কলকাতা, 22 জানুয়ারি: দেশ জুড়ে রাম মন্দির প্রতিষ্ঠাতাকে কেন্দ্র করে উৎসবের মেজাজ। আর সেই দিন হাজরা থেকে পার্ক সার্কাস পর্যন্ত ধর্মগুরুদের সঙ্গে নিয়ে হাঁটলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সংহতি মিছিল থেকে দিলেন সব ধর্মকে নিয়ে চলার বার্তা। একই সঙ্গে এই মিছিল শেষে সভা থেকে উঠলো দাবি, 'ধর্ম যার যার নিজের, আমরা সব ধর্মকেই সম্মান করি।' রাম মন্দির প্রতিষ্ঠার দিন মিছিল খুব স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন ওঠে এটা কি তবে রামের বিরোধিতা ! জবাব দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী । একই সঙ্গে তুলে দিয়েছেন গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নও। তিনি বলছেন, "আমি রামের বিরোধী নই। কিন্তু এই জাঁকজমক এই উৎসবে সীতা কেন উপেক্ষিত। তাহলে কি তোমরা (বিজেপি) নারী বিরোধী।" রাম মন্দিরের উৎসবে সীতাকে উপেক্ষার প্রশ্নে নাম না-করে বিজেপিকে এদিন নারী বিরোধী আখ্যা দিলেন মমতা।
এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্পষ্ট ভাষায় বলেন, "কেউ রামপুজো করলে আমার আপত্তি নেই। কিন্তু রাজনীতি করলে আপত্তি আছে। যে দেশে কোটি কোটি মানুষ গবীর সেখানে কে কী খাবে যদি কেউ ঠিক করে দেওয়া হয় তাহলে আপত্তি আছে। যদি কে কী পরবে সেটা ঠিক করে দেওয়া হয় তাতেও আপত্তি আছে আমার। মাছ-মাংস-ডিম সকলে খায়। কারও তাতে আপত্তির কী আছে ? আগুন জ্বালানো সহজ। আগুন নেভানো কঠিন। যারা আগুন জ্বালাতে চায় তাদের নিয়ে আপত্তি আছে আমার। যারা দক্ষিণেশ্বর স্কাইওয়াক ভাঙতে চায় তাদের মুখে ধর্মের কথা মানায় না। ভোটের আগে ধর্মের নামে উস্কানি দেওয়া হচ্ছে। বাংলাকেই এখানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে হবে।"
এদিন কেন মিছিল করলেন তাও স্পষ্ট করেছেন মমতা। রাম মন্দিরকে নিয়ে যেভাবে সংবাদমাধ্যমে ঢালাও প্রচার চলছে তারও সমালোচনা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। মমতার কথায়, "আজ এই মিছিল করার আমার একটাই উদ্দেশ্য। এই লড়াই শুরু হয়েছে। এই লড়াই আমাদেরই লড়তে হবে। আজ সকাল থেকে যা চলছে সংবাদমাধ্যমে, তা দেখে মনে হচ্ছে যেন স্বাধীনতার লড়াই চলছে! ভাল কাজ করলে তা আপনারা দেখান না।" মমতার কথায় বারে বারে ফিরে ফিরে এসেছে ভগবান শ্রীরামের বিরোধিতা না করার প্রসঙ্গ। একই সঙ্গে তিনি তুলেছেন সীতাকে উপেক্ষার প্রসঙ্গও।
এক্ষেত্রে মমতা বলেন, "আমি রামকে মানি। আমি রামের বিরুদ্ধে নই। রাম রাবণকে বধ করতে যে দুর্গার পুজো করেছিল আমরা সেই দুর্গাকেই পুজো করি। রাম-সীতাকে শ্রদ্ধা করি। কিন্তু তোমরা সীতার নাম করো না কেন! তোমরা কি নারী বিরোধী ? আজ যে রাম মন্দিরের উদ্বোধন হয়েছে সেখানে রামচন্দ্র ও হনুমানের মূর্তি থাকলেও মূর্তি নেই সীতা মাতার।"