কলকাতা, 10 সেপ্টেম্বর: দেশের শীর্ষ আদালত জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলন নিয়ে গতকালই ডেডলাইন বেঁধে দিয়েছিল । এরপরও আন্দোলন চালিয়ে যেতে অনড় জুনিয়র ডাক্তাররা । এই অবস্থায় নবান্ন জুনিয়র ডাক্তারদের নিয়ে কী পদক্ষেপ করে, সেদিকেই যখন সবার চোখ, তখন গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । আরজি কর ইস্যু নিয়ে দলের সমস্ত মন্ত্রীকে কোনও মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি ৷ মুখ্যমন্ত্রী জানিয়ে দিয়েছেন, আরজি কর নিয়ে যা বলার বলবেন তিনিই । তাঁর নির্দেশ, এই আবহে অন্য কেউ যেন মুখ না-খোলেন ।
চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য (নিজস্ব ভিডিয়ো) প্রসঙ্গত, গতকাল রাজ্যের মুখ্যসচিব মনোজ পন্থের সাংবাদিক সম্মেলনে স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল যে, জুনিয়র ডাক্তারদের বিরুদ্ধে এখনই শাস্তিমূলক পদক্ষেপ চাইছে না নবান্ন ৷ বরং সুপ্রিম কোর্টের দেওয়া সময়সীমা পার হয়ে গেলেও, আপাতত সংযমের পথেই হাঁটতে চলেছে রাজ্য সরকার । সেক্ষেত্রে নেতা-মন্ত্রীদের বক্তব্য সামান্য বিরূপ হলেও তার থেকে আন্দোলন অন্য মাত্রা পেতে পারে, এই আশঙ্কায় আরজি কর প্রসঙ্গে সব নেতা-মন্ত্রীদের মুখ বন্ধ রাখতে বলেছেন মমতা ৷ এব্যাপারে যা বলার তার দায়িত্ব নিজের কাঁধেই তুলে নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী ।
উল্লেখ্য, গতকাল আরজি কর নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের শুনানির পর নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সাংবাদিক সম্মেলন করে উৎসবে ফেরার কথা বলেছিলেন ৷ তাঁর সেই মন্তব্যের বিরোধিতায় সরব হয় বিরোধী থেকে শুরু করে নাগরিক সমাজ ৷ এছাড়াও আরজি কর নিয়ে সম্প্রতি কাঞ্চন মল্লিক, লাভলি মৈত্র, চন্দ্রনাথ সিনহা-সহ একাধিক বিধায়ক ও মন্ত্রীর বিতর্কিত মন্তব্যে বাড়ে জনরোষ ৷ এই অবস্থায় আজ সবাইকে আরজি কর ইস্যুতে মুখে কুলুপ আঁটতে বললেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷
একইসঙ্গে এদিন রাজ্য মন্ত্রিসভা বাংলায় শিশুদের উপর নির্যাতন প্রতিরোধে বিশেষ পদক্ষেপ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে । এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে পাঁচটি নতুন পকসো ফাস্ট ট্র্যাক কোর্ট স্থাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে । প্রসঙ্গত, প্রধানমন্ত্রীকে মুখ্যমন্ত্রী ধর্ষণ বিরোধী কড়া আইন তৈরির জন্য যে চিঠি দিয়েছিলেন, তার পালটা চিঠি হিসেবে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী দাবি করেছিলেন যে, রাজ্যকে মঞ্জুরি দেওয়ার পরও রাজ্য ফাস্ট ট্র্যাক কোর্ট তৈরিতে পদক্ষেপ করছে না । তারপরেই এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিলেন মুখ্যমন্ত্রী ।
আগে তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় দলীয় স্তরের নেতা-মন্ত্রীদের আরজি কর নিয়ে সংযম বজায় রাখার বার্তা দিয়েছিলেন । আর এবার সেই একই বার্তা দিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ।