কলকাতা, 27 এপ্রিল: 15 বছর আগে পরিবার ত্যাগ করেছিলেন স্বামী। স্ত্রীর মৃত্যুর পর একমাত্র মেয়ের সম্পত্তির অধিকারে ভাগ বসাতে আসরে বাবা। অবশ্য শেষ রক্ষা হল না। হাইকোর্ট রায় দিল মা হারা মেয়ের পক্ষেই। কেন্দ্রীয় সরকারের জল সম্পদ বিষয়ক মন্ত্রকে কর্মরত ছিলেন বেহালার পর্ণশ্রীর বাসিন্দা বর্ণালী দে। 2009 সালে বর্ণালীদের স্বামী রাজু দে স্ত্রী এবং তাঁদের একমাত্র কন্যা অনুষ্কাকে ছেড়ে চলে যান।
ছোট অনুষ্কাকে নিয়ে বর্ণালী একাই থাকতেন তাঁদের দক্ষিণ কলকাতার বাড়িতে। কর্মরত অবস্থায় তিনি ব্লাড ক্যান্সারে আক্রান্ত হন। নিজের চিকিৎসা এবং একমাত্র মেয়ের পড়াশোনা বেশ খানিকটা কঠিন করে তুলেছিল তাঁর জীবন। শেষমেশ 2023 সালের 21 মে বর্ণালীর মৃত্যু হয়। অনুষ্কার বয়স তখন 19 বছর। মায়ের মৃত্যুতে অথৈ জলে পড়ে যায় কলেজ ছাত্রী অনুষ্কা।
বর্ণালী দে যেহেতু কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনে কর্মরত ছিলেন তাই তাঁর সমস্ত মৃত্যুকালীন সরকারি ভাতা প্রাপ্য ও মাসিক পেনশনের জন্য আবেদন জানান অনুষ্কা। কারণ হিসেবে তিনি জানান, তাঁর মা মেয়ের নামেই 100 শতাংশ নমিনি করে গিয়েছিলেন। মায়ের অফিস থেকে অনুষ্কাকে বলা হয়, বর্ণালীর স্বামী অর্থাৎ অনুষ্কার বাবাও স্ত্রীর মৃত্যুকালীন সরকারি সুযোগ-সুবিধা পাওয়ার জন্য আবেদন জানিয়েছেন। তিনিও অংশীদার। পাশাপাশি তিনি এও জানিয়েছিলেন, তাঁর একমাত্র কন্যাকে যেন কোনও কিছুই না-দেওয়া হয়।
এই খবর শোনার পর অনুষ্কা মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন। মায়ের অফিস থেকে জানানো হয় 2001 সালে বর্ণালী দে তাঁর স্বামী ও মায়ের নামে 50 শতাংশ করে নমিনি করে গিয়েছিলেন। সে সময় অনুষ্কার জন্ম হয়নি ৷ 2003 সালে অনুষ্কার জন্ম হয়। এরপর 2009 সালে রাজু দে স্ত্রী এবং একমাত্র কন্যাকে ছেড়ে অন্যত্র চলে যান। সেই কারণে 2019 সালে বর্ণালী তাঁর একমাত্র মেয়েকে 100 শতাংশ নমিনি করে দেন ৷
কিন্তু কোনও এক অজানা কারণে বর্ণালীর অফিস কর্তৃপক্ষ অনুষ্কাকে 100 শতাংশ নমিনি হিসেবে মানতে নারাজ। বাধ্য হয়ে অনুষ্কা কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন। হাইকোর্টে মামলা চলাকালীন অনুষ্কার বাবা পালটা মামলা করেন। অনুষ্কার মায়ের অফিস কর্তৃপক্ষ আদালতে হলফনামা দিয়ে জানায়, বর্ণালীর ফাইলে 100 শতাংশ নমিনি করা সংক্রান্ত কাগজ খুঁজে পাওয়া গিয়েছে। তবে অনুষ্কাই 100 শতাংশ নমিনি এমন আবেদন সার্ভিস বুকে লেখা হয়নি। তার জন্যই জটিলতা।