ETV Bharat / bharat

ভয়ঙ্কর বিপর্যয়ের স্মৃতি বুকে চেপে 8 বছর পার কেদারনাথের

author img

By

Published : Jun 16, 2021, 6:31 PM IST

Updated : Jun 16, 2021, 7:43 PM IST

আজ থেকে ঠিক 8 বছর আগে প্রকৃতির রুদ্ররোষ নেমে আসে উত্তরাখণ্ডে ৷ মেঘ ভাঙা বৃষ্টি ও হড়পা বানে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয় কেদারনাথ ৷ প্রাণ যায় 4000-এরও বেশি মানুষের ৷

8th-anniversary-of-kedarnath-disaster
ভয়ংকর বিপর্যয়ের অষ্টম বর্ষপূর্তিতে ফিরে দেখা কেদারনাথ

দেরাদুন ও রুদ্রপ্রয়াগ, 16 জুন : উত্তরাখণ্ডের ইতিহাসে কালো দিন হিসেবে চিহ্নিত 16 জুন ৷ আজ থেকে ঠিক 8 বছর আগে 2013 সালের আজকের দিনেই উত্তরাখণ্ডের বুকে নেমে আসে চরম বিপর্যয় ৷ প্রকৃতির রুদ্ররোষে শ্মশানে পরিণত হয় কেদারনাথ উপত্যকা ৷ মেঘ ভাঙা বৃষ্টি ও তার জেরে হওয়া হড়পা বানে ধ্বংসস্তূপের চেহারা নেয় হিন্দুদের পূণ্যভূমি ৷ প্রাণ যায় 4000-এরও বেশি মানুষের ৷ তবে অসমর্থিত সূত্র বলছে, মৃত্যুমিছিল আরও দীর্ঘ ছিল ৷ কয়েক হাজার মানুষ ঘরছাড়া হন, লক্ষ লক্ষ মানুষ হারান তাঁদের জীবিকা ৷ শুধু ভারতীয়রাই নন, বহু বিদেশি পর্যটকও বেঘোরে প্রাণ হারান ৷

ঠিক কী হয়েছিল ?

সে বছর 14 থেকে 17 জুন নজিরবিহীন বৃষ্টি আছড়ে পড়ে কেদারনাথের উপর ৷ মেঘভাঙা বৃষ্টিতে চোলাবাড়ি লেক উপচে গিয়ে প্রবল হড়পা বান আসে ৷ মুহূর্তে ভেসে যায় গোটা এলাকা ৷ স্রোতের মতো ধেয়ে আসে জল ৷ তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়তে থাকে কংক্রিটের বাড়ি ৷ মুহূর্তে তলিয়ে যান বহু মানুষ ৷ আর প্রাণ হাতে করে উদ্ধারকারী দলের অপেক্ষায় আকাশের নীচে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করতে থাকেন লক্ষ লক্ষ মানুষ ৷

8th-anniversary-of-kedarnath-disaster
হড়পা বানে বিপর্যয়

যুদ্ধকালীন তৎপরতায় উদ্ধারকাজ

সম্মিলিতভাবে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় উদ্ধারকাজ চালায় সেনাবাহিনী, বায়ুসেনা, নৌসেনা, ইন্দো-টিবেটান বর্ডার পুলিশ, পাবলিক ওয়ার্কস ডিপার্টমেন্ট ও স্থানীয় প্রশাসন ৷ জাতীয় সড়কে যানচলাচল বন্ধ রাখা হয় ৷ হেলিকপ্টারে চলে উদ্ধারকাজ ৷

আরও পড়ুন: গণপরিবহণ বন্ধ রেখেই খুলল অফিস, সরকারি সিদ্ধান্তে মিশ্র প্রতিক্রিয়া

উদ্ধার চালানোর সময় তিনটি হেলিকপ্টার দুর্ঘটনার কবলে পড়লে তখন আবার 23 জনের মৃত্যু হয় ৷ তবে তাতে থমকে না-গিয়ে বায়ুসেনা এয়ারলিফ্ট করে কেদারনাথ ধামের কয়েক হাজার মানুষের প্রাণরক্ষা করে ৷

8th-anniversary-of-kedarnath-disaster
শ্মশানভূমিতে পরিণত কেদারনাথ

কেদারনাথ পুনর্নির্মাণ

ধীরে ধীরে বিরাট এই বিপর্যয়ের রেশ কাটিয়ে উঠে শুরু হয় কেদারনাথ পুনর্নির্মাণের কাজ ৷ গৌরীকুণ্ড থেকে কেদারনাথ যাওয়ার রাস্তা মেরামত করাই ছিল প্রথম চ্যালেঞ্জ ৷ 2014 সালে তৈরি হয় সেই রাস্তা ৷ এরপর যুদ্ধকালীন তত্পরতায় চলে হেলিপ্যাড ও কটেজগুলি পুনর্নির্মাণের কাজ ৷ 2015 সালে ভিআইপি হেলিপ্য়াড ও একটি নিরাপত্তা প্রাচীর তৈরি করা হয় ৷ মন্দাকিনী ও সরস্বতী নদীর উপর একটি ঘাটও তৈরি করা হয় ৷

প্রথম 3-4 বছর নেহরু মাউন্টেনিয়ারিং ইনস্টিটিউট পূনর্নির্মাণের দায়িত্বে ছিল ৷ তাদের পর এই দায়িত্ব গিয়ে পড়ে জিন্দাল গ্রুপের উপর ৷ বর্তমানে উত্তরাখণ্ডে চলছে তিনটি বড় প্রকল্প - আদি গুরু শঙ্করাচার্য সমাধি স্থল, তীর্থ পুরোহিত ভবন ও আস্থা পীঠ ৷

ভয়ঙ্কর বিপর্যয়ের স্মৃতি বুকে চেপে 8 বছর পার কেদারনাথের

আরও পড়ুন: ভুয়ো খবর ছড়ানোয় অভিযুক্ত টুইটার, হারাল আইনি রক্ষাকবচ

মোদির কেদারনাথ দর্শন

কেদারনাথের উপর গভীর বিশ্বাস রয়েছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিরও ৷ আশি ও নব্বইয়ের দশকে গড়ুর চটিতে তাঁকে তপস্যাও করতে দেখা গিয়েছে ৷ প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর তিনি তিনবার কেদারনাথ গিয়েছেন ৷ সেখানে তাঁর স্বপ্নের পাঁচ প্রকল্পের মধ্যে দুটি ইতিমধ্যেই বাস্তবায়িত হয়ে গিয়েছে ৷ 2019 সালের মে মাসে কেদারনাথের গুহায় টানা 17 ঘণ্টা ধ্যানমগ্নও থাকতে দেখা গিয়েছে নরেন্দ্র মোদিকে ৷

বাড়ল পূণ্যার্থী

পুনর্নির্মাণের পর ধীরে ধীরে আগের চেহারা ফিরে পায় কেদারনাথ ৷ তীব্র লড়াইয়ের পর আবারও একটু একটু করে জীবন-জীবিকা গুছিয়ে নেন স্থানীয় মানুষ ৷ 2019 সালে সর্বাধিক তীর্থযাত্রীর সাক্ষী থাকে কেদারনাথ ৷ বাবা কেদার দর্শনে 7,32,241 জন তীর্থযাত্রী সেখানে গিয়ে নয়া রেকর্ড স্থাপন করেন ৷ দেড় মাসের মধ্যেই সেই রেকর্ড ভেঙে তীর্থযাত্রীর সংখ্যা হয় 7,35,032 ৷ গত বছর এই তীর্থক্ষেত্র দর্শনে যান প্রায় 10 লাখেরও বেশি মানুষ ৷ যেখানে 2000 থেকে 2005 সাল পর্যন্ত প্রতি বছর আড়াই থেকে তিন লাখ তীর্থযাত্রী যেত কেদারনাথে ৷

দেরাদুন ও রুদ্রপ্রয়াগ, 16 জুন : উত্তরাখণ্ডের ইতিহাসে কালো দিন হিসেবে চিহ্নিত 16 জুন ৷ আজ থেকে ঠিক 8 বছর আগে 2013 সালের আজকের দিনেই উত্তরাখণ্ডের বুকে নেমে আসে চরম বিপর্যয় ৷ প্রকৃতির রুদ্ররোষে শ্মশানে পরিণত হয় কেদারনাথ উপত্যকা ৷ মেঘ ভাঙা বৃষ্টি ও তার জেরে হওয়া হড়পা বানে ধ্বংসস্তূপের চেহারা নেয় হিন্দুদের পূণ্যভূমি ৷ প্রাণ যায় 4000-এরও বেশি মানুষের ৷ তবে অসমর্থিত সূত্র বলছে, মৃত্যুমিছিল আরও দীর্ঘ ছিল ৷ কয়েক হাজার মানুষ ঘরছাড়া হন, লক্ষ লক্ষ মানুষ হারান তাঁদের জীবিকা ৷ শুধু ভারতীয়রাই নন, বহু বিদেশি পর্যটকও বেঘোরে প্রাণ হারান ৷

ঠিক কী হয়েছিল ?

সে বছর 14 থেকে 17 জুন নজিরবিহীন বৃষ্টি আছড়ে পড়ে কেদারনাথের উপর ৷ মেঘভাঙা বৃষ্টিতে চোলাবাড়ি লেক উপচে গিয়ে প্রবল হড়পা বান আসে ৷ মুহূর্তে ভেসে যায় গোটা এলাকা ৷ স্রোতের মতো ধেয়ে আসে জল ৷ তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়তে থাকে কংক্রিটের বাড়ি ৷ মুহূর্তে তলিয়ে যান বহু মানুষ ৷ আর প্রাণ হাতে করে উদ্ধারকারী দলের অপেক্ষায় আকাশের নীচে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করতে থাকেন লক্ষ লক্ষ মানুষ ৷

8th-anniversary-of-kedarnath-disaster
হড়পা বানে বিপর্যয়

যুদ্ধকালীন তৎপরতায় উদ্ধারকাজ

সম্মিলিতভাবে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় উদ্ধারকাজ চালায় সেনাবাহিনী, বায়ুসেনা, নৌসেনা, ইন্দো-টিবেটান বর্ডার পুলিশ, পাবলিক ওয়ার্কস ডিপার্টমেন্ট ও স্থানীয় প্রশাসন ৷ জাতীয় সড়কে যানচলাচল বন্ধ রাখা হয় ৷ হেলিকপ্টারে চলে উদ্ধারকাজ ৷

আরও পড়ুন: গণপরিবহণ বন্ধ রেখেই খুলল অফিস, সরকারি সিদ্ধান্তে মিশ্র প্রতিক্রিয়া

উদ্ধার চালানোর সময় তিনটি হেলিকপ্টার দুর্ঘটনার কবলে পড়লে তখন আবার 23 জনের মৃত্যু হয় ৷ তবে তাতে থমকে না-গিয়ে বায়ুসেনা এয়ারলিফ্ট করে কেদারনাথ ধামের কয়েক হাজার মানুষের প্রাণরক্ষা করে ৷

8th-anniversary-of-kedarnath-disaster
শ্মশানভূমিতে পরিণত কেদারনাথ

কেদারনাথ পুনর্নির্মাণ

ধীরে ধীরে বিরাট এই বিপর্যয়ের রেশ কাটিয়ে উঠে শুরু হয় কেদারনাথ পুনর্নির্মাণের কাজ ৷ গৌরীকুণ্ড থেকে কেদারনাথ যাওয়ার রাস্তা মেরামত করাই ছিল প্রথম চ্যালেঞ্জ ৷ 2014 সালে তৈরি হয় সেই রাস্তা ৷ এরপর যুদ্ধকালীন তত্পরতায় চলে হেলিপ্যাড ও কটেজগুলি পুনর্নির্মাণের কাজ ৷ 2015 সালে ভিআইপি হেলিপ্য়াড ও একটি নিরাপত্তা প্রাচীর তৈরি করা হয় ৷ মন্দাকিনী ও সরস্বতী নদীর উপর একটি ঘাটও তৈরি করা হয় ৷

প্রথম 3-4 বছর নেহরু মাউন্টেনিয়ারিং ইনস্টিটিউট পূনর্নির্মাণের দায়িত্বে ছিল ৷ তাদের পর এই দায়িত্ব গিয়ে পড়ে জিন্দাল গ্রুপের উপর ৷ বর্তমানে উত্তরাখণ্ডে চলছে তিনটি বড় প্রকল্প - আদি গুরু শঙ্করাচার্য সমাধি স্থল, তীর্থ পুরোহিত ভবন ও আস্থা পীঠ ৷

ভয়ঙ্কর বিপর্যয়ের স্মৃতি বুকে চেপে 8 বছর পার কেদারনাথের

আরও পড়ুন: ভুয়ো খবর ছড়ানোয় অভিযুক্ত টুইটার, হারাল আইনি রক্ষাকবচ

মোদির কেদারনাথ দর্শন

কেদারনাথের উপর গভীর বিশ্বাস রয়েছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিরও ৷ আশি ও নব্বইয়ের দশকে গড়ুর চটিতে তাঁকে তপস্যাও করতে দেখা গিয়েছে ৷ প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর তিনি তিনবার কেদারনাথ গিয়েছেন ৷ সেখানে তাঁর স্বপ্নের পাঁচ প্রকল্পের মধ্যে দুটি ইতিমধ্যেই বাস্তবায়িত হয়ে গিয়েছে ৷ 2019 সালের মে মাসে কেদারনাথের গুহায় টানা 17 ঘণ্টা ধ্যানমগ্নও থাকতে দেখা গিয়েছে নরেন্দ্র মোদিকে ৷

বাড়ল পূণ্যার্থী

পুনর্নির্মাণের পর ধীরে ধীরে আগের চেহারা ফিরে পায় কেদারনাথ ৷ তীব্র লড়াইয়ের পর আবারও একটু একটু করে জীবন-জীবিকা গুছিয়ে নেন স্থানীয় মানুষ ৷ 2019 সালে সর্বাধিক তীর্থযাত্রীর সাক্ষী থাকে কেদারনাথ ৷ বাবা কেদার দর্শনে 7,32,241 জন তীর্থযাত্রী সেখানে গিয়ে নয়া রেকর্ড স্থাপন করেন ৷ দেড় মাসের মধ্যেই সেই রেকর্ড ভেঙে তীর্থযাত্রীর সংখ্যা হয় 7,35,032 ৷ গত বছর এই তীর্থক্ষেত্র দর্শনে যান প্রায় 10 লাখেরও বেশি মানুষ ৷ যেখানে 2000 থেকে 2005 সাল পর্যন্ত প্রতি বছর আড়াই থেকে তিন লাখ তীর্থযাত্রী যেত কেদারনাথে ৷

Last Updated : Jun 16, 2021, 7:43 PM IST
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.