মথুরাপুর, 3 এপ্রিল: একসময় মথুরাপুর লোকসভা কেন্দ্র ছিল বামেদের শক্ত ঘাঁটি ৷ লাল দুর্গ মথুরাপুরে 2009 সালে ঘাস ফুল ফোটান চৌধুরী মোহন জাটুয়া । এরপর 2009 সাল থেকে 2019 সাল পর্যন্ত মথুরাপুর লোকসভা কেন্দ্র থেকে দাঁড়িয়ে জয়ের হ্যাটট্রিক করেছেন তৃণমূলের বর্ষিয়ান এই নেতা ৷ তবে বয়সজনিত কারণে 2024-এর লোকসভা নির্বাচনের লড়াই থেকে নিজেকে একপ্রকার সরিয়ে নিয়েছেন বিদায়ী সাংসদ । এ বারের লোকসভা নির্বাচনে এই কেন্দ্র থেকে শাসকদল আস্থা রেখেছে সুন্দরবন সাংগঠনিক জেলা তৃণমূলের যুব সভাপতি বাপি হালদারের উপর । চৌধুরী মোহন জাটুয়ার জয়ের ধারাকে কি এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবেন তৃণমূলের তরুণ তুর্কি ? এলাকার মানুষ কি বিদায়ী সাংসদের দীর্ঘ 15 বছরের রাজত্বকালে সন্তুষ্ট ? নাকি পুঞ্জীভূত ক্ষোভই বাপি হালদারের কাছে বড় চ্যালেঞ্জ ? লোকসভা ভোটের প্রাক্কালে এ সবেরই সুলুকসন্ধান পেতে এই কেন্দ্রের আনাচে কানাচে ঘুরে বেড়িয়েছে ইটিভি ভারত ৷
যতদূর দেখা যাচ্ছে যে, গত পাঁচ বছরে এলাকায় উন্নয়ন হয়নি, এমনটা বলার লোক খুবই কম রয়েছে । কিন্তু এলাকার মানুষের মধ্যে কয়েকটি বিষয় নিয়ে ক্ষোভ রয়েছে । মূলত সুন্দরবনের নদী তীরবর্তী এলাকার মানুষদের নিয়ে মথুরাপুর লোকসভা । এই লোকসভা কেন্দ্রের মধ্যে রয়েছে সাতটি বিধানসভা এলাকা - সাগর বিধানসভা, কাকদ্বীপ বিধানসভা, রায়দিঘি বিধানসভা, পাথর প্রতিমা বিধানসভা, মন্দির বাজার বিধানসভা ও মগরাহাট পশ্চিম বিধানসভা । বেশিরভাগ বিধানসভায় উপকূল তীরবর্তী এলাকায় প্রতি বছর নদী বাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয় গোটা এলাকা ৷ বিঘের পর বিঘে চাষের জমি প্লাবিত হওয়ায় ক্ষতি হয় কৃষকদের ।
গত পাঁচ বছর পাকা রাস্তা, পানীয় জল-সহ একাধিক উন্নয়নমূলক কাজ যেমন হয়েছে, তেমনই বহু উপকূল তীরবর্তী এলাকাগুলিতে কিছু কংক্রিটের নদী বাঁধও তৈরি করা হয়েছে । তবে স্থানীয়দের একাংশের ক্ষোভ, গত পাঁচ বছরে তাঁদের সাংসদ কোনদিনও এলাকায় আসেননি । এলাকায় উন্নয়নও হয়েছে নামমাত্র । আবার কিছু লোক বললেন, সাংসদ বয়সজনিত কারণে এলাকায় আসতে পারেনি ঠিকই কিন্তু উন্নয়ন হয়েছে । রাস্তাঘাট, আলো, পানীয় জল সবই পাচ্ছে সাধারণ মানুষ ।
মথুরাপুর লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূলের প্রার্থী বাপি হালদার তাঁর নাম ঘোষণার পর থেকেই পুরোদস্তুর নেমে পড়েছেন ভোটের ময়দানে । গত 15 বছর তৃণমূলের জমানায় এলাকায় ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে বলে দাবি করলেন বাপি হালদার । তিনি জানান, বয়সজনিত কারণে বিদায়ী সাংসদ চৌধুরী মোহন জাটুয়া এলাকায় আসতে পারেননি এ কথা যেমন সত্যি, তেমনই প্রতিটি বিধানসভার বিধায়কদের সঙ্গে নিয়ে এলাকার উন্নয়নের জন্য নিজের সাংসদ তহবিলের প্রায় পুরো টাকা তিনি সাধারণ মানুষের উন্নয়নের জন্য ব্যয় করেছেন এটাও সত্যি । 85 বছর বয়সি সাংসদ সর্বদাই এলাকার মানুষের উন্নয়নের কথা ভাবেন । বয়সের ভারে এলাকায় তেমন দেখা যায় না সাংসদকে, তবে উন্নয়নের কাজ থেমে থাকেনি ।