কলকাতা, 1 সেপ্টেম্বর: ঘরে ঘরে এখন সিদ্ধিদাতা গণেশের আরাধনা (Ganesh Puja Muhurat-Rituals)৷ গণপতিকে ঘরে আনা থেকে শুরু করে 11 দিন ধরে চলে তাঁর পূজার্চনা ৷ লগ্ন দেখে বিশেষ নিয়ম আচার মেনে নিষ্ঠাভরে গণেশ বন্দনায় মাতেন আট থেকে আশি ৷
গণেশ পুজোর তিথি
গণেশের জন্মদিন পালিত হয় গণেশ চতুর্থীতে (Ganesh Chaturthi 2022)৷ তবে উৎসব চলে 11 দিন ধরে ৷ তিথি ও নক্ষত্র অনুযায়ী, এ বছর 30 অগস্ট, মঙ্গলবার বিকেল 3.33-এ শুরু হয়েছে ভদ্রপদ মাসের শুক্লপক্ষ ৷ শেষ 31 অগস্ট, বুধবার বিকেল 3.22-এ ৷ উদয় তিথি অনুসারে গণেশ চতুর্থীর উপবাস পালনের দিন 31 অগস্ট ৷ ওই দিনই বেলা 11.05 থেকে দুপুর 1.38-এর মধ্যে ছিল গণপতির পূজিত হওয়ার সময় ৷ এটাই বিগ্রহ প্রতিষ্ঠা করারও সময় ৷ আগামী 9 সেপ্টেম্বর, শুক্রবার অনন্ত চতুর্দশীতে গণপতি বাপ্পাকে বিসর্জনের দিন ৷
পুরাণ মতে, ভদ্রপদ মাসের শুক্লপক্ষে দেবাদিদেব শিব ও দেবী পার্বতীর ছোট ছেলে গণেশের জন্ম হয় ৷ প্রতি বছর সেই দিনটিকেই গণেশ চতুর্থী হিসেবে পালন করা হয় ৷
গণেশ বন্দনার বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ রীতি রয়েছে ৷ গণপতির আরাধনার প্রচলিত 16টি প্রথাকে মূল চারটি ভাগে ভাগ করা যায় ৷
আবাহন ও প্রাণ প্রতিষ্ঠা
গণেশ পুজোর প্রথম ধাপ হল 'দীপ-প্রজ্জ্বলন' এবং 'সংকল্প' করা । মন্ত্র পাঠের মাধ্যমে দেবতাকে শ্রদ্ধার সঙ্গে আমন্ত্রণ জানানো হয় এবং প্যান্ডেল বা মন্দিরে অথবা বাড়িতে গণেশের প্রাণ প্রতিষ্ঠা করা হয় । এটি 'বিগ্রহ'-কে পবিত্র করার একটি আচার ৷
ষোড়শ উপাচার
পরের প্রথা হল পুজোর ষোড়শোপাচার ৷ গণপতির পা ধুইয়ে তাঁকে দুধ, ঘি, মধু, টক দই ও চিনি দিয়ে করানো হয় পঞ্চামৃত স্নান ৷ এরপর তার উপর ছড়ানো হয় সুগন্ধী তেল ও গঙ্গা জল ৷ এ সব মিটলে নতুন কাপড় পরিয়ে হয় বস্ত্র, উত্তরীয় সমর্পণ প্রথা ৷ ফুলের মালা, সিঁদুর ও চন্দন দিয়ে সাজানো হয় বিগ্রহকে ৷ আর পেটুক গণেশের প্রসাদ হিসেবে সামনে রাখা হয় মোদক, পান পাতা ও নারকেল ৷ জ্বালানো হয় প্রদীপ, ধুপ-ধুনো ৷ চলে মন্ত্রোচ্চারণ ৷
উত্তরপূজা
গণপতি বিসর্জনের আগে এই আচার পালন করা হয় ৷ গান, নাচ করে বাজির রোশনাইয়ে আনন্দে মেতে ওঠেন ভক্তরা ৷ মন্ত্রোচ্চারণ, আরতি, ফুল দিয়ে বিদায় জানানো হয় দেবতাকে ৷ একে একে চলে নিরঞ্জন আরতি, পুষ্পাঞ্জলি অর্পণ ও প্রদক্ষিণ ৷
গণপতি বিসর্জন
গণেশ উৎসবের সমাপ্তি ঘটে বিসর্জনের মধ্যে দিয়ে ৷ আগামী বছর ফিরে আসার আমন্ত্রণ জানিয়ে স্লোগান ওঠে 'আসছে বছর আবার হবে ৷' গণপতিকে বিসর্জনের সময় ভক্তরা বলে ওঠেন, 'গণপতি বাপ্পা মোরিয়া ৷'