মুম্বই, 18 এপ্রিল: নতুন রাজনৈতিক জল্পনা তৈরি হয়েছে এনসিপি নেতা অজিত পাওয়ারকে কেন্দ্র করে ৷ এনসিপি সুপ্রিমো শরদ পাওয়ারের ভাইপো কি দল ছাড়তে পারেন ? আপাতত এই প্রশ্নই ঘুরছে মহারাষ্ট্রের রাজনৈতিক মহলে ৷ অজিত অবশ্য দলবদলের সমস্ত সম্ভাবনাকে উড়িয়ে দিয়েছেন ৷
মঙ্গলবার অজিত পাওয়ার তাঁর সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টগুলি থেকে এনসিপি সংক্রান্ত ছবি সরিয়ে দেন ৷ তার পরই জল্পনা ছড়ায় ৷ এর মধ্যে রাজনৈতিক মহলের একটি অংশ থেকে জানানো হয় যে এনসিপি-র 40 জন বিধায়ককে নিয়ে তিনি দল ছাড়তে পারেন অজিত ৷ যোগ দিতে পারেন বিজেপিতে ৷
কিন্তু পরে মহারাষ্ট্র বিধানসভার বিরোধী দলনেতা অজিত পাওয়ার জানান, কোনও কারণ ছাড়াই তাঁর সম্পর্কে এই ভুল তথ্য ছড়ানো হচ্ছে ৷ 40 জন বিধায়কের থেকে সমর্থন নেওয়ারও কোনও প্রশ্নই নেই বলে তিনি জানিয়েছেন ৷ তিনি কোনোভাবেই বিজেপিতে যোগ দিচ্ছেন না ৷ এনসিপিতেই ছিলেন ৷ ওই দলেই থাকছেন বলেই দাবি করেছেন ৷
প্রসঙ্গত, মহারাষ্ট্র বিধানসভায় 288টি আসন ৷ এখন সরকারে এনডিএ ৷ জোটে বিজেপি ও শিবসেনা ছাড়াও রয়েছে একাধিক রাজনৈতিক দল ৷ অন্যদিকে এনসিপি রয়েছে বিরোধী আসনে ৷ তাদের বিধায়ক সংখ্যা 53 ৷ যদিও 2019 সালের বিধানসভা নির্বাচনের পর এনসিপি, কংগ্রেস ও শিবসেনা মহাবিকাশ আঘাড়ি তৈরি করেছিল ৷ শিবসেনার উদ্ধব ঠাকরেকে মুখ্যমন্ত্রী করে ওই জোট সরকার গড়ে মহারাষ্ট্রে ৷
কিন্তু একনাথ শিন্ডের বিদ্রোহ ভাঙন ধরায় শিবসেনায় ৷ 40 জন বিধায়ক নিয়ে একনাথ বিজেপির সঙ্গে হাত মিলিয়ে মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন ৷ তার পর অজিত পাওয়ারকে নিয়ে নতুন করে জল্পনা ছড়ানোয়, প্রশ্ন ওঠে অজিতও কি একই পথে হেঁটে বিদ্রোহ করবেন আর এনসিপি ভাঙিয়ে বিজেপির সঙ্গে হাত মেলাবেন ?
যদিও অজিত পাওয়ারকে নিয়ে মহারাষ্ট্রের রাজনীতিতে ধন্দ অনেক রয়েছে ৷ কারণ, 2019 সালের বিধানসভা ভোটের পর যখন মহারাষ্ট্রে রাজনৈতিক সংকট তৈরি হয় ৷ সেই সময় আচমকাই বিজেপির সঙ্গে হাত মিলিয়েছিলেন অজিত ৷ দেবেন্দ্র ফড়নবীশের মন্ত্রিসভায় উপ মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে তিনি শপথ নেন ৷ মাঝরাতে সেই শপথগ্রহণ হয় ৷ কিন্তু পরদিনই তিনি অবস্থান পরিবর্তন করেন ৷ ফলে ফড়নবীশের সরকার টেকেনি ৷
রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা বলেন, সেই সময় অজিতের বিদ্রোহ আসলে ছিল বিজেপিকে ফাঁদে ফেলার কৌশল ৷ কারণ, রাষ্ট্রপতি শাসন জারি থাকায় মহাবিকাশ আঘাড়ি সরকার শপথ নিতে পারছিল না ৷ অজিত বিদ্রোহের কথা বলায় রাষ্ট্রপতি শাসন তুলে নিয়ে মাঝরাতেই শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান হয় ৷ কিন্তু পরে তিনি সরে আসায় বিজেপিই ধাক্কা খায় ৷ তাই তাঁকে আবার বিজেপি বিশ্বাস করবে কি না, সেটাই দেখার ৷