পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / state

সন্দেশখালিতে আদিবাসী তরুণীকে ধর্ষণ ও খুন ! পুলিশের বিরুদ্ধে সরব জাতীয় মহিলা কমিশন - SANDESHKHALI RAPE AND MURDER CASE

রবিবার জাতীয় মহিলা কমিশনের তিনজনের টিম পৌঁছয় নিহত আদিবাসী তরুণীর বাড়িতে । ঘটনায় রিপোর্ট তলব করা হল পুলিশের কাছ থেকে ।

Sandeshkhali rape and murder case
সন্দেশখালিতে নিহত আদিবাসী তরুণীর গ্রামে জাতীয় মহিলা কমিশনের সদস্যরা (নিজস্ব ছবি)

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Dec 8, 2024, 7:40 PM IST

বসিরহাট, 8 ডিসেম্বর: সন্দেশখালিতে আদিবাসী তরুণীর দেহ উদ্ধারের ঘটনার পর 24 ঘণ্টা কেটে গিয়েছে ৷ এরপরও এই ঘটনায় পুলিশ কাউকেই আটক কিংবা গ্রেফতার করতে পারেনি । যার ফলে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে বিভিন্ন মহলে। সেই প্রশ্ন তুলে পুলিশের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন খোদ জাতীয় মহিলা কমিশনের সদস্য তথা বিজেপি নেত্রী অর্চনা মজুমদার ।

রবিবার ওই তরুণীর বাড়িতে যায় জাতীয় মহিলা কমিশনের তিনজনের টিম। নেতৃত্বে ছিলেন অর্চনা। তিনি কথা বলেন মৃতার মায়ের সঙ্গে ৷ তাঁর পাশে থাকার আশ্বাস দেন । এদিন ন‍্যাজাট থানার ওসির সামনেই পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন অর্চনা মজুমদার । এই ঘটনায় পুলিশের কাছে রিপোর্ট তলব করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি । সেই রিপোর্ট পাওয়ার পর তা পাঠানো হবে জাতীয় মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সনের কাছে ।

জাতীয় মহিলা কমিশনের সদস্য অর্চনা মজুমদার (ইটিভি ভারত)

পরে এই বিষয়ে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে অর্চনা বলেন, "সন্দেশখালির এই গ্রামে অন্ধকার নামলেই মদ, গাঁজা, জুয়ার আসর বসে । স্থানীয়রা দীর্ঘদিন ধরে এই অভিযোগ করলেও পুলিশ কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। যার ফল এই ধর্ষণ ও খুনের ঘটনা । তাছাড়া অচেনা অনেকেই এখানে বসবাস করতে শুরু করেছেন । তাঁরা খুব সহজেই পরিচয়পত্র পেয়ে যাচ্ছেন । কোনও নজরদারির ব্যবস্থা নেই পুলিশের। এই সমস্ত বিষয় জানতে চাওয়া হয়েছে থানার ওসির কাছ থেকে ।"

তাঁর কথায়, "আমাদের ধারণা, বহিরাগত কেউ নয় । স্থানীয় কারও হাত রয়েছে ওই আদিবাসী তরুণীকে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় । পুলিশ কী রিপোর্ট দিচ্ছে !সেটা দেখার পর পরবর্তী পদক্ষেপ ঠিক করতে হবে। এটুকু বলব ওই পরিবারের পাশে আমরা রয়েছি ।" পাশাপাশি সন্দেশখালির আদিবাসী তরুণীর মৃত্যুর ঘটনায় রবিবার বিকেলে ফরেনসিকের তিনজনের টিম ঘটনাস্থলে যায় । তারা নমুনা সংগ্রহ করে। গোটা প্রক্রিয়াটি ভিডিয়োগ্রাফি করেন ফরেনসিক আধিকারিকরা । ইতিমধ্যে ঘটনাস্থলের চারদিক দড়ি দিয়ে ঘিরে দেওয়া হয়েছে পুলিশের তরফে ।

চারদিন নিখোঁজ থাকার পর বছর আঠারোর ওই আদিবাসী তরুণীর দেহ হাত,পা ও মুখ বাঁধা অবস্থায় উদ্ধার হয় বাড়ি লাগোয়া পুকুর থেকে । দেহটি জলে ডুবিয়ে দেওয়ার জন্য কোমরে ইটও বাঁধা ছিল । পরে খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে দেহটি উদ্ধার করে ।

প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, আদিবাসী ওই তরুণীকে খুন করে জলে ফেলে দেওয়া হয়েছে । যদিও পরিবারের দাবি, ওই তরুণীকে ধর্ষণ করার পর দেহ লোপাট করতে জলে ফেলে দেওয়া হয়েছিল । আদিবাসী তরুণীর দেহ উদ্ধারের পর থেকেই সরগরম হয়ে উঠেছে সন্দেশখালির ন‍্যাজাট থানার ঘটিহারা গ্রাম ।

পরিবার সূত্রে খবর, স্থানীয় একটি স্কুল থেকে গতবছর তরুণী উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেছিলেন । তার বাবা নেই । মা ও বোনের সঙ্গে তিনিও স্থানীয় এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে থাকতেন । বাড়ির কাছেই ওই পরিবারের একটি খামার রয়েছে । ওই তরুণী ও তাঁর মা খামার দেখাশোনা করতেন ।

4 ডিসেম্বর বিকেলে খামারে গরুর খাবার দিতে যাচ্ছি বলে তিনি বাড়ি থেকে বের হন । তারপর আর বাড়ি ফেরেননি । তরুণীর মা সেদিনই ন্যাজাট থানায় একটি নিখোঁজ ডায়েরিও করেন । তারপর পুলিশের পক্ষ থেকে খোঁজাখুঁজি শুরু হয় । কিন্তু ওই তরুণীর আর কোনও সন্ধান পাওয়া যায়নি । তারপরই শনিবার সকালে খামারবাড়ির পুকুরে ভেসে ওঠে তাঁর দেহ। দেহটি মুখ, হাত ও পা বাঁধা অবস্থায় ছিল বলে জানিয়েছেন পরিবারের সদস্যরা । দেহ উদ্ধারের পরেই দোষীদের কড়া শাস্তির দাবিতে সরব হন তাঁরা ।

ABOUT THE AUTHOR

...view details