নয়াদিল্লি, 12 নভেম্বর: জন্মের মাত্র 18 মাসের মধ্য়েই জীবনযুদ্ধে হার স্বীকার করে নিল হরিয়ানার মাহিরা (Mahira) ৷ কিন্তু, নিজের জীবন দিয়েই আরও দু'জনকে নতুন করে বাঁচার পথ করে দিল সে ! মৃত্যুর পর ছোট্ট মাহিরার অঙ্গ দান করে দেয় তার পরিবার ৷ আর তাতেই প্রাণ বাঁচে আরও দুই মুমূর্ষুর ৷
হরিয়ানার (Haryana) মেওয়াত জেলার নুহ শহরের বাসিন্দা ছিল দেড় বছরের ফুটফুটে মাহিরা ৷ গত 6 নভেম্বর সন্ধ্যায় অন্য়ান্য দিনের মতোই বাড়ির বারান্দায় খেলা করছিল সে ৷ সেই সময় হঠাৎই নীচে পড়ে যায় মাহিরা ৷ তাতে তার মাথায় গুরুতর চোট লাগে ৷ এত বড় আঘাতে সংজ্ঞা হারায় ছোট্ট মেয়েটা ৷ সেই অবস্থাতেই তাকে এইমসের ট্রমা সেন্টারে নিয়ে আসা হয় ৷ শুরু হয় যমে-মানুষে লড়াই ৷ শেষমেশ তাতে পরাজয় হয় মাহিরার ৷ মৃত্যু হয় তার ৷
আরও পড়ুন: পুনেতে ব্রেন-ডেথ তরুণীর, প্রাণ পেল দুই ভারতীয় সেনা জওয়ান
একরত্তি মাহিরাকে হারিয়ে শোকে বিহ্বল হয়ে পড়েন তার মা ৷ মেয়েকে আর ফিরে পাবেন না, জানতেন তিনি ৷ তবু যদি অন্য কারও শরীরে বেঁচে থাকে মাহিরা ? তাহলে কেমন হয় ? একথা মনে হতেই মাহিরার দেহের প্রধান অঙ্গগুলি-সহ অন্য়ান্য অংশ দান (Organ Donation) করার সিদ্ধান্ত নেন তার মা ৷ মাহিরার লিভার প্রতিস্থাপিত করা হয় 6 বছরের এক শিশুর শরীরে ৷ আর তার দু'টি কিডনিই দেওয়া হয় 17 বছরের এক কিশোরকে ৷ মাহিরার দুই চোখের কর্নিয়া, হৃদযন্ত্রের ভাল্ব পরবর্তীতে ব্যবহারের জন্য সংরক্ষণ করে রাখা হয়েছে ৷ এইমস সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজধানী দিল্লি লাগোয়া এলাকার (NCR) বাসিন্দা হিসাবে এখনও পর্যন্ত মাহিরাই কনিষ্ঠ অঙ্গদাতা (Youngest Organ Donor) ৷
প্রসঙ্গত, 6 নভেম্বরের ভয়াবহ দুর্ঘটনার পর গত 11 নভেম্বর পর্যন্ত মাহিরা মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করেছে ৷ কিন্তু, অনেক চেষ্টা করেও চিকিৎসকরা তাকে বাঁচাতে পারেননি ৷ অবশেষে শনিবার সকালে মাহিরাকে 'ব্রেন ডেথ' (Brain Death) ঘোষণা করা হয় ৷ উল্লেখ্য, গত 6 মাসে এই নিয়ে এইমসে তিনটি শিশুর অঙ্গ দান করা হল ৷ এর আগে রোলি এবং 18 মাসের রিশান্তের অকাল মৃত্যুর পর তাদেরও অঙ্গ দান করার সিদ্ধান্ত নেন পরিবারের সদস্যরা ৷ তাতে আরও কয়েকজনের জীবন বাঁচানো সম্ভব হয় ৷