মালদা, 5 অগস্ট: আশঙ্কা ছিলই ৷ সত্যি হতেও দেরি হয়নি ৷ রবিবার রাত থেকে ফের ভয়াল নদী ভাঙনের মুখে রতুয়া 1 নম্বর ব্লকের মহানন্দটোলা গ্রাম পঞ্চায়েতের কান্তটোলা গ্রাম ৷ আতঙ্কের রেশ ছড়িয়ে গিয়েছে পাশের মুলিরামটোলা, আমিরচাঁদটোলা, জিতুটোলার মতো গ্রামগুলিতেও ৷ গতকাল ভাঙন শুরু হওয়ার পর অনেকে ঘরবাড়ি সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন ৷ পারেননি ৷ চোখের সামনেই নদীতে তলিয়ে গিয়েছে মাথার ছাদ ৷ শুধু দাঁড়িয়ে দেখেছেন আর চোখের জল মুছছেন ৷
- চৈতন্য মণ্ডল বলছেন, "গতকাল সকাল থেকেই গঙ্গার কাটান শুরু হয়েছিল ৷ এমনভাবে কাটছিল, থামার নামগন্ধ ছিল না ৷ চারদিকে দৌড়োদৌড়ি শুরু হয়ে গিয়েছিল ৷ ভোর পাঁচটা থেকে শুরু করে রাত 11টা পর্যন্ত ভাঙন চলেছে ৷ গ্রামে দু'টো মন্দির রয়েছে ৷ একটা লক্ষ্মীর, অন্যটা বজরংবলীর ৷ এখন মন্দিরের দরজায় চলে এসেছে গঙ্গা ৷ গ্রামের মন্দির ৷ গঙ্গায় চলে যাওয়ার আগে মন্দির ভাঙা হবে কি না, তা নিয়ে গ্রামবাসীরা এখনও সবাই একমত নয় ৷ তাছাড়া মন্দির ভাঙা হলে মালপত্র কোথায় রাখব?"
- তিনি আরও বলেন, "এখন তো আমাদেরই প্রাণ রাখা মুশকিল হয়ে গিয়েছে ৷ দেবতার জিনিসপত্র কোথায় নিয়ে গিয়ে রাখব? আজ রাতেই মন্দির গঙ্গায় চলে যাবে ৷ কাটান শুরু করলে গঙ্গা কোনও সময় দেয় না ৷ তাছাড়া বাড়ি ভাঙার জন্য অনেক লোক চাই ৷ অত লোক কোথায় পাব ৷ আটদিন আগেই গ্রামের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে ৷ সন্ধের পর আমাদের অন্ধকারে থাকতে হয় ৷"
- শুধুই কি বাড়িঘর? পুষ্পা মণ্ডল জানাচ্ছেন, গতকাল চোখের সামনে 10 বিঘা জমি নদীতে চলে গেল ৷ এখন বাড়ি আর নদীর দূরত্ব 10 মিটার ৷ এই বাড়ি কি আর থাকবে? গতকালের ভাঙনে ভিটেমাটি কেটে গিয়েছে বলরাম মণ্ডলেরও ৷ তিনি বলেন, "গতকাল থেকে গঙ্গা পাড় কাটতে শুরু করেছে ৷ কোনও পঞ্চায়েত সদস্য কিংবা প্রধান একবারের জন্যও আমাদের দশা দেখতে আসে না ৷ সবার কাছে আমার অনুরোধ, শুধু পাথর দিয়ে নদীটা বেঁধে দেওয়া হোক ৷"