদান প্রসঙ্গে প্রধান বিচারপতি ইন্দিরা গান্ধির বিরুদ্ধে রায়দানের কথা মনে করিয়ে দেন ৷

তিনি বলেন, "1975 সালে এলাহাবাদ হাইকোর্টের বিচারপতি জগমোহনলাল সিনহা শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধিকে অযোগ্য প্রমাণ করার রায় দিয়ে দেশকে কাঁপিয়ে দিয়েছিলেন ৷ এই বিচার দারুণ সাহসিকতার নিদর্শন ৷ এর প্রত্যক্ষ ফল জরুরি অবস্থার (এমারজেন্সি) ঘোষণা ৷ কিন্তু এর প্রভাবে কী অবস্থা হয়েছিল, তা আমি বিস্তারিত বলতে চাই না ৷"

এলাহাবাদ হাইকোর্টের ইতিহাস 150 বছরেরও বেশি পুরনো ৷ এই আদালতের বিচারপতিরা দেশের অন্যতম বহু শ্রেষ্ঠ রায় ঘোষণা করেছেন বলে জানান তিনি ৷

আরও পড়ুন : Supreme Court : ট্রাইবুনাল নিয়ে কেন্দ্রকে ভর্ৎসনা সুপ্রিম কোর্টের

কী হয়েছিল 1975-এর 12 জুন ?

1971-এর লোকসভা নির্বাচনে উত্তরপ্রদেশের রায়বরেলি (Rae Bareli) কেন্দ্রে সোশ্যালিস্ট পার্টির (Socialist Party) নেতা রাজ নারায়ণকে (Raj Narain) হারিয়ে জয়লাভ করেন জওহরলাল তনয়া ইন্দিরা ৷

রাজ নারায়ণ পরে অভিযোগ করেন, ভোটে কারচুপি করে জিতেছেন প্রতিপক্ষ ইন্দিরা গান্ধি ৷ তিনি জানান, ইন্দিরা গান্ধির এজেন্ট যশপাল কাপুর (Yashpal Kapoor) একজন সরকারি চাকুরে ৷ নির্বাচনে জিততে ইন্দিরা গান্ধি এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে সরকারি আধিকারিকদের তাঁর নির্বাচনের স্বার্থে ব্যবহার করেছেন ৷

এলাহাবাদ হাইকোর্টের বিচারপতি জগমোহনলাল সিনহা তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধিকে দোষী সাব্যস্ত করেন 12 জুন ৷ বিচারপতি তাঁর এই নির্বাচনে জেতাকে "আইন বিরুদ্ধ" (Null and Void) বলে তকমা দেন ৷ শাস্তিস্বরূপ পরবর্তী 6 বছর তিনি কোনও নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবেন না বলে নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি ৷ এর সঙ্গে অবশ্য বিচারপতি ইন্দিরা গান্ধিকে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জানানোর জন্য 20 দিন সময় দিয়েছিলেন ৷

24 জুন সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court) হাইকোর্টের নির্দেশের উপর শর্তসাপেক্ষে স্থগিতাদেশ জারি করে ৷ ইন্দিরা গান্ধি সংসদে যেতে পারবেন, কিন্তু কোনও নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবেন না, যতক্ষণ না পর্যন্ত তাঁর আবেদনের চূড়ান্ত রায় দেয় আদালত ৷ আদালতের এই রায় যেন তাঁর বিরুদ্ধে চলতে থাকা আন্দোলনগুলিতে ঘি ঢালল ৷ সমাজকর্মী তথা স্বাধীনতা সংগ্রামী জয়প্রকাশ নারায়ণ পরের দিন দিল্লিতে বিশাল জমায়েতের ঘোষণা করেন ৷ ইন্দিরা গান্ধির ইস্তফা চেয়ে সরব কংগ্রেসের প্রবীণ নেতারাও ৷ যদিও ইন্দিরা গান্ধি তাঁর প্রধানমন্ত্রিত্ব কোনওমতেই হারাতে চাননি ৷

26 জুন ভোর ভোর অল ইন্ডিয়া রেডিয়োয় (All India Radio) প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করেন "রাষ্ট্রপতি এমারেজন্সি জারি করেছেন ৷ তবে এ নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই ৷" তার আগের দিন অর্থাৎ 25 জুন তড়িঘড়ি তিনি তৎকালীন রাষ্ট্রপতি ফকরুদ্দিন আলি আহমেদকে (President Fakhruddin Ali Ahmed) দিয়ে "এমারজেন্সি ইস্তাহারে" (Proclamation of Emergency) সই করিয়ে নেন ৷

এলাহাবাদ, 12 সেপ্টেম্বর : ভোটে কারচুপি করে জেতার অপরাধে এলাহাবাদ হাই কোর্টের বিচারপতি জগমোহনলাল সিনহা (Justice Jagmohanlal Sinha) তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধিকে দোষী সাব্যস্ত করেছিলেন ৷ এই রায়কে "দারুণ সাহসিকতার" (great courage) বলে উল্লেখ করলেন দেশের প্রধান বিচারপতি (Chief Justice of India) এন ভি রমানা (N V Ramana) ৷ 1975 সালে বিচারপতি জগমোহনলাল সিনহার (Justice Jagmohanlal Sinha) সেই ঐতিহাসিক রায় সেদিন সারা দেশকে "কাঁপিয়ে" (shook) দিয়েছিল, যার ফল হয়েছিল "জরুরি অবস্থা" বা এমারজেন্সি (Emergency), জানালেন প্রধান বিচারপতি ৷

গতকাল উত্তরপ্রদেশে আইন বিশ্ববিদ্যালয় (National Law University) এবং এলাহাবাদ হাই কোর্টের নতুন একটি ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে অংশ নিতে এলাহাবাদে আসেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ (President Ram Nath Kovind), প্রধান বিচারপতি এন ভি রামানা ৷ দেশের অন্যতম পুরনো এবং ঐতিহ্যপূর্ণ আদালত এলাহাবাদ হাইকোর্ট ৷ ন্যায় বিচারের ইতিহাসে এই আদালতের অবদান প্রসঙ্গে প্রধান বিচারপতি ইন্দিরা গান্ধির বিরুদ্ধে রায়দানের কথা মনে করিয়ে দেন ৷

তিনি বলেন, "1975 সালে এলাহাবাদ হাইকোর্টের বিচারপতি জগমোহনলাল সিনহা শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধিকে অযোগ্য প্রমাণ করার রায় দিয়ে দেশকে কাঁপিয়ে দিয়েছিলেন ৷ এই বিচার দারুণ সাহসিকতার নিদর্শন ৷ এর প্রত্যক্ষ ফল জরুরি অবস্থার (এমারজেন্সি) ঘোষণা ৷ কিন্তু এর প্রভাবে কী অবস্থা হয়েছিল, তা আমি বিস্তারিত বলতে চাই না ৷"

এলাহাবাদ হাইকোর্টের ইতিহাস 150 বছরেরও বেশি পুরনো ৷ এই আদালতের বিচারপতিরা দেশের অন্যতম বহু শ্রেষ্ঠ রায় ঘোষণা করেছেন বলে জানান তিনি ৷

আরও পড়ুন : Supreme Court : ট্রাইবুনাল নিয়ে কেন্দ্রকে ভর্ৎসনা সুপ্রিম কোর্টের

কী হয়েছিল 1975-এর 12 জুন ?

1971-এর লোকসভা নির্বাচনে উত্তরপ্রদেশের রায়বরেলি (Rae Bareli) কেন্দ্রে সোশ্যালিস্ট পার্টির (Socialist Party) নেতা রাজ নারায়ণকে (Raj Narain) হারিয়ে জয়লাভ করেন জওহরলাল তনয়া ইন্দিরা ৷

রাজ নারায়ণ পরে অভিযোগ করেন, ভোটে কারচুপি করে জিতেছেন প্রতিপক্ষ ইন্দিরা গান্ধি ৷ তিনি জানান, ইন্দিরা গান্ধির এজেন্ট যশপাল কাপুর (Yashpal Kapoor) একজন সরকারি চাকুরে ৷ নির্বাচনে জিততে ইন্দিরা গান্ধি এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে সরকারি আধিকারিকদের তাঁর নির্বাচনের স্বার্থে ব্যবহার করেছেন ৷

এলাহাবাদ হাইকোর্টের বিচারপতি জগমোহনলাল সিনহা তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধিকে দোষী সাব্যস্ত করেন 12 জুন ৷ বিচারপতি তাঁর এই নির্বাচনে জেতাকে "আইন বিরুদ্ধ" (Null and Void) বলে তকমা দেন ৷ শাস্তিস্বরূপ পরবর্তী 6 বছর তিনি কোনও নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবেন না বলে নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি ৷ এর সঙ্গে অবশ্য বিচারপতি ইন্দিরা গান্ধিকে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জানানোর জন্য 20 দিন সময় দিয়েছিলেন ৷

24 জুন সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court) হাইকোর্টের নির্দেশের উপর শর্তসাপেক্ষে স্থগিতাদেশ জারি করে ৷ ইন্দিরা গান্ধি সংসদে যেতে পারবেন, কিন্তু কোনও নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবেন না, যতক্ষণ না পর্যন্ত তাঁর আবেদনের চূড়ান্ত রায় দেয় আদালত ৷ আদালতের এই রায় যেন তাঁর বিরুদ্ধে চলতে থাকা আন্দোলনগুলিতে ঘি ঢালল ৷ সমাজকর্মী তথা স্বাধীনতা সংগ্রামী জয়প্রকাশ নারায়ণ পরের দিন দিল্লিতে বিশাল জমায়েতের ঘোষণা করেন ৷ ইন্দিরা গান্ধির ইস্তফা চেয়ে সরব কংগ্রেসের প্রবীণ নেতারাও ৷ যদিও ইন্দিরা গান্ধি তাঁর প্রধানমন্ত্রিত্ব কোনওমতেই হারাতে চাননি ৷

26 জুন ভোর ভোর অল ইন্ডিয়া রেডিয়োয় (All India Radio) প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করেন "রাষ্ট্রপতি এমারেজন্সি জারি করেছেন ৷ তবে এ নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই ৷" তার আগের দিন অর্থাৎ 25 জুন তড়িঘড়ি তিনি তৎকালীন রাষ্ট্রপতি ফকরুদ্দিন আলি আহমেদকে (President Fakhruddin Ali Ahmed) দিয়ে "এমারজেন্সি ইস্তাহারে" (Proclamation of Emergency) সই করিয়ে নেন ৷

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.