কলকাতা, 19 জানুয়ারি: গত কয়েকদিন ধরেই আলোচনায় জোটের ভাগ্য। শুক্রবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দলীয় নেতৃত্বকে 42টি আসনেই লড়ার জন্য প্রস্তুত থাকতে বললেন । সেখান থেকেই প্রশ্ন উঠছে তাহলে কি এই রাজ্যে জোটের কোনও সম্ভাবনাই অবশিষ্ট নেই ! আদতে সাম্প্রতিক অতীতে তৃণমূল কংগ্রেস বারংবার ইঙ্গিত দিয়েছে, জোট বদ্ধ হয়ে লড়াইয়ের পক্ষে তারা । কিন্তু রাজ্যে জোটের ক্ষেত্রে কখনও প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী থেকে শুরু করে অন্য নেতারা সরাসরি তৃণমূল কংগ্রেসকে আক্রমণ করেছে । এই অবস্থায় প্রশ্ন উঠছিল আদৌ কি রাজ্যে কংগ্রেসের সঙ্গে জোট সম্ভব ! মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই রাজ্যে জোট হচ্ছে না, এ কথা না বললেও ৪২টি আসনে দলকে প্রস্তুত থাকতে বলে আদতে জোটের সম্ভাবনা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিয়েছেন ।
আরও তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা হলো এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে জেলা নিয়ে বৈঠকে বসেছিলেন সেই জেলায় একটি আসন রয়েছে কংগ্রেসের । লোকসভায় কংগ্রেসের দলনেতা অধীর চৌধুরী এই জেলা থেকেই জিতে সাংসদ হয়েছেন । বহরমপুরের সংসদের এই আসনটি তৃণমূল কংগ্রেসকে ছাড়তে পারে এমনটি শোনা যাচ্ছিল । কিন্তু এদিন দলের বৈঠকে মুর্শিদাবাদের তিনটি আসন যথাক্রমে বহরমপুর মুর্শিদাবাদ এবং জঙ্গিপুরে লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুত থাকতে দলকে বলেছেন । সূত্রের খবর, এখানেই শেষ নয় দলনেত্রী দলের নেতাদের উদ্দেশে এও জানিয়েছেন সকলে ঐক্যবদ্ধভাবে লড়াই করলে অধীরকে হারানো কোনও বিষয় নয় ।
আর সেই জায়গা থেকেই প্রশ্ন উঠছে তাহলে কি জোটের সম্ভাবনা এ রাজ্যে ক্রমশ ক্ষীণ হয়ে আসছে ! যদিও তা নিয়ে সরাসরি প্রকাশ্যে একটি কথাও বলছে না তৃণমূল নেতৃত্ব । এদিন মুর্শিদাবাদ নিয়ে তৃণমূলের বৈঠকের পর মুর্শিদাবাদের এক স্পষ্ট ভাষায় জানিয়েছেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দলকে 42টি আসনেই লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুত থাকতে বলেছেন। কিন্তু হঠাৎ করে কেন এমন বললেন তার ব্যাখ্যাও ব্যক্তিগত আলোচনায় দিয়েছেন ওই সাংসদ । এক্ষেত্রে তাঁর যুক্তি, প্রথম থেকেই দলনেত্রী কংগ্রেসের সঙ্গে জোটবদ্ধ লড়াইয়ের বার্তা দিয়ে আসছেন । কিন্তু এ রাজ্যের কংগ্রেস নেতারা যখন আলোচনার জন্য সময় দিচ্ছেন, সেই সময় আলোচনায় আগ্রহ দেখাচ্ছেন না । উলটে তারা কখনও সিপিএম কখনও আইএসএফের সঙ্গে জোটের কথা বলছেন । এই অবস্থায় তৃণমূল কংগ্রেস যে একা লড়াই করে জিততে সমর্থ 2021 সালের বিধানসভাতেও দেখিয়েছে । 2024 সালের লোকসভা নির্বাচনে আরও একবার দেখিয়ে দেবে।
যেহেতু এই নিয়ে সরাসরি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বা তৃণমূল কংগ্রেসের তরফ থেকে আনুষ্ঠানিক কোনও বক্তব্য আসেনি তাই প্রকাশ্যে এই বিষয়টি বলার মত অবস্থা এখনও আসেনি যে এ রাজ্যে ইন্ডিয়া জোটের সম্ভাবনা শেষ । তবে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী যে ইঙ্গিত দিয়েছেন তাতে এ রাজ্যেও ইন্ডিয়া জোটের ভবিষ্যৎ নিয়ে আরও একবার প্রশ্ন উঠে গেল । আর এই অবস্থায় কংগ্রেস শীর্ষ নেতৃত্ব শেষ পর্যন্ত কী অবস্থান নেয় সেটাই দেখার । ভুলে গেলে চলবে না, সোনিয়া গান্ধি এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বোঝাপড়ার কথা । সে ক্ষেত্রে শেষ মুহূর্তে যে কোনও ঘটনাই ঘটতে পারে একথাও বলছেন তৃণমূলের নেতারা ।
আরও পড়ুন:
- অধীর চৌধুরীর মতো বিজেপির দালাল পশ্চিমবাংলায় আর নেই! কটাক্ষ কল্যাণের