বহরমপুর, 16 অগস্ট: পাকিস্তানের পতাকার উপর ‘পাকিস্তান জিন্দাবাদ’ লেখা পোস্টার পড়ল মুর্শিদাবাদের বহরমপুরে ৷ শুক্রবার সকালে বহরমপুর থানার হাতিনগর এলাকার একটি স্কুলের গেটে এই পোস্টার দেখতে পাওয়া যায় ৷ সেখানে মহিলাদের ধর্ষণের হুমকিও দেওয়া হয়েছে ৷
পাকিস্তানের পতাকার ছবি দিয়ে ধর্ষণের হুমকি পোস্টার, হইচই বহরমপুরে (ইটিভি ভারত) এই পোস্টার নিয়ে রীতিমতো হইচই পড়ে যায় পুরো এলাকায় ৷ খবর যায় পুলিশে ৷ পুলিশ গিয়ে পোস্টার ছিঁড়ে দেয় ৷ যদিও পুলিশ দীর্ঘক্ষণ পর পোস্টার ছেঁড়ে বলে অভিযোগ উঠেছে ৷ কেন এই বিষয়ে পুলিশ উদাসীন হল, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে ৷
কিন্তু কে বা কারা এই পোস্টার দিল জানা যায়নি ৷ বহরমপুর থানার পুলিশ জানিয়েছে, পুরো পরিস্থিতির উপর নজর রাখা হয়েছে । তবে এই ঘটনায় আতঙ্কিত এলাকার মানু ষ৷ তাঁদের বক্তব্য, এই ধরনের হুমকিমূলক পোস্টারে এলাকার সম্প্রীতি নষ্ট হতে পারে ৷ তাছাড়া যেহেতু মহিলাদের ধর্ষণের হুমকি দেওয়া হয়েছে, তা এলাকার নিরাপত্তা জোরদার করার দাবি তুলেছেন স্থানীয় মানুষজন ৷ তাঁদের বক্তব্য, এলাকায় সিসিটিভির নজরদারি বৃদ্ধি করতে হবে ৷
এলাকার বাসিন্দা নারায়ণচন্দ্র মণ্ডল জানান, এই ঘটনায় তাঁরা আতঙ্কিত ৷ রাজ্য সরকারের উপর ভরসা নেই ৷ তাই মুর্শিদাবাদকে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল করা হোক বা বিএসএফ অথবা কেন্দ্রীয় কোনও বাহিনীর নিরাপত্তা দেওয়া হোক ৷
তবে এই নিয়ে রাজনৈতিক তরজাও শুরু হয়েছে ৷ এই নিয়ে বহরমপুরের প্রাক্তন সাংসদ কংগ্রেসের অধীররঞ্জন চৌধুরী বলেন, ‘‘কিছু শক্তি মুর্শিদাবাদের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করার চেষ্টা করছে ৷ বাংলাদেশের ঘটনার পর এর প্রবণতা আরও বাড়তে পারে ৷ কারণ, বাংলাদেশে অনেক ভারত বিরোধী শক্তি, সাম্প্রদায়িক শক্তি, মৌলবাদী শক্তি মাথাচাড়া দিচ্ছে ৷ সেখানে হিন্দুদের উপর হামলা হচ্ছে ৷’’
পাকিস্তানের পতাকার ছবি দিয়ে ধর্ষণের হুমকি পোস্টার (নিজস্ব ছবি) তিনি আরও জানান, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার ও ছাত্ররা বাংলাদেশে সম্প্রীতি বজায় রাখার চেষ্টা করছেন ৷ পশ্চিমবঙ্গেও সম্প্রীতি রক্ষায় সবকিছু করতে প্রস্তুত বলেও তিনি জানিয়েছেন ৷ সবাই একসঙ্গে লড়াই করা হবে বলেও জানিয়েছেন অধীর ৷
অন্যদিকে মুর্শিদাবাদের বিধায়ক বিজেপির গৌরীশঙ্কর ঘোষ বলেন, ‘‘এই ধরনের কাজ যাঁরা করছেন, তাঁদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া উচিত ৷ প্রকাশ্যে শাস্তি দেওয়া উচিত৷ রাজ্যজুড়ে এই ধরনের ঘটনা ঘটছে ৷ প্রশাসন চুপ করে রয়েছে ৷ এখানে আইনের শাসন নেই ৷’’
এই নিয়ে বহরমপুর জেলা তৃণমূলের সাংগঠনিক সভাপতি অপূর্ব সরকার বলেন, ‘‘এই ঘটনা কোনোভাবেই অভিপ্রেত নয় । আমরা জেলা পুলিশকে জানিয়েছি । দোষীদের অবিলম্বে চিহ্নিত করে আইনি পদক্ষেপ করা হোক ।’’