জবলপুর (মধ্যপ্রদেশ): মধ্যপ্রদেশের জবলপুরের একটি গ্রামে ছোটদের শিক্ষিত করার জন্য অনন্য পদ্ধতি নিয়েছেন এক স্কুল শিক্ষক ৷ আর তাঁর সেই পদ্ধতি মুগ্ধ করেছে সবাইকে ৷ ওই শিক্ষক শিক্ষার্থীদের শিক্ষিত করার জন্য গ্রাফিতি অর্থাৎ, চিত্রাঙ্কনের মাধ্যমে পড়ানোর কৌশলকে বেছে নিয়েছেন (Teacher Chosen Graffiti to Educate Students of Dharampur Village in Jabalpur) ৷ তিনি গ্রামের প্রতিটি বাড়ির দেওয়ালকে ব্ল্যাক বোর্ডে রূপান্তরিত করে পড়াশোনা সংক্রান্ত ছবি এঁকেছেন ছোটদের শেখানোর জন্য ৷ ফলত, জবলপুরের ধর্মপুর গ্রামটিই একটি স্কুলে পরিণত হয়েছে (A teacher turns the whole village into a school) ৷ আর এই অনন্য কাজটি করেছেন স্কুল শিক্ষক দীনেশ মিশ্র ৷
ধর্মপুর গ্রামের প্রতিটি জায়গার দেওয়াল গ্রাফিতিতে ছেয়ে গিয়েছে ৷ যেখানেই তাকানো যাক না কেন, শুধুই রঙিন দৃশ্য ৷ কোথাও জ্যামিতি, কোথাও বা ভৌগোলিক চিত্র আবার কোথাও ইতিহাস ৷ গ্রামের প্রতি দেওয়াল শিক্ষণীয় ছবিতে ভরা ৷ আর যে কটা দেওয়াল ফাঁকা রয়েছে, সেখানে শিক্ষা সংক্রান্ত কিছু না কিছু লেখা হচ্ছে ৷
জবলপুরের ধর্মপুর গ্রামের এই রূপ বদলকারী শিক্ষকের নাম দীনেশ মিশ্র ৷ সাধারণত, মধ্যপ্রদেশের সরকারি স্কুলের ক্ষেত্রে শৃঙ্খলার অভাব এবং শিক্ষকদের পড়ুয়াদের পড়াশোনায় যথেষ্ঠ নজর না দেওয়ার অভিযোগ ওঠে ৷ কিন্তু, মধ্যপ্রদেশের কয়েকজন শিক্ষক সেই চিন্তাধারাকে বদলের চেষ্টা করছেন ৷ তাঁদের মধ্যেই একজন হলেন দীনেশ কুমার ৷ যিনি ধর্মপুর গ্রামের রূপটাই বদলে দিয়েছেন ৷ যেখানে প্রতিটি দেওয়ালে কিছু না কিছু শিক্ষণীয় বিষয় রয়েছে ৷ রয়েছেন গঠনমূলক চিন্তাধারার বহিঃপ্রকাশ ৷ আর এমন অভিনব পদ্ধতিতে পড়াশোনায় আরও উৎসাহ বেড়েছে ছোটদের মধ্যে ৷ দীনেশ মিশ্র পড়ুয়াদের প্রিয় শিক্ষক হয়ে উঠেছেন ৷
আরও পড়ুন : Nayagram Primary School : স্কুল না পার্ক ? নয়াগ্রামে নজর কাড়ছে প্রাথমিক বিদ্যালয়
ইটিভি ভারতকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি জানিয়েছেন, করোনার সময় তিনি যখন ‘মহল্লা’ ক্লাস চালু করেছিলেন ৷ সেই সময় সব পড়ুয়া ক্লাসে আসত না ৷ আর এর প্রধান কারণ ছিল, অধিকাংশ গ্রামবাসী ভোরবেলা কাজে বেরিয়ে যান এবং সঙ্গে তাঁদের ছেলেমেয়েদের নিয়ে যান ৷ যাতে জীবনধারণের জন্য ছোটরাও কাজ করে এবং উপার্জন করতে পারে ৷ আর তখনই দীনেশ মিশ্র ঠিক করেন, গ্রামের কোনও বাচ্চাই শিক্ষার অধিকার থেকে বঞ্চিত হবে না ৷ আর তাই তিনি সিদ্ধান্ত নেন, গ্রামের প্রতিটি দেওয়ালকে তিনি ব্ল্যাক বোর্ডে পরিণত করবেন (Every Wall of Dharampur Village Became Black Board) ৷ আর সেই দেওয়ালগুলিতে থাকবে গ্রাফিতি অর্থাৎ, চিত্রাঙ্কনের মাধ্যমে শিক্ষা প্রদান করা হবে ৷
দীনেশ মিশ্রর শিক্ষার এই অভিনব উপায় জবলপুরের সর্বত্র প্রশংসিত হচ্ছে ৷ তাঁদের মতে, এমন একজন শিক্ষক প্রতিটি স্কুলে প্রয়োজন ৷ দেশের প্রতিটি সরকারি স্কুলের শিক্ষকরা যদি দীনেশ কুমারের মতো করে ভাবতে শুরু করেন ৷ তাহলে প্রতিটি সরকারি স্কুলের মানন্নোয়ন শুধু সময়ের অপেক্ষা ৷