সোদপুর, 21 জানুয়ারি: আরজি কর মামলার রায় ঘোষণার পরই সঞ্জয়ের ফাঁসির দাবিতে মঙ্গলবার কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে রাজ্য সরকার । সোমবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, "আমাদের হাতে কেসটা থাকলে ফাঁসি দিয়ে দিতাম ।" মুখ্যমন্ত্রীর এই মন্তব্যের পাল্টা মঙ্গলবার আরজি করে নির্যাতিতার বাবা বলেন, "মুখ্যমন্ত্রীকে অত ব্যস্ত হতে হবে না । আমরাই যা করার করব ! উনি এতদিন যা করেছেন…আর যেন না করেন । এটাই আমাদের অনুরোধ ।"
মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্যের বিরোধিতা করে এদিন আরজি করে নিহত চিকিৎসক ছাত্রীর বাবা আরও বলেন, "মুখে ওই সব কথা উনি বলতে পারেন । ওঁর সিপি-এসিপি উপস্থিত থেকেই তো সব তথ্য প্রমাণ লোপাট করেছে । উনি সেগুলি দেখতে পাচ্ছেন না প্রথম থেকে ?” এরপরই আরজি কর মামলার রায়ের প্রসঙ্গে বলেন, "রায়ের কপি এখনও আমরা হাতে পাইনি । আগামিকাল হাতে পাব ! তারপর সিদ্ধান্ত নেব উচ্চ আদালতে আদৌ যাব কী না ।"
আরজি করে নির্যাতিতার বাবার বক্তব্য (ইটিভি ভারত) সিবিআই সঠিক তথ্য প্রমাণ আদালতে দিতে পারেনি বলেই সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রায়ের ফাঁসি হয়নি বলে মনে করেন নির্যাতিতার বাবা । প্রসঙ্গত, আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনায় দোষী সাব্যস্ত সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রায়'কে সোমবার আমৃত্যু কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছে শিয়ালদা আদালত । নিম্ন আদালতের এই রায় নিয়ে মঙ্গলবার অবশ্য কোনও অসন্তোষের সুর শোনা যায়নি নির্যাতিতা ছাত্রীর বাবার গলায় । বরং, সিবিআইয়ের তদন্ত প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলে তাঁদেরকেই কাঠগড়ায় তুলেছেন । এই বিষয়ে তাঁর বক্তব্য, "নিম্ন আদালতের বিচারকের উপর আমরা পূর্ণ আস্থা রেখেছিলাম । বিচারক তাঁর আস্থা রেখেছেন । সিবিআই দোষী সাব্যস্ত সঞ্জয়ের বিরুদ্ধে ঠিকমতো তথ্য প্রমাণ দিতে পারেনি বলেই তার মৃত্যুদণ্ড হয়নি । বদলে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়েছে সঞ্জয়ের ।"
এদিকে, মাটিগাড়াকাণ্ডের প্রসঙ্গে নির্যাতিতা ছাত্রীর বাবা বলেন, "মাটিগাড়াকাণ্ডে ওই ভদ্রমহিলার সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে । উনি খুবই হতাশ । দেখবেন আগামী দু'মাসের মধ্যে উনি নিজেই অনশনে বসবেন । সে কথা গতকাল আমাকে উনি বলেছেন ।" অন্যদিকে, আদালতের আর্থিক ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ নিয়ে এদিন আরজি করে নিহত চিকিৎসক ছাত্রীর বাবা বলেন, "আইনের সংস্থান অনুযায়ী আর্থিক ক্ষতিপূরণ বাবদ রাষ্ট্রকে নিহতের পরিবারকে যে 17 লাখ টাকা দেওয়ার কথা বলেছেন, আমরা তা নিতে চাইনি । কারণ, আমার মেয়েকে বিকিয়ে দিতে আসিনি । আমরা এখানে বিচার চাইতে এসেছি ।"
প্রসঙ্গত, 21 অগস্ট 2023 সালে মাটিগাড়ার একটি পরিত্যক্ত জমির ভিতরে একটি ঘরে স্কুল ইউনিফর্মে থাকা এক নাবালিকাকে ধর্ষণ করে খুনের ঘটনা ঘটে । সেই ঘটনার এক বছর 14 দিনের মাথায় 2024 সালের 7 সেপ্টেম্বর দোষীর ফাঁসির সাজা দেন বিচারক । কিন্তু চার মাস পেরিয়ে গেলেও সাজা কার্যকর না হওয়ায় নির্যাতিতার মা অনশনে বসবেন বলে জানিয়েছেন ৷