দার্জিলিং, 27 জানুয়ারি: উত্তরের চা-বাগানে নেই পস কমিটি ( প্রিভেনশন অফ সেক্সুয়াল হ্যারাজমেন্ট) । আর তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করলেন রাজ্যের মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন লীনা গঙ্গোপাধ্যায় । সোমবার শিলিগুড়ি স্টেট গেস্ট হাউজে সাংবাদিক বৈঠক করে এই নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন তিনি ।
তিনদিনের উত্তরবঙ্গ সফরে এসেছিলেন মহিলা কমিশনের প্রতিনিধিরা । সফরে উত্তরের বিভিন্ন চা-বাগান, হাসপাতাল ও সংশোধনাগার পরিদর্শন করেন তাঁরা । পরিদর্শনের পর স্টেট গেস্ট হাউজে প্রশাসনের আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠকও করেন কমিশনের প্রতিনিধিরা ।
বৈঠকে চা-বাগান এলাকায় আরও বেশি সচেতনতার প্রচারে জোর দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন তাঁরা । তবে চা-বাগানে পস কমিটি না থাকায় দ্রুত একটি করে কমিটি যাতে তৈরি করা হয় সেই নির্দেশও দিয়েছেন কমিটির সদস্যরা ।
রাজ্যের মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন লীনা গঙ্গোপাধ্যায় (নিজস্ব চিত্র) এদিন লীনা গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, "আমরা চা-বাগান পরিদর্শন করেছি। তবে সব চা-বাগান পরিদর্শন করা সম্ভব হয়নি । মেটেলি চা-বাগান পরিদর্শনের পর বিভিন্ন ব্লকের প্রশাসনিক আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক হয় । তবে পরিদর্শনে আমরা একটু আশ্চর্যই হয়েছি । কোনও চা বাগানে পস কমিটিই নেই ৷ এমনকি সেই বিষয়ে কেউ জানেই না । এটা আমাদের অবাক করেছে ।’’
তিনি আরও বলেন, ‘‘আর যৌন নির্যাতনের কারণে অনেক পকসো বা শিশুদের যৌন নির্যাতনের মতো ঘটনা ঘটছে । অনেক ক্ষেত্রে নিজেরাই যুবতীরা স্বেচ্ছায় চলে যাচ্ছে । এটার যদি সচেতনতা হতো বা পস কমিটি তৈরি করা হতো, তাহলে এই ধরনের ঘটনা বন্ধ করা যেতে পারে । কিন্তু সেটার ঘাটতি রয়েছে ।"
তিনি জানান, এই বিষয়ে প্রত্যেক জেলার জেলাশাসককে ওই বিষয়ে তদারকি করার দায়িত্ব দেওয়া হবে, যাতে প্রত্যেক চা-বাগানে ওই কমিটি তৈরি করা হয় । পাশাপাশি প্রত্যেক হাসপাতালে ওয়ান স্টপ সেন্টার নিয়েও এদিন উষ্মা প্রকাশ করেছেন মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন । তিনি জানিয়েছেন, অনেক হাসপাতালে ওয়ান স্টপ সেন্টার নেই বা কিছু হাসপাতালে থাকলেও, সেখানে কোনও অভিযোগ আসছে না । এই ক্ষেত্রেও জেলা প্রশাসনকে আরও বেশি সচেতনতার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ।
উল্লেখ্য, উত্তরবঙ্গের পাহাড়-তরাই-ডুয়ার্সে ছোট বড় মিলিয়ে প্রায় 400টির বেশি চা-বাগান রয়েছে । চা-বাগান এলাকায় এই পস কমিটি মূলত মহিলাদের উপর হওয়া যৌন ও মানসিক নির্যাতনের জন্য তৈরি করার নির্দেশ দিয়েছিল শীর্ষ আদালত । চা-বাগান এলাকায় ওই কমিটি থাকা বাধ্যতামূলক । যৌন নির্যাতনের ঘটনায় নির্যাতিতার সবরকম সাহায্যের পাশাপাশি চা-বলয়ে যৌন নির্যাতনের বিরুদ্ধে প্রচারও করে থাকে ।
প্রায় একইভাবে হাসপাতালের ক্ষেত্রে এই ওয়ান স্টপ সেন্টার কাজ করে থাকে । কোনও হাসপাতালে যৌন নির্যাতনের শিকার কোনও নির্যাতিতা গেলে ওই ওয়ান স্টপ সেন্টারে নির্যাতিতার চিকিৎসা, পুলিশে মামলা রুজু থেকে কাউন্সেলিং সবটার ব্যবস্থা থাকে ।