হামিরপুর, 13 অক্টোবর: কংগ্রেসের সঙ্গে আর জোট যাবেন না বলে আগেই জানিয়ে দিয়েছিলেন । আগামী বছর বিধানসভা নির্বাচনের আগে এবার আঞ্চলিক তথা ছোট দলগুলিকে কাছে টানতে উদ্যোগী হলেন উত্তরপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা সমাজবাদী পার্টি-র (সপা) প্রধান অখিলেশ যাদব (Akhilesh Yadav) । বিজেপি-কে হারাতে হলে, ছোট ছোট দলগুলির সঙ্গে জোট বেঁধেই ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে বলে মত তাঁর ।
মঙ্গলবার কানপুর থেকে 'বিজয় যাত্রা'র মাধ্যমে নির্বাচনী প্রচার শুরু করে দিয়েছেন অখিলেশ ৷ ওই যাত্রা চলাকালীনই হামিরপুরে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হলে নির্বাচনী রণকৌশল সম্পর্কে জানতে চাওয়া হয় তাঁর কাছে ৷ জবাবে অখিলেশ বলেন, "পরিস্থিতির উপরই জোট নির্ভর করে ৷ বড় দলগুলির সঙ্গে আমাদের জোটের অভিজ্ঞতা ভাল নয় ৷ এই মুহূর্তে ছোট দলগুলিকে একত্রিত করার চেষ্টা করছি আমরা, যাতে তাদের সঙ্গে জোট বেঁধে বিজেপি-কে হারানো যায় ৷"
আরও পড়ুন: PM Advisor : প্রধানমন্ত্রীর নয়া উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত আইএএস অমিত খারে
অখিলেশের মতোই একক নির্বাচনী প্রচার শুরু করে দিয়েছেন তাঁর 'বুয়া' মায়াবতীও ৷ মঙ্গলবার বহুজন সমাজ পার্টির (বসপা) প্রতিষ্ঠাতা কাঁসি রামের মৃত্যুবার্ষিকীতেই প্রচার পর্ব শুরু করেন ৷ গত কয়েক বছরে মায়াবতী এবং তাঁর দলের বিরুদ্ধে বিজেপি-র 'বি টিম'-এর ভূমিকা পালনের অভিযোগ উঠেছে ৷ ইডি, সিবিআই-এর ভয় দেখিয়ে বিজেপি মায়াবতীকে চুপ করিয়ে রেখেছে বলেও অভিযোগ সামেন এসেছে একাধিক বার ৷ তাই আগামী নির্বাচেন মায়াবতী একা লড়বেন নাকি কারও সঙ্গে হাত মেলাবেন, সে দিকে নজর রয়েছে তাঁর প্রতিপক্ষ শিবিরের ৷
তবে উত্তরপ্রদেশে কার্যত কোণঠাসা অবস্থা থেকে অনেকটাই চাঙ্গা হয়ে উঠেছে কংগ্রেস, যার নেপথ্যে রয়েছে সম্প্রতি ঘটে যাওয়া লিখমপুর খেরি-কাণ্ড ৷ গত 3 অক্টোবর কৃষকদের উপর কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অজয় মিশ্রের ছেলে গাড়ি চালিয়ে দেন বলে অভিযোগ ৷ তাতে চার কৃষক, এক সাংবাদিকের মৃত্যু হয় ৷ পরিস্থিতি হিংসাত্মক হয়ে উঠলে তিনজন বিজেপি কর্মীরও মৃত্যু হয় বলে খবর সামনে আসে ৷
আরও পড়ুন: Child Marriage : বাল্য বিবাহকে কখনওই আইনি স্বীকৃতি নয়, বিতর্কের মধ্যে সাফাই গেহলতের
এই ঘটনার প্রতিবাদে অখিলেশ প্রতিবাদে রাস্তায় নামলেও, যোগী আদিত্যনাথের পুলিশ লখনউয়ে কার্যত আটকে রাখেন তাঁকে ৷ কিন্তু অখিলেশকে আটকানো গেলেও, লখিমপুর খেরি যাওয়া থেকে প্রিয়ঙ্কা গান্ধী বঢরাকে বিরত করতে পারেনি উত্তরপ্রদেশের পুলিশ ৷ সীতাপুরের গেস্ট হাউসে প্রথমে আটকে রাখা হলেও, পরে লখিমপুর খেরিতে ঢোকার অনুমতি দেওয়া হয় তাঁকে৷ অনুমতি পেয়েই পীড়িতদের পরিবারের কাছে ছুটে যান প্রিয়ঙ্কা৷
আগের বার যোগী ঝড়ের সামনে কংগ্রেস-সপা-বসপা জোট ভূপতিত হলেও, এবার একেবারে চাঙ্গা হয়ে উত্তরপ্রদেশে লড়াইয়ে নামতে চাইছে কংগ্রেস ৷ আর সেই কাজে দলের সাধারণ সম্পাদক প্রিয়ঙ্কা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন ৷ মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নির্বাচনী কেন্দ্র বারাণসীতে সভা করেন প্রিয়ঙ্কা ৷
আগামী বছর উত্তরপ্রদেশ বিধানসভা নির্বাচনের দিনক্ষণ এখনও ঘোষণা হয়নি ৷ দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় ফেরা নিয়ে যদিও আত্মবিশ্বাসী যোগী, কিন্তু উন্নাও এবং হাথরপস ধর্ষণকাণ্ড, একের পর এক ভুয়ো এনকাউন্টারের অভিযোগ, কোভিড অব্যবস্থা এবং সর্বোপরি লখিমপুর খেরি কাণ্ডে কিছুটা হলেও তাঁর ভোটবাক্সকে প্রভাবিত করবে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা ৷ আবার কংগ্রেস, সপা, বসপা আলাদা আলাদা লড়লে ভোটের সমীকরণ বদলে যেতে পারে বলেও মনে করা হচ্ছে ৷
এর আগে, 2017-র বিধানসভা নির্বাচনে 403টি আসনের মধ্যে 312টিতেই জয়ী হয়েছিল বিজেপি ৷ মোট ভোটের 39.67 শতাংশই তাদের ঝুলিতে পড়েছিল ৷ সপা পেয়েছিস 47টি আসন ৷ 19টি আসন পেয়েছিল বসপা ৷ কংগ্রেসের হাতে এসেছিল মাত্র 7টি আসন ৷ তাই এ বারে হৃত জমি উদ্ধার করতে কংগ্রেসের সামনে মরিয়া লড়াই ৷