মালদা, 28 সেপ্টেম্বর: পুজোর মুখে ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হল এক ব্যক্তির ৷ গত 24 সেপ্টেম্বর ঘটনাটি ঘটেছে মালদা মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের সিসিইউ বিভাগে ৷ হাসপাতালের রিলিজ মেমোতে মৃত্যুর কারণ হিসেবে ডেঙ্গি উল্লেখ করা হয়েছে ৷ তবে, ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর বিষয়ে কিছু বলতে রাজি হননি জেলার কোনও স্বাস্থ্য আধিকারিক ৷ উল্লেখ্য, এই ঘটনায় মৃত ব্যক্তি এবং তাঁর পরিবারে চিকিৎসকের পরামর্শ মানেননি বলে অভিযোগ উঠেছে ৷
জ্বরে আক্রান্ত হয়ে গত 15 সেপ্টেম্বর বাঙ্গিটোলা হাসপাতালে ডাক্তার দেখাতে যান কালিয়াচক 2 নম্বর ব্লকের রথবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের মীরপাড়ার বাসিন্দা মীর আকবর আলি ৷ চিকিৎসক তাঁকে রক্ত পরীক্ষা করানোর পরামর্শ দিয়েছিলেন ৷ অভিযোগ, সেই পরামর্শ না-মেনে, আকবর স্থানীয় এক হাতুড়ে চিকিৎসকের কাছে যান ৷ ওই হাতুড়ে চিকিৎসক তাঁকে জ্বর ও ব্যথা কমানোর ওষুধ দেন ৷ কিন্তু, ওষুধ খেয়েও আকবরের জ্বর কমছিল না ৷ দিন-দিন তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হচ্ছিল ৷
শেষ পর্যন্ত, গত 22 সেপ্টেম্বর তাঁকে বাঙ্গিটোলা গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় ৷ পরিস্থিতি গুরুতর বুঝে পরদিনই মীর আকবর আলিকে মালদা মেডিক্যালে রেফার করে দেওয়া হয় ৷ সেখানে রক্ত পরীক্ষায় আকবরের শরীরে ডেঙ্গি ধরা পড়ে ৷ সিসিইউ বিভাগে রেখে তাঁর চিকিৎসা শুরু হয় ৷ কিন্তু, 24 সেপ্টেম্বর মারা যান তিনি ৷ মালদা মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের রিলিজ মেমোতে মীর আকবর আলির মৃত্যুর কারণ হিসাবে ডেঙ্গি উল্লেখ করা হয়েছে ৷
মালদা মেডিক্যাল কলেজের মেমোতে মৃত্যুর কারণ হিসেবে ডেঙ্গির কথা উল্লেখ ৷ (নিজস্ব চিত্র) আকবর কংগ্রেসের অঞ্চল সভাপতি ছিলেন ৷ তাঁর মৃত্যুতে এলাকার কংগ্রেস সাংসদ ইশা খান চৌধুরী বলেন, "আকবর শুধুমাত্র আমাদের দলের কর্মী ছিলেন না ৷ উনি এই এলাকায় সমাজসেবী হিসাবেও পরিচিত ছিলেন ৷ মানুষকে বাঁচাতে বহুবার নিজে রক্তদান করেছেন ৷ ওর মৃত্যুতে শুধু আমাদের না, এলাকার মানুষেরও অনেক ক্ষতি হয়ে গেল ৷ শুধুমাত্র সচেতনতার অভাবে মানুষ ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হচ্ছেন ৷ তাই ডেঙ্গি নিয়ে স্বাস্থ্য দফতরকে আরও বেশি সচেতনতামূলক প্রচার চালাতে হবে ৷ মানুষ সচেতন না-হলে, মৃত্যুর সংখ্যা আরও বাড়বে ৷"
একই বক্তব্য এলাকার বিধায়ক তথা প্রতিমন্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিনের ৷ তিনি বলেন, "মানুষ সচেতন না-হলে, কিছুতেই ডেঙ্গিকে রোখা যাবে না ৷ প্রতিটি গ্রামের উপর নজর রাখার জন্য আমি ইতিমধ্যেই জেলা প্রশাসনকে আবেদন জানিয়েছি ৷" জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সুদীপ্ত ভাদুড়ি বলেন, "ডেঙ্গির প্রাদুর্ভাব ঘটলেও, এখনও পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা গত বছরের তুলনায় কম ৷ আমরা গোটা পরিস্থিতির উপর নজর রেখেছি ৷ গ্রামীণ ও শহরের মানুষকে নিয়মিত সচেতন করা হচ্ছে ৷ ব্লক ও পুরসভাগুলিও সেই কাজ করছে ৷" জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, ডেঙ্গি আক্রান্তের পরিসংখ্যানে এই মুহূর্তে রাজ্যে তৃতীয় স্থানে রয়েছে মালদা ৷ চলতি বছরে এখনও পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা হাজারের গণ্ডি পার করেছে ৷