পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

লাগাতার ধর্ষণের জেরে সন্তান প্রসব নাবালিকার, সশ্রম কারাদণ্ড স্ব-ঘোষিত গুরুদেবের - Minor Girl Raped

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Sep 4, 2024, 10:57 PM IST

Jhargram District Court: ধর্মশিক্ষার নাম করে দিনের পর দিন ধর্ষণ ৷ তার ফলস্বরূপ অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে নাবালিকা ৷ সন্তানের জন্মও হয় ৷ তারপরই ধর্মগুরুর নামে অভিযোগ দায়ের করে নাবালিকার পরিবার ৷ এক বছরের মধ্যে সাজা ঘোষণা করল ঝাড়গ্রাম পকসো আদালত ৷

Jhargram District Court
ঝাড়গ্রাম জেলা আদালত (ইটিভি ভারত)

ঝাড়গ্রাম, 4 সেপ্টেম্বর:নাবালিকাকে ধর্ষণ করার দায়ে স্বঘোষিত গুরুদেবকে 22 বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিল ঝাড়গ্রাম আদালত ৷ বুধবার দুপুরে পকসো আদালতের বিচারক চিন্ময় চট্টোপাধ্যায় এই সাজা ঘোষণা করেন ৷ সাজাপ্রাপ্ত ধর্মগুরুর নাম বাসুদেব পাতর ৷ বয়স 51 ৷ বাড়ি ঝাড়গ্রাম থানা এলাকায় ৷ ধর্মশিক্ষার নামে মাদক খাইয়ে 16 বছরের ওই নাবালিকাকে ধর্ষণ করার অভিযোগ ছিল তার নামে ৷ যার জেরে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে নাবালিকা ৷

ঝাড়গ্রাম পকসো আদালতের নির্দেশের পর অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের বক্তব্য (ইটিভি ভারত)

এই বিষয়ে ঝাড়গ্রাম আদালতের সরকারি আইনজীবী শুভাশীষ দ্বিবেদী বলেন ,"নাবালিকাকে ধর্ষণ করে অন্তঃসত্ত্বা করার ঘটনায় দোষী সাব্যস্ত স্বঘোষিত ধর্মগুরুকে 22 বছরের কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছে ঝাড়গ্রামের পকসো আদালত । এছাড়াও, 25 হাজার টাকা জরিমানা এবং অনাদায়ে আরও 6 মাস জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক । এর পাশাপাশি নাবালিকাকে 3 লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে রাজ্য সরকারকে ।"

জানা গিয়েছে ,বাসুদেবের কীর্তনের দল ছিল । এলাকার লোকজনকে ধর্মশিক্ষা দিতেন তিনি । স্কুল পড়ুয়া নাবালিকাটিও বাসুদেবের বাড়িতে ধর্মশিক্ষার পাঠ নিতে যেত । অভিযোগ ওঠে, ধর্মশিক্ষার নামে বাড়িতে ডেকে মাদক খাইয়ে নাবালিকাকে আচ্ছন্ন করে প্রতিনিয়ত ধর্ষণ করত বাসুদেব । নাবালিকা অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়লে পরিবারের নজরে আসে বিষয়টি । বাসুদেব তখন দাবি করে নাবালিকার পেটে টিউমার হয়েছে । এরপর নাবালিকাকে ঝাড়গ্রাম গভর্নমেন্ট মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে নিয়ে যায় ধর্মগুরু । পরীক্ষার পর ধরা পড়ে নাবালিকা প্রায় 9 মাসের অন্তঃসত্ত্বা রয়েছে । 2023 সালের 21 সেপ্টেম্বর নাবালিকাকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় । পুত্রসন্তান প্রসব করে নাবালিকা ।

অসুস্থতার জন্য 7 দিন চিকিৎসাধীন থাকে নাবালিকা । এরপর গত 28 সেপ্টেম্বর ঝাড়গ্রাম মহিলা থানায় বাসুদেবের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন নাবালিকার বাবা । সেই অভিযোগের ভিত্তিতে সেদিনই বাসুদেবকে গ্রেফতার করে ঝাড়গ্রাম মহিলা থানার পুলিশ । ধৃতের বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও পকসো আইনের 6 ধারায় মামলা রুজু করা হয় । পুলিশ প্রথম দফায় গত বছর 24 নভেম্বর আদালতে চার্জশিট জমা দেয় । বিচারের জন্য আদালত চলতি বছরের 9 জানুয়ারি চার্জ গঠন করে । চলতি বছরের 31 জানুয়ারি থেকে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয় । এর মধ্যেই অভিযুক্তের ডিএনএ পরীক্ষায় পিতৃত্বের প্রমাণ মেলে । এরপর 8 জুলাই পুলিশ অতিরিক্ত চার্জশিট আদালতে জমা দেয় । তদন্তকারী অফিসার প্রতিভা হালদার-সহ মোট 17 জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ করে আদালত । মঙ্গলবার বাসুদেবকে দোষী সাব্যস্ত করেন বিচারক । বুধবার সাজা ঘোষণা হয় ।

এই বিষয়ে ঝাড়গ্রামের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হেড কোয়ার্টার সৈয়দ মহম্মদ মাহমুদুল্লাহ হাসান সাংবাদিক সম্মেলনে করে বলেন,"গত বছর সেপ্টেম্বর মাসের 28 তারিখে ঝাড়গ্রাম মহিলা থানায় নাবালিকাকে ধর্ষণের অভিযোগ হয়েছিল । অভিযোগের 24 ঘণ্টার মধ্যে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয় । পুলিশ খুবই গুরুত্ব সহকারে মামলার তদন্ত করে এবং দোষীকে দোষী সাব্যস্ত করে নির্যাতিতাকে বিচার পাইয়ে দিয়েছে ।"

ধর্ষণে অন্তঃসত্ত্বা নাবালিকাকে ওষুধ দিয়ে গর্ভপাত, দোষী মা-ছেলের 10 বছরের কারাদণ্ড

ABOUT THE AUTHOR

...view details