কলকাতা, 18 অগস্ট: আরজি কর হাসপাতালে মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় নাগরিক সমাজ পথে নেমেছে। এদিকে, চিকিৎসকদের সেই আন্দোলন গোটা দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। হাসপাতালে জরুরি বিভাগ থেকে শুরু করে বিভিন্ন বিভাগে স্তব্ধ চিকিৎসা পরিষেবা। প্রতিবাদের একটাই দাবি, অভিযুক্তদের গ্রেফতার ও কঠোর শাস্তি দিতে হবে। আর তার জেরে সমস্যায় পড়েছেন রোগী ও তাদের পরিবার-পরিজনরা । চিকিৎসা পরিষেবা না পেয়ে শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটছে অনেক রোগীর। অনেকের মৃত্যুও হয়েছে ৷ এই পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে চিকিৎসকদের কাছে আবেদন জানালেন কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম। প্রশ্ন তুললেন, "অন্যায় যাঁরা করেছেন তাদের শাস্তি হবেই। সেই দাবি আমরা সকলেই করছি। কিন্তু, রোগীরা তো কোনও অন্যায় করেননি ৷ তাঁরা কেন শাস্তি পাচ্ছেন ?"
ঘটনার পর থেকেই তোলপাড় রাজ্য। এমনকী সেই আন্দোলনের আঁচ পড়েছে গোটা দেশে। সরকারের ভূমিকায় পুলিশ প্রশাসনের ভূমিকায় ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন আমজনতা থেকে বিরোধী দল। প্রতিবাদে সামিল হয়েছেন চিকিৎসকরাও। তার উপর চলেছে গুন্ডামি, ভাঙচুর। হয়েছে বদলির নির্দেশ। আন্দোলনের দমাতে প্রশাসনের রক্তচক্ষু সামনে এসেছে বলে দাবি বিরোধীদের। এমন পরিস্থিতিতে অনড় আন্দোলকারী চিকিৎসকরাও। কর্মবিরতির জেরে বিপর্যস্ত পরিষেবা। ভুগছেন নাগরিকরা। সেই পরিস্থিতি এবার স্বাভাবিক করতে আবেদন করলেন কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম।
শনিবার গোটা পরিস্থিতি নিয়ে ফিরহাদ হাকিম বলেন, "আমার মেয়ের মৃত্যু হয়েছে যে ব্যথা, আর ওই চিকিৎসকের মৃত্যুর ব্যাথা আমার বুক থেকে কোনওদিন মিটবে না। কিন্তু তারমানে এই নয় আরও চারজনকে মেরে ফেলবে। চিকিৎসকরা শপথ নিয়েছেন আমাদের সহ নাগরিকদের বাঁচাবেন। তাদের কাছে আবেদন রাখছি আমরা কলকাতাবাসী আজ অসহায়। আমাদের বাড়িতে কারও অসুখ করলে আপনারা ছাড়া কে বাঁচাবে ? আপনারা তো ভগবানের একটা রূপ। চিকিৎসককে আক্রমণ করা ভগবানের রূপকে আক্রমণ করা। সকলকে কলঙ্কিত করা হয়েছে। অন্যায় হয়েছে। আদালত কঠোর শাস্তি দেবে। তার জন্য আরও সহ নাগরিক হারাব সেটা কাঙ্খিত না। হাসপাতালে তাণ্ডব কাঙ্খিত নয়।"
তিনি আরও বলেন, "আমি সব কাজ তো করতে পারি না, কিছু ক্ষেত্রে গাল খাই। কাগজে সমালোচনায় কষ্ট হয়। তার মানে আমি আমার কাজ ছেড়ে দেব ? আমাকে একটা লোক বাজে বলেছে বলে 10টা লোকের ভালো করা ছেড়ে দেব ? অন্যায় হয়েছে বলে এটা নয় যে, আরও চারজনকে শাস্তি দেব।" ফিরহাদ হাকিমের কথায়, "যারা রোগী অন্যায় করেননি তারা কেন শাস্তি পাবেন ? তাদের কেন শাস্তি দিচ্ছেন ? বহু জায়গায় রোজ রোগী যাচ্ছে, যখন ফিরে যাচ্ছে সত্যি আতঙ্ক লাগছে। কোনও সময় কেউ মারা যাবে। অনেকে মারাও গিয়েছেন। দোষী একজন নাকি একাধিক, সেটা জানি না। দোষীর শাস্তি হোক, সেই বিষয়ে একমত সকলে। আমার আতঙ্কিত, বাড়ির লোক, পাড়ার লোক চিকিৎসা না পেলে কী হবে। তাদের চিকিৎসা কেন হবে না ?"