কলকাতা, 4 নভেম্বর: সরকার আমাকে ফাঁসাচ্ছে । আমি কোনও ধর্ষণ করিনি । আদালতের সামনে প্রিজন ভ্যানে তোলার সময় সাংবাদিকদের সামনে চিৎকার করে এমনই বিস্ফোরক দাবি করলেন আরজি করে চিকিৎসক ছাত্রীকে ধর্ষণ ও খুনে ধৃত সঞ্জয় রায় ৷
আজ শিয়ালদা আদালতে তাঁর বিরুদ্ধে চার্জ গঠনের পর যখন তাঁকে প্রিজন ভ্যানে তোলা হচ্ছে, সেই সময় সাংবাদিকদের ক্যামেরার সামনে সঞ্জয় রায় বলেন যে, "আমি কোনও দোষ করিনি । আমি কোনও ধর্ষণ কিছুই করিনি । সরকার আমায় ফাঁসাচ্ছে ।" এর পরেই সঞ্জয়কে প্রিজন ভ্যানে তুলে নিয়ে চলে যায় সিবিআই ।
এই ঘটনায় অনেকেই অভিযোগ করেছিলেন যে, সঞ্জয়কে বলির পাঁঠা করা হচ্ছে ৷ তিনি এই ঘটনায় কোনওভাবে জড়িত থাকলেও, একা তাঁর পক্ষে এই কাজ করা সম্ভব কি না তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেন অনেকে ৷ এদিন সঞ্জয়ের দাবি সেসব সন্দেহই আবার উসকে দিল বলে মনে করা হচ্ছে ৷
আরজি কর মামলায় অন্যতম অভিযুক্ত, কলকাতা পুলিশের সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রায়কে সোমবার শিয়ালদা আদালতে পেশ করা হয় ৷ আদালতে সঞ্জয়ের বিরুদ্ধে চার্জ গঠনের পর যখন তাঁকে প্রিজন ভ্যানে তোলা হচ্ছে, সেই সময় সংবাদমাধ্যমের ক্যামেরার সামনে এসে তিনি বলেন, "আমি কোনও দোষ করিনি ৷ খুন বা ধর্ষণ, কোনও ঘটনাতেই আমি জড়িত নই ৷ সরকার আমাকে ফাঁসাচ্ছে ৷" এর বেশি অবশ্য কিছু বলতে পারেননি তিনি ৷ তাঁকে প্রিজন ভ্যানে তুলে নিয়ে চলে যায় সিবিআই ৷
আরজি কর মামলায় অন্যতম অভিযুক্ত কলকাতা পুলিশের সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রায়কে আজ শিয়ালদা আদালতে পেশ করা হয় । ইতিমধ্যেই টালা থানার প্রাক্তন অফিসার ইনচার্জ অভিজিৎ মণ্ডল এবং আরজি কর হাসপাতালে প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের মোবাইল ফোন রেকর্ড ঘেঁটে তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন যে, তাঁদের মধ্যে বেশ কয়েকবার কথা হয়েছিল । তবে তাঁদের সঙ্গে সঞ্জয় রায়ের কখনও মোবাইলে কথা বলার কোনও রেকর্ড বা তথ্য কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার গোয়েন্দারা এখনও পাননি বলে জানা গিয়েছে ।
এদিকে, আজ আলিপুরে সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা জানায়, প্রথম চার্জশিট দেওয়া হয়েছে । তার মানে এই নয় যে তদন্ত শেষ । তদন্ত এখনও চলছে । এদিন সিবিআইয়ের তরফে দাবি করা হয় যে, সন্দীপ ও অভিজিতের ফোন কলের রেকর্ড তারা পেয়েছে । এরপরে সন্দীপ ঘোষের জামিন চেয়ে তাঁর আইনজীবী ভরা আদালতে দাবি করেন যে, গত 9 অগস্ট যে ঘটনাটি ঘটেছে, তার জন্য সন্দীপ ঘোষ টালা থানার তৎকালীন ওসি-কে বিষয়টি জানানোর জন্যই ফোন করেন ৷ সন্দীপের আইনজীবীর বক্তব্য, সিবিআই সন্দীপের বিরুদ্ধে তথ্যপ্রমাণ লোপাটের যে অভিযোগ এনেছে, সেটা জামিনযোগ্য ।
উল্লেখ্য, গত 9 অগস্ট আরজি কর মেডিক্যালের চারতলার সেমিনার হল থেকে চিকিৎসক ছাত্রীর দেহ উদ্ধার হয় ৷ পরে জানা যায়, তাঁকে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে ৷ ঘটনার তদন্তে নেমে কলকাতা পুলিশ সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রায়কে গ্রেফতার করে ৷ পরবর্তীতে এই মামলার তদন্তভার যায় সিবিআইয়ের হাতে ৷ এই মামলার তদন্ত এগোনোর সঙ্গে সঙ্গে সামনে আসতে থাকে আরজি কর মেডিক্যালের পাহাড় প্রমাণ দুর্নীতির ঘটনাও ৷