বসিরহাট, 15 মার্চ: সন্দেশখালি ইস্যু এখনও টাটকা সাধারণ মানুষের মনে ! সেই আবহে বসিরহাট লোকসভা কেন্দ্রে প্রচারে থেকে এবার লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূলের হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ভূমিপুত্র তথা বসিরহাট সাংগঠনিক জেলার তৃণমূলের সভাপতি হাজি নুরুল ইসলাম ৷ বিদায়ী সাংসদ নুসরত জাহানের জায়গায় তিনি এবার প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন ৷ আর এই কেন্দ্রের সন্দেশখালি বিধানসভা এবারের লোকসভায় সবচেয়ে হট-টপিক ৷ ইটিভি ভারতকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে তৃণমূল প্রার্থী জানালেন, সন্দেশখালিতে গিয়ে সেখানকার মানুষের থেকে ক্ষমা চেয়ে নেবেন তিনি ৷
তবে, এতটাও কি সহজ হবে হাজি নুরুল ইসলামের নির্বাচনী লড়াই ? সন্দেশখালিকাণ্ডের আবহে বসিরহাট লোকসভা কেন্দ্র থেকে জেতার ব্যাপারে কতটা আশাবাদীতিনি ? লড়াই কতটা কঠিন ? সন্দেশখালির প্রভাব লোকসভা নির্বাচনে কতটা পড়বে ? কীভাবেই বা তার মোকাবিলা করবেন ? নুসরতের বিরুদ্ধে যে ক্ষোভ-বিক্ষোভ, তা সামাল দিতে পারবেন তিনি ? এসব প্রশ্নের জবাব হাজি নুরুল ইসলাম দিলেন ইটিভি ভারতকে ৷
সাক্ষাৎকারের শুরুতেই সন্দেশখালির মানুষের কাছে ক্ষমা চাওয়ার কথা জানালেন বসিরহাট লোকসভার তৃণমূল প্রার্থী ৷ তিনি বলেন, "দলের কোনও ভুল হয়ে থাকলে সন্দেশখালিতে গিয়ে সেখানকার মানুষের কাছে ক্ষমা চেয়ে নেব ৷ মানুষকে বোঝাব ! বলব, আপনারা মুখ্যমন্ত্রীর উন্নয়ন থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবেন না । সন্দেশখালির মানুষের পাশে আমরা ছিলাম, এখনও আছি ৷ ভবিষ্যতেও থাকব ৷"
প্রশ্ন: বসিরহাটের বিদায়ী তারকা সাংসদ নুসরত জাহানের বিরুদ্ধে আপনাদের দলেরই একাংশের ক্ষোভ-বিক্ষোভ ছিল ৷ তাঁরা চাইছিলেন এবার এই কেন্দ্র থেকে বহিরাগত কাউকে যেন তৃণমূল প্রার্থী না করা হয় ৷ ভূমিপুত্রকেই বেছে নেওয়া হয় দলীয় প্রার্থী হিসেবে ৷ সেই ক্ষোভ-বিক্ষোভের জেরেই কি দল আপনাকে প্রার্থী হিসেবে বেছে নিল ?
বসিরহাটের মানুষকে ধন্যবাদ জানাব ৷ বসিরহাটের মানুষ তৃণমূলের সঙ্গেই রয়েছে ৷ প্রার্থী হিসেবে আমাকে পেয়ে তাঁরা উচ্ছ্বসিত ৷ তাঁদের উদ্দীপনা দেখে আমি আপ্লুত ৷ দল এখানে আমাকে প্রার্থী হিসেবে দাঁড় করিয়েছে ৷ দলের সেই মর্যাদা রাখতে চাই আমি ৷ 2009 সালে এখান থেকেই আমি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে সাংসদ হিসেবে জয়ী হয়েছিলাম ৷ সাংসদ হিসেবে তখন বসিরহাটের মানুষের হয়ে কাজ করেছি ৷ তাঁদের পাশে ছিলাম ৷ তাই মানুষ এবার আগে থেকেই ভোটের ময়দানে নেমে পড়েছে ৷ কাউকে কিছু বলতে হয়নি ৷ নিজেরাই উদ্যোগ নিয়ে প্রচার কর্মসূচি শুরু করে দিয়েছে ৷
প্রশ্ন:সাংসদ হওয়ার পর থেকে নুসরত জাহানকে ঠিক মতো পায়নি বসিরহাটের মানুষ ৷ এনিয়ে দলের অভ্যন্তরেও তাঁকে ঘিরে বারবার প্রশ্ন উঠেছিল ৷ সন্দেশখালিতে এতবড় ঘটনার পরও তারকা সাংসদ সেখানে একবারও যাওয়ার প্রয়োজন মনে করেননি ৷ তাঁর বিরুদ্ধে পোস্টারও পড়েছিল বসিরহাটের বিভিন্ন প্রান্তে ৷ কী বলবেন ?
দেখুন নুসরত জাহান 2019 সালে যখন প্রার্থী হয়েছিলেন, তখন থেকে আমি হাড়োয়া কেন্দ্রের বিধায়ক ৷ সেবারের লোকসভা নির্বাচনে আমার কেন্দ্র থেকে প্রায় 96 হাজার ভোটে এগিয়েছিলেন নুসরত ৷ তাই আমি মনে করি ও এবার প্রার্থী না হলেও, আমার নির্বাচনী প্রচারে নামবে ৷ কথাও দিয়েছে আমাকে ৷ নুসরত একজন তারকা সাংসদ ৷ তাই ওঁর সম্পর্কে আমি কিছু বলব না ৷ তবে মানুষ ভালো-মন্দ বিচার করে ৷ ওঁর সঙ্গে যে সম্পর্ক ছিল, সেই সম্পর্ক বজায় থাকবে ৷
প্রশ্ন:নুসরতের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ কি আপনার ক্ষেত্রে, কিংবা ভোটে কোনও প্রভাব পড়বে ?
আমি মনে করি এর কোনও প্রভাব পড়বে না ৷ তারকা সাংসদ হওয়ায় ও হয়তো ব্যক্তিগত কাজে ব্যস্ত থাকায় ঠিকমতো সময় দিতে পারেনি, একথা ঠিক ৷ এনিয়ে মানুষের একটু দুঃখ ছিল ৷ সেই দুঃখ মিটে গিয়েছে আমি তৃণমূল প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করায় ৷ গতবারের জয়ের মার্জিন ধরে রাখতে পারব বলে আশা করছি ৷
প্রশ্ন: বসিরহাট লোকসভার অন্তর্গত সাতটি বিধানসভার বেশিরভাগই সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষজন বসবাস করেন ৷ প্রায় 49 শতাংশ সংখ্যালঘু ভোট রয়েছে এখানে ৷ এবারও কি সংখ্যালঘু ভোট আপনার পক্ষেই যাবে ?