কলকাতা, 9 ফেব্রুয়ারি: কবি সুকান্ত ভট্টাচার্য লিখেছেন, "তবু আজ যতক্ষণ দেহে আছে প্রাণ/ প্রাণপণে পৃথিবীর সরাব জঞ্জাল/ এ বিশ্বকে শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি ৷" কিন্তু আমাদের চারপাশে এতো ঘৃণা ও বর্বরতার দেখা দিয়েছে, যে কারণে বর্তমান সমাজ বাসের অযোগ্য হয়ে গিয়েছে বলে মনে করছেন নোবেলজয়ী ভারতীয় কৈলাশ সত্যার্থী ৷
শুক্রবার বারাসতের এক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন নোবেলজয়ী সমাজসেবী। সেখানেই সকল পড়ুয়াদের জীবনে আরও উন্নতি এবং সকল মানুষকে সমান সম্মান করার কথা বলেন তিনি। তখনই সকলের সামনে এই সমস্যা উঠে আসে বলেও জানান তিনি। তাঁর কথায়, ওই মিছিলে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের 100 জনেরও বেশি সাংসদ যোগ দিয়েছিলেন। দিল্লিতে মিছিল শেষ হলে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, সংসদের স্পিকার এবং বিরোধী দলনেতা একসঙ্গে তাঁর কথা শুনতে রাজি হন। তার ঠিক এক বছরের মধ্যে সংবিধানে পরিবর্তন আসে ৷ এরপর কৈলাশ সত্যার্থী পড়ুয়াদের উদ্দেশ্যে বলেন, "বর্তমানে আমাদের চারপাশে যা অবস্থা সেই পরিবেশ একেবারেই বাসযোগ্য নয়। আমাদের চারপাশে বর্তমানে ঘৃণা, বর্বরতা দেখা যাচ্ছে। সেই পরিবেশকে ফের বাসযোগ্য করে তোলার দায়িত্ব আমাদের সকলের।"
ডিগ্রি প্রদান অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে নিজের লড়াইয়ের কথাও তুলে ধরেন। তিনি বলেন, "আমি ভেবেছিলাম, দেশকে যদি এগিয়ে নিয়ে যেতে হয় তবে শিক্ষাকে সর্বজনীন করতে হবে। সেই কারণে আমি সংবিধান সংশোধনের কথা ভাবি। কিন্তু একজন সাধারণ মানুষ হয়ে কাজটা এত সহজ ছিল না। প্রচুর সমস্যার মুখে পড়েও আমি এবং আমার কয়েকজন বন্ধু তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ীর সঙ্গে দেখা করি। বিরোধী দলের সোনিয়া গান্ধি এবং মনমোহন সিংয়ের সঙ্গেও দেখা করি। তাতেও কোনও উপায় না বেরোনোয় 2001 সালে কন্যাকুমারী থেকে কাশ্মীর হয়ে দিল্লি পর্যন্ত মিছিল করেছিলাম আমরা।"
তিনি আরও বলেন, "অন্যের সমস্যা বুঝতে হবে। সমস্যা সমাধান করতে হবে। তোমাদের সকলের মধ্যেই নেতৃত্ব দেওয়ার ক্ষমতা রয়েছে। চ্যাম্পিয়ন হওয়ার ক্ষমতা রয়েছে।" এই কথা বলার সময় নোবেলজয়ীর মুখে উঠে আসে মাদার টেরেসা, কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু থেকে শুরু করে স্বামী বিবেকানন্দের কথা। তিনি জানান, বিদেশ থেকে এখানে এখানকার সমাজের জন্য কাজ করে নোবেল পেয়েছিলেন মাদার টেরেসা। ভারতের হয়ে প্রথম নোবেল পেয়েছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। দেশকে স্বাধীন করার নেপথ্যে বিরাট বড় অবদান ছিল সুভাষচন্দ্র বসুরও।