দিল্লি, 23 জানুয়ারি : দিল্লি সীমান্তে আন্দোলনরত কৃষকদের খুনের পরিকল্পনা ! প্রজাতন্ত্র দিবসে কোনওরকম বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হলেই কৃষক নেতাদের খুন করার উদ্দেশে পাঠানো হয়েছে দুটি দলকে ৷ মঙ্গলবার প্রজাতন্ত্র দিবসের অনুষ্ঠান বানচাল করার চেষ্টা করলেই চার কৃষক নেতার দিকে ধেয়ে আসত গুলি ৷ শুক্রবার সিঙ্ঘু সীমান্তে কৃষকদের পাকড়াও করা এক ব্যক্তির দাবি ঘিরে শোরগোল পড়ে গেছে ৷
কৃষি আইন প্রত্যাহারের দাবি পূরণ না হলে 26 জানুয়ারি ট্রাক্টর মিছিলের হুমকি দিয়েছে কৃষক সংগঠনগুলি ৷ সেই মিছিল ঘিরে চলছে প্রস্তুতি ৷ এদিকে দিল্লি পুলিশ মিছিলের অনুমতি দেবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে ৷ আন্দোলনরত কৃষক ও দিল্লি পুলিশের এই টানাপোড়েন মধ্যেই ঘটল চাঞ্চল্যকর ঘটনা ৷ গতকাল রাতে সন্দেহজনক এক ব্যক্তিকে পাকড়াও করেন আন্দোলনরত কৃষকরা ৷ যার দাবি, চার কৃষক নেতাকে খুন করার জন্য তাকে পাঠানো হয়েছে ৷ রাতেই ওই ব্যক্তিকে সংবাদমাধ্যমের সামনে নিয়ে আসেন কৃষক নেতারা ৷ তাঁদের দাবি, মুখোশের আড়ালে থাকা ওই ব্যক্তি স্বীকার করেছে যে তাকে এবং তার দলের সদস্যদের পুলিশের বেশে ভিড়ে মিশে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল ৷ ট্রাক্টর মিছিলের সময় কোনওরকম বিশৃঙ্খলা দেখলেই গুলি চালাতে বলা হয় ৷ এই পরিকল্পনার সঙ্গে জড়িত থাকা এক পুলিশ আধিকারিকের কথাও প্রকাশ্যে এনেছে ওই ব্যক্তি ৷
সংবাদমাধ্যমের সামনে মুখ ঢাকা ওই ব্যক্তির দাবি, দুটি জায়গায় তাদের টিমকে অস্ত্র দেওয়া হয়েছে ৷ তার আরও দাবি, 26 জানুয়ারির ট্রাক্টর মিছিলের সময় দলের অর্ধেক সদস্যের পুলিশের উর্দি পরে কৃষকদের ভিড়ে মিশে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল ৷ তাদের চারজনের ছবি দেওয়া হয় যাদের উপর গুলি চালানোর নির্দেশ ছিল ৷ তাঁরা চারজনই এখন উপস্থিত রয়েছেন ৷ যার এই পরিকল্পনা তিনি একজন পুলিশ আধিকারিক ৷
কী ছিল পরিকল্পনা ?
ওই ব্যক্তির দাবি, সে গত 19 জানুয়ারি থেকে সিঙ্ঘু বর্ডারে রয়েছে ৷ আন্দোলনরত কৃষকদের কাছে অস্ত্র রয়েছে কি না তা খুঁজে বের করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল তাকে ৷ আর 26 জানুয়ারির জন্য আলাদা পরিকল্পনা ছিল ৷ আরও একটি দলকে আন্দোলনকারীদের ভিড়ে মিশে যেতে বলা হয়েছিল ৷ কৃষকরা ট্রাক্টর মিছিল শুরু করার উদ্যোগ নিলেই তাদের উপর গুলি চালানোর নির্দেশ দেওয়া হয় ৷ যদিও তার আগে একবার সতর্ক করে দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল ৷ না থামলে টিমের দশজন সদস্যকে প্রথমে হাঁটুতে ও পরে পিছন থেকে গুলি করার নির্দেশ দেওয়া ছিল ৷ যাতে মনে হয় কৃষকরা আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে দিল্লিতে মিছিল করছিল ৷
টাকার জন্যই একাজে রাজি হয়েছে বলে জানিয়েছে ধৃত ব্যক্তি ৷ তার কথায়, আমরা টাকার জন্য কাজ করছি ৷ সবাইকে দশ হাজার টাকা করে দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল ৷ আমি অনুরোধ করব যাতে আমাদের পরিবারকে এই বিষয়ে না জানানো হয় ৷
যদিও এই পরিকল্পনায় পুলিশের যুক্ত থাকার দাবিকে উড়িয়ে দিয়েছেন হরিয়ানার সোনপতের রাই পুলিশ স্টেশনের এসএইচও ৷ তিনি বলেছেন, দাবি করা ওই ব্যক্তি নিজেই এই পরিকল্পনা করেছে ৷ কৃষকদের মিছিলে পুলিশের কোনও ভূমিকা নেই ৷
ওই ব্যক্তিকে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছেন কৃষকরা ৷ ব্যক্তির দাবি সত্যি কি না তা জানতে তদন্তে নেমেছে পুলিশ ৷