শান্তিপুর (নদিয়া), 30 নভেম্বর: মর্মান্তিক পরিণতি হল একটি সম্ভাবনাময় ভবিষ্যতের ৷ এক কিশোরীর অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় পুলিশের কাছে যা অভিযোগ করা হয়েছে, তা থেকে এমনটাই মনে হচ্ছে ৷
কী অভিযোগ করা হয়েছে পুলিশের কাছে ? নিহত কিশোরীর বাবার দাবি, তাঁর মেয়ে অপমানে নিজেকে শেষ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ৷ তাই মেয়ের এই মর্মান্তিক পরিণতির জন্য তিনি দায়ী করেছেন তাঁর স্ত্রী ও আরও তিনজনকে ৷
শান্তিপুর থানা (নিজস্ব চিত্র)
স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে যে কী এমন করেছেন মেয়েটির মা, যে তাঁর বিরুদ্ধে এই গুরুতর অভিযোগ করা হচ্ছে ৷ পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনার সূত্রপাত বেশ কয়েকমাস আগে৷ স্বনির্ভর হওয়ার লক্ষ্যে কর্মজগতে প্রবেশ করে পরকীয়া জড়িয়ে পড়েন একাদশ শ্রেণির ওই ছাত্রীর মা ৷ গত এপ্রিলে সেই প্রেমিকের সঙ্গে তিনি ঘর ছাড়েন ৷
এর পর থেকেই মেয়েটি মানসিক টানাপোড়েনের শিকার হয়৷ বন্ধুবান্ধব থেকে সহপাঠী, এমনকী পাড়া-প্রতিবেশীদেরও কটূক্তির শিকার হতে হয় তাকে ৷ তার জেরে মানসিকভাবে ভেঙে পড়ছিল সে ৷ ইতিমধ্যে মেয়েটির বাবা তাঁর স্ত্রীকে বাড়িতে ফিরিয়ে নিয়ে আসেন ৷ অভিযোগ, তার পরও ওই মহিলা বাড়িতে থাকতে রাজি হননি ৷ প্রেমিকের সঙ্গে সংসার করার ইচ্ছে প্রকাশ করে আবারও চলে যান ৷
এর পর ওই কিশোরী মানসিকভাবে আরও ভেঙে পড়েন ৷ যার মর্মান্তিক পরিণতি হয় শুক্রবার রাতে ৷ মেয়েটির বাবা একটি হাসপাতালে নিরাপত্তারক্ষী হিসেবে কাজ করেন ৷ শুক্রবার রাতে বাড়ি ফিরে দেখেন ঘরে ঝুলছে মেয়ের দেহ ৷ পুলিশ গিয়ে দেহ উদ্ধার করে ৷ এক আত্মীয়ের মাধ্যমে মেয়েটির মাকে খবর পাঠানো হয়েছে পরিবারের তরফে ৷ কিন্তু তিনি খবর পেয়েছেন কি না, সেই বিষয়ে পরিবারের কেউ কোনও কথা বলতে পারেননি ৷
ফলে এই নিয়ে মায়ের কোনও বক্তব্য মেলেনি ৷ এদিকে এই ঘটনায় পুরো পরিবারই শোকগ্রস্থ ৷ পুলিশ মেয়েটির অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করেছে ৷ এই ঘটনায় মেয়েটির মা, মায়ের প্রেমিক এবং দুই আত্মীয়র বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয়েছে ৷ এই বিষয়ে শান্তিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক সুব্রত মালাকার বলেন, ‘‘পরিবারের তরফে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের রয়েছে । অভিযোগের ভিত্তিতে পরিবারের সঙ্গে কথা বলে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ । পাশাপাশি যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তাদের খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছে পুলিশ ।’’