কলকাতা, 18 ডিসেম্বর: নকল পরিচয়পত্র বানিয়ে বাংলাদেশিদের ভারতে অনুপ্রবেশ করানোর অভিযোগ ৷ জাল পাসপোর্ট-কাণ্ডে গ্রেফতার আরও একজন ৷ ধৃতের নাম দীপঙ্কর দাস ৷ তাঁকে কলকাতা থেকে পাকড়াও করলেন লালবাজারের গুন্ডা দমন শাখার গোয়েন্দারা । ধৃতের কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে ইউকে-র একাধিক নকল ভিসা ৷
এই বিষয়ে কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা প্রধান রূপেশ কুমার ইটিভি ভারতকে বলেন, "আমরা মঙ্গলবার পর্ণশ্রী থানা এলাকা থেকে দীপঙ্কর দাস নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছি । তাকে বুধবার আমরা আদালতে পেশ করে নিজেদের হেফাজতে নেব ।"
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, দীপঙ্করের বাড়ি থেকে পাওয়া গিয়েছে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র । ব্যাংক অফ ইন্ডিয়া এবং স্টেট ব্যাংক অফ ইন্ডিয়ার একাধিক নথিপত্র-সহ বেশ কয়েকটি কম্পিউটার ল্যাপটপ ও সিম কার্ড । বাজেয়াপ্ত হওয়া সামগ্রিকগুলির মধ্যে অন্যতম হচ্ছে বেশ কয়েকটি ইউকে-র ভিসা ।
তদন্তে নেমে লালবাজারের গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন, দীপঙ্কর দাসের কাছ থেকে ইতিমধ্যেই একাধিক ব্যক্তি নকল ভিসা পাসপোর্ট এবং আধার কার্ড বানিয়েছে । দীপঙ্করের সঙ্গে বাংলাদেশি জঙ্গি সংগঠনের কোনও যোগ রয়েছে কি না, তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে । এছাড়াও দীপঙ্করকে নিজেদের হেফাজতে নিয়ে জেরা করবে তদন্তকারী আধিকারিকরা ।
ইতিমধ্যেই বাংলাদেশের প্রাক্তন বিএনপি নেতার জাল নথিপত্র দিয়ে ভারতে প্রায় দু'বছর কাটিয়ে দেওয়ার ঘটনায় প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছিল কলকাতা পুলিশকে । বিভিন্নমহল থেকে প্রশ্ন উঠেছিল যে, কীভাবে একজন ব্যক্তি বাংলাদেশ থেকে কলকাতায় তথা ভারতে ঢুকে নকল পরিচয়পত্র বানিয়ে প্রায় দু'বছর কাটিয়ে দিতে পারল ? আর পুলিশ কীভাবে কিছুই জানতে পারল না ? সেই ঘটনার পর থেকে নগরপাল মনোজকুমার ভার্মা কলকাতা পুলিশের এসটিএফ এবং গোয়েন্দা বিভাগকে বিশেষভাবে সতর্ক করেছিলেন ।
প্রসঙ্গত, জাল পাসপোর্ট-কাণ্ডে মঙ্গলবার উত্তর 24 পরগনার বসিরহাট থেকে তারকনাথ সেন নামে পোস্ট অফিসের অস্থায়ী কর্মীকে গ্রেফতার করে এসটিএফ । ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি বিভিন্ন সময়ে নকল পরিচয়পত্র বানিয়ে একাধিক বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের ভারতে আসতে সাহায্য করেছিলেন ।
গোয়েন্দাদের অনুমান, সেই সকল বাংলাদেশ অনুপ্রবেশকারীর মধ্যে একাধিক জঙ্গি সংগঠনের স্লিপার সেলের সদস্যরাও থাকতে পারে । তারকনাথকে জেরা করে তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, 78 জন বাংলাদেশির হাতে তিনি ওই নকল পরিচয়পত্র তুলে দিয়েছিলেন । এবার তারকনাথ সেনের সঙ্গে দীপঙ্করের কোনও লিংক রয়েছে কি না, তা খুঁজে বের করার চেষ্টা করছেন লালবাজারের গোয়েন্দারা ।