নয়াদিল্লি, 16 মার্চ: আবগারি মামলায় সিবিআইয়ের তলবে সাড়া দিলেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল ৷ রবিবার সকালে রাজঘাট ঘুরে সিবিআই দফতরে যান আম আদমি পার্টি (আপ) প্রধান ৷ আর কেজরিওয়াল সিবিআই দফতরে ঢুকতেই বাইরে পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ভগবন্ত মানের নেতৃত্বে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে আপ নেতা-কর্মী-সমর্থকরা ৷ কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার দফতরের পাশাপাশি নয়াদিল্লির একাধিক জায়গায় এদিন প্রতিবাদ-বিক্ষোভে সামিল হন তাঁরা ৷
এদিন সকাল 11টা নাগাদ সিবিআইয়ের সদর দফতরে যান কেজরিওয়াল ৷ তার আগে রাজঘাটে গিয়ে মহাত্মা গান্ধির স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা জানান তিনি ৷ অবশ্য এদিন সকালে টুইটারে একটি পাঁচ মিনিটের ভিডিয়ো বার্তায় কেজরিওয়াল সংশয় প্রকাশ করেছিলেন, কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে হয়তো তাঁকে গ্রেফতার করার নির্দেশ দিয়েছে বিজেপি । পাশাপাশি কেজরিওয়াল এও জানান, তিনি আবগারি মামলায় সিবিআইয়ের যাবতীয় প্রশ্নের সততার সঙ্গে উত্তর দেবেন ৷ কারণ হিসাবে তাঁর ব্যাখ্যা ছিল, তাঁর কাছে লুকানোর কিছু নেই ।
এদিন সকাল থেকেই কেজরিওয়ালের সঙ্গে পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ভগবন্ত মান ছাড়াও দিল্লি মন্ত্রিসভার বেশ কয়েকজন মন্ত্রীও ছিলেন ৷ সিবিআইয়ের সদর দফতরে পৌঁছনোর পর, কেজরিওয়ালকে কেন্দ্রীয় সংস্থার দুর্নীতি দমন শাখার প্রথম তলার অফিসে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে খবর ৷ একদিকে যখন কেজরিওয়ালকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছেন সিবিআই আধিকারিকরা, তখনই সিবিআই দফতরের বাইরে প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে দেখা যায় ভগবন্ত মান, দিল্লির মন্ত্রী সৌরভ ভরদ্বাজ, কৈলাস গেহলট, আপ সাংসদ সন্দীপ পাঠক, রাঘব চাড্ডা এবং সঞ্জয় সিং-সহ শীর্ষ আপ নেতাদের ৷ যদিও বেলা গড়াতেই সিবিআই দফতরের সামনে থেকে আপ নেতাদের কার্যত জোর করে তুলে দেয় পুলিশ ৷ পাশাপাশি রাঘব চাড্ডা-সহ বেশ কয়েকজন আপ নেতাকে গ্রেফতারও করে পুলিশ ৷ এদিন ভগবন্ত মান বলেন, "যাই হয়ে যাক না কেন আমরা কেজরিওয়ালের সঙ্গে আছি ৷ আমরা সারাজীবন অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে সমর্থন করে যাব।"
শুধু সিবিআই দফতর নয়, মুখ্যমন্ত্রী কেজরিওয়ালকে সিবিআই তলবের বিরুদ্ধে আপ কর্মীরা রাজধানীর একাধিক জায়গায় বিক্ষোভ দেখাতে থাকে ৷ যার জেরে নয়াদিল্লির একাধিক গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা আনন্দ বিহার টার্মিনাল, আইটিও চক, মুকারবা চক, পেরা গড়ি চক, লাডো সরাই চক, ক্রাউন প্লাজা চক, দ্বারকা মোড়, সুভাষনগর মোড়ে যানজট দেখা যায় । সেই সঙ্গে আপের এই বিক্ষোভের আঁচ পড়ে নয়াদিল্লি রেলওয়ে স্টেশন, আজমেরি গেটে বড় হনুমান মন্দির, করোল বাগ চক, কাশ্মীরি গেট, রাজঘাট এলাকাতেও ৷ যদিও একাধিকস্থানে পুলিশ বিক্ষোভকারীদের দ্রুত হটিয়ে যান চলাচল স্বাভাবিক করার চেষ্টা করে ৷
আরও পড়ুন: আতিক খুনে উদ্বিগ্ন কেন্দ্র, সাংবাদিকদের জন্য নয়া এসওপি আনছে শাহের মন্ত্রক
এই বিষয়ে দিল্লি পুলিশের এক উচ্চপদস্থ আধিকারিক বলেন, "বিক্ষোভের আশংকায় এবং অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে আমরা বিভিন্ন জায়গায় পর্যাপ্ত ফোর্স মোতায়েন করেছি । তবে ইতিমধ্যেই প্রচণ্ড যানজটের সৃষ্টি হয়েছে । বিক্ষোভকারীদের আমরা সরে যেতে বলেছি ৷ কিন্তু এরপরও তারা নিজেদের অবস্থানে অনড় থাকলে এবং আমাদের সঙ্গে সহযোগিতা না করলে, আমরা তাদের জোর করে সরিয়ে দিতে বাধ্য হব ৷"