লখনৌ, 19 এপ্রিল: এবার করোনা আক্রান্ত খোদ স্বাস্থ্যকর্মীরাই ৷ উত্তরপ্রদেশের লখনৌয়ে প্রধান হাসপাতালগুলিতে কর্মরত স্বাস্থ্যকর্মীদের 30 শতাংশই কোভিড সংক্রমণের শিকার ৷ এই স্বাস্থ্যকর্মীদের তালিকায় রয়েছেন করোনা রোগীদের চিকিৎসায় জড়িত চিকিৎসক, নার্স, টেকনিশিয়ান, ওয়ার্ড বয় আর প্রশাসনের আধিকারিকরাও ৷
কিং জর্জেস মেডিক্যাল ইউনিভার্সিটি-র এক অভিজ্ঞ চিকিৎসক জানালেন, একদিনে এখানে 40 জন চিকিৎসকের কোভিড পজিটিভ ধরা পড়েছে ৷ এই সংক্রমণ এত দ্রুত ছড়াচ্ছে যে, প্রত্যেকবার একটি দল 14 দিনের জন্য করোনার ডিউটিতে গেলে, অন্ততপক্ষে এক-চতুর্থাংশ সংক্রামিত হয়ে ফিরছেন ৷ ফলে অনেকেই হোম-আইসোলেশনে রয়েছেন, আর কোমর্বিডিটি আছে যাঁদের, তাঁদের হাসপাতালে ভর্তি করা হচ্ছে ৷
রামমনোহর লোহিয়া ইনস্টিটিউট অফ মেডিক্যাল সায়েন্সেস-এ 2000 কর্মীদের মধ্যে কমপক্ষে 600 জন কর্মীর কোভিড পজিটিভ রিপোর্ট এসেছে ৷ এই হাসপাতালের মুখপাত্র ডা. শ্রীকেশ সিং বললেন, "প্রায় 30 শতাংশ কর্মী সংক্রামিত ৷ করোনা রোগীদের চিহ্ণিতকরণের কাজ করতে গিয়ে নন-কোভিড টিমও এবার করোনা সংক্রামিত হতে শুরু করেছে ৷" যদিও এই হাসপাতালের প্রায় সব কর্মীকেই ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে, আর তাঁদের কাজ করার সময় পিপিই কিট, মাস্ক পরতে বলা হয়েছে ৷
আরও পড়ুন: রেমডেসিভির, অক্সিজেনের উৎপাদন ও সরবরাহে নজরদারির সিদ্ধান্ত কেজরিওয়াল সরকারের
একই অবস্থা বলরামপুর হাসপাতালে, গত 72 ঘণ্টায় অন্তত পক্ষে 24 জন কর্মী আক্রান্ত হয়েছেন করোনায় ৷ এঁদের মধ্যে 15 জন চিকিৎসক রয়েছেন ৷ এমনকি স্যানিটাইজেশনের জন্য 48 ঘণ্টা বন্ধ রাখতে হয়েছে পরীক্ষাগারও, জানালেন হাসপাতালের চিকিৎসক ভিকে পাণ্ডে ৷
একদিকে হাসপাতালগুলিতে ভিড় বাড়ছে কোভিড রোগীর, আর অন্য দিকে কমছে চিকিৎসক, নার্স-সহ অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মীদের ৷ স্বাভাবিক ভাবেই সমস্যা হচ্ছে চিকিৎসায় ৷
রবিবারের হিসেব অনুযায়ী ওই দিনেই শুধু 30,596 টি নতুন সংক্রমণের খবর এসেছে, মত্যু হয়েছে 129 জনের ৷ অ্যাডিশনাল চিফ সেক্রেটারি (স্বাস্থ্য) অমিতমোহন প্রসাদ জানান, গত 24 ঘণ্টায় 9,041 জন রোগী সুস্থ হয়েছেন ৷ লখনৌ-সহ এলাহাবাদ, বারাণসী, কানপুর, এটাওয়া, মথুরা, বেরেলি, মোরাদাবাদ, রায় বেরেলি আর গোণ্ডার পরিস্থিতিও যথেষ্ট খারাপ ৷
কোভিড রোগীদের চিকিৎসায় যাতে অক্সিজেনের অভাব না হয়, সে বিষয়ে করোনা-আক্রান্ত হোম আইসোলেশনে থাকা মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ রবিবার রাজ্যের আধিকারিকদের সঙ্গে একটি উচ্চপর্যায়ের বৈঠক করেছেন ৷ নিরাপত্তাবিধি মেনে চলার উপর কড়া নজর রাখতে প্রতিটি জেলাশাসকে নির্দেশ দিয়েছেন রাজ্যপাল আনন্দীবেন প্যাটেলও ৷