রানাঘাট, 18 জানুয়ারি: জমি দখল ও নয়ানজুলি ভরাটে বাধা দেওয়ায় বছর 85-র এক বৃদ্ধাকে মারধর এবং তাঁর হাত ভেঙে দেওয়ার অভিযোগ তৃণমূল নেতা তথা এক প্রোমোটারের বিরুদ্ধে ৷ ঘটনায় বৃদ্ধার ছেলে এবং তাঁর স্ত্রী-কেও মারধর করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে ৷ ঘটনাটি ঘটেছে নদিয়ার ধানতলা থানার হিজুলী-2 গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় ৷
অভিযোগ, অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা অভিজিৎ সরকার ওই বৃদ্ধার এক আত্মীয়ের জমি দখল করার চেষ্টা করছিলেন ৷ এর পাশাপাশি, জমির সংলগ্ন একটি নয়ানজুলিতে মাটি ফেলে, তা বুজিয়ে দিচ্ছিলেন ৷ সেই ঘটনার প্রতিবাদ করেন বৃদ্ধা এবং তাঁর ছেলে ও পুত্রবধূ ৷ অভিযোগ, প্রোমোটার এবং তাঁর লোকজন পাল্টা তাঁদের উপর হামলা চালায় ৷ বৃদ্ধার ছেলেকে রাস্তায় ফেলে মারধর করা হয় ৷ তাঁকে বাঁচাতে গেলে বৃদ্ধার হাতে আঘাত করা হয় ৷
জমি দখলের প্রতিবাদ করায় বৃদ্ধার হাত ভেঙে দেওয়ার অভিযোগ তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে (ইটিভি ভারত) মারধর করা হয় বৃদ্ধার পুত্রবধূকেও ৷ তিনি বলেন, "জমিটা আমাদের এক আত্মীয়ের ৷ তাঁদের জমিটা নিয়ে সমস্যা চলছে ৷ কিন্তু, ওই প্রোমোটার আজকে লোকজন নিয়ে এসে জমি দখল করে ৷ পাশের জলাজমিতেও মাটি ফেলে ৷ আমরা বাধা দেওয়ায় মারধর করে ৷ আমার শাশুড়ির হাত ভেঙে দিয়েছে ৷ স্বামীকেও মারধর করেছে ৷ আমাকে ধাক্কা মেরে মাটিতে ফেলে দেয় ৷ হাতেও মেরেছে ৷"
বৃদ্ধা এবং তাঁর ছেলে রানাঘাট মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে ৷ ধানতলা থানায় অভিজিৎ সরকারের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন তাঁরা ৷ যদিও, পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেনি বলে অভিযোগ করেছেন তাঁরা ৷ তবে পুলিশ সূত্রে খবর, অভিযোগ দায়ের হওয়ার পর থেকে অভিজিৎ এবং সঙ্গীরা পলাতক ৷
তবে, এই ঘটনায় তৃণমূলের বিরুদ্ধে প্রোমোটারি ও মাফিয়া-রাজের অভিযোগে সরব হয়েছেন বিজেপির নদিয়া দক্ষিণ সাংগঠনিক জেলার মুখপাত্র সোমনাথ কর ৷ তিনি বলেন, "তৃণমূলের কাজই তো এটা ৷ প্রোমোটার আর মাফিয়াদের নিয়ন্ত্রণে রেখে সাধারণ মানুষের উপর অত্যাচার চালাচ্ছে ৷ সবাই আতঙ্কে রয়েছে, যে কোনোদিন, যে কারও বাড়ি দখল করে নিতে পারে ৷ পুলিশকে দলদাসে পরিণত করেছে ৷ পুলিশ, মাফিয়া আর প্রোমোটারদের দিয়ে রাজ্যে অরাজকতার পরিবেশ তৈরি করেছে ৷ সামনে আরও ভয়ংকর দিন আসছে ৷"
যদিও, শান্তিপুরের তৃণমূলের বিধায়ক ব্রজকিশোর গোস্বামী দাবি করেছেন, "আমি ঘটনাটি শুনেছি ৷ এটা শীর্ষ নেতৃত্বের কাছেও যাবে ৷ অবশ্যই শীর্ষ নেতৃত্ব এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে ৷ বাকি প্রশাসন তার কাজ করবে ৷ তৃণমূল কংগ্রেস এই ধরনের গুন্ডারাজ বরদাস্ত করবে না ৷ আর তৃণমূল কংগ্রেস দলকে সামনে রেখে ব্যক্তিগত স্বার্থ চরিতার্থ করাও যাবে না ৷"
এ বিষয়ে রানাঘাট পুলিশ জেলার সুপার কুমার সানি রাজ বলেন, "বিষয়টি নিয়ে গতকাল অভিযোগ দায়ের হয়েছে পরিবারের তরফে ৷ অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে ৷ সেই মতো ব্যবস্থা নেওয়া হবে ৷"